Categories: বিনোদন

‘কেউ ছেড়ে যেতে চাইলে তাকে শত চেষ্টাতেও বেঁধে রাখা যায় না’

মানুষের জীবনে কখন কী হয়ে যায়, সে নিজেও জানে না। সম্পর্কের জায়গায় কখনো-কখনো কোনো না কোনোভাবে কিছু সমস্যা তৈরি হয়। সেই সমস্যা থেকেই দূরত্ব। কিছু বিষয় থাকে ব্যক্তিগত, সেগুলো চাইলেও শেয়ার করা যায় না। দুজন ভালো মানুষ সবসময় ভালো না-ও থাকতে পারে।

কেউ যদি মনে করে, সে নিজের মতো করে থাকবে বা চলবে, সেখানে তো কারোই কিছু করার থাকে না। আবার কেউ ছেড়ে যেতে চাইলে তাকে শত চেষ্টাতেও বেঁধে রাখা যায় না। তবে টুটুল সবকিছু নিয়মের মধ্যেই করেছেন। প্রায় দুই যুগের সংসার জীবনের ইতি টেনে এভাবেই নিউজজিকে বলেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ।

দীর্ঘ ২৩ বছরের সংসার জীবনের ইতি টেনেছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদ। গত বছরের শেষের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তারকা দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তানিয়া আহমেদের সঙ্গে ডির্ভোসের এক বছর না পেরুতেই চলতি মাসের ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী উপস্থাপক শারমিন সিরাজ সোনিয়াকে বিয়ে করেছেন এই গায়ক।

সন্তানদের কথা উল্লেখ করে তানিয়া আহমেদ বলেন, সন্তানরা আমার ভালো বন্ধু। সবসময়ই ওদের সবকিছু যেমন আমাকে শেয়ার করে, আমিও সবকিছু সন্তানদের সঙ্গে শেয়ার করি। আমাদের বিষয়টি নিয়ে সন্তানদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওদের বলার পর যেটা ভালো হয়, সেটিই করতে বলেছে। টুটুলের নতুন জীবনের জন্য সবসময় শুভকামনা। দোয়া করি, নতুন জীবনে তারা যেন ভালো থাকে।

টুটুল ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকব উল্লেখ করে তানিয়া বলেন, দিনশেষে আমার সন্তানদের বাবা সে। তার যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে সন্তানরা ভালো থাকবে না। সন্তানরা তার বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। আমাকেও খুব ভালোবাসে। উভয়ের জন্যই ওদের কষ্ট হবে। আমি মনে করি, এটি কাদা ছোড়াছুড়ির বিষয় না। যা কিছুই হয়েছে, সবকিছু নিয়মের মধ্যে হয়েছে।

সন্তানরা এখন কার সঙ্গে থাকছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সঙ্গেই থাকছেন। যতদূর জেনেছি, সোনিয়ার আগের ঘরের এক সন্তান আছে। সম্ভবত ছেলে। আমার এক সন্তান বিদেশে চাকরি করছে। আর ছোট সন্তান আমার কাছেই আছে। টুটুল সোনিয়ার সঙ্গেই এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকছেন। আর একটি বিষয় পরিস্কারভাবে জানাতে চাই যে, আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে ৭-৮ মাসের মতো হবে। এখনো এক বছর হয়নি।

বিচ্ছেদের আগে টুটুল ও তানিয়া একই বাসায় থাকলেও দীর্ঘ ৫ বছর আলাদাভাবে বসবাস করেছেন এই তারকা দম্পতি। এ প্রসঙ্গে তানিয়া বলেন, আমরা এক বাসাতে থাকলেও এ সময়টা আলাদা থেকেছি। মানসিক দিক থেকে আমাদের দূরত্ব ছিল। অনেক কিছুই মতের অমিলের কারণে হয়েছে। যেগুলো একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।

ডির্ভোসের পর আপনাদের কথা হয়েছে? তানিয়া বলেন, না কথা হয়নি। মানুষের চিন্তা-চেতনার জায়গা ভিন্ন হয়। সবার চিন্তা চেতনা এক না-ও হতে পারে। ডির্ভোসের পরেও আমি সবসময় চেষ্টা করেছি, যোগাযোগ রাখার। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি। টুটুলের সব জায়গা থেকে আমি কালো তালিকায় আছি। সন্তানদের ভরণপোষণের একটা ব্যাপার থাকে। দুজনে কথা বলে বিষয়টি ঠিক করে নিতাম। তবে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারিনি। যোগাযোগের সবমাধ্যম বন্ধ। তবে সন্তানদের সঙ্গে টুটুলের যোগাযোগ হয়।

যোগ করে তিনি বলেন, আমি যখন বিষয়গুলো জানতে পেরেছি, নিজেকে বুঝিয়ে মানিয়ে নিয়েছি। অনেক কিছুই বলতে পারতাম। সেসব বলে তো আর লাভ হবে না। তাছাড়া টুটুল একটা অবস্থান তৈরি করেছে। তার সম্মান আমাকেই ধরে রাখতে হবে। আমি সবসময় তাকে সম্মানের জায়গায় রাখার চেষ্টা করছি। না চাইলেও অনেক সময় আমাদের অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়। সবসময় সৃষ্টিকর্তার কাছে একটা চাওয়াই থাকবে- তারা দুজনে ভালো থাকুক। তিনি ভালো থাকলে সন্তানরা মানসিকভাবে শান্তি পাবে।

দীর্ঘ সময়ের ভালোবাসার ইতি টেনে সাবেক স্বামী নতুন জীবন শুরু করেছেন। এখন একাকীত্ব মেনে নিতে হচ্ছে আপনাকে। তাই নতুন করে জীবন সাজানোর ব্যাপারে কিছু ভাবছেন? অভিনেত্রীর জবাব, এই ভাবনার বিষয়টি আমাদের কারো উপরই নেই। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তিনি যেভাবে যখন চাইবেন, সেভাবেই সব হবে। দীর্ঘ ভালোবাসার সংসারটি টিকিয়ে রাখার কম চেষ্টা তো আর করা হয়নি। সবসময় তো সব চাওয়া পূরণ হয় না। তবে যে-যেভাবে ভালো থাকতে চায়, তাকে সেভাবেই ভালো থাকতে দিতে হয়।

টুটুলের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পর নেটিজেনরা তাদেরকে কটাক্ষ করে কথা বলছেন। বিচ্ছেদ ও বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরগরম একাংশ। তানিয়া মনে করেন, টুটুলের তুলনা টুটুলই। তার বিকল্প কেউ নেই। বাংলাদেশের একজন নামকরা শিল্পী এস আই টুটুল। তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু মানুষ যা-তা মন্তব্য করছে। এটি মোটেও ঠিক নয়।

সবার প্রতি অনুরোধ রেখে সর্বশেষ তানিয়া আহমেদ বলেন, আপনাদের জন্যই আমরা। প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত ভালোলাগা থাকে। প্রতিটি মানুষেরই ব্যক্তিগত জীবন আছে। এটি শুধুই ব্যক্তিগত। আমাদের বিষয় আমাদেরই সমাধান করতে হবে, অন্যরা পারবে না। তাই অন্যদের চুপ থাকাই ভালো। আশা করব, খারাপ মন্তব্য করা থেকে সবাই বিরত থাকবেন।

তানিয়া আহমেদ, একাধারে একজন মডেল-অভিনেত্রী-নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তবে তাকে বাংলাদেশের মডেলিং জগতের একজন পথিকৃৎও বলা যেতে পারে। অন্যদিকে, শ্রোতাপ্রিয় গায়ক, সুরকার-সঙ্গীত পরিচালক এস আই টুটুল। সিনেমার গানে তিনি অসামান্য সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। তার সৃষ্ট বহু গান শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ১৯ জুলাই টুটুল মডেল-অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

banglaekattor

Recent Posts

মায়ের পথ অনুসরণ করে চলচ্চিত্রে দিতিকন্যা লামিয়া

ঢাকাই সিনেমার প্রবাদপ্রতিমা অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতির মেয়ে লামিয়া চৌধুরী চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে তার মায়ের…

১ সপ্তাহ ago

আমরা দেখলাম, কীভাবে একজন ন’টীর জন্ম হয় : বন্যা মির্জা

নেটফ্লিক্সে আজ মুক্তি পাচ্ছে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন অভিনীত প্রথম হিন্দি ওয়েব ফিল্ম ‘খুফিয়া’। এ…

৭ মাস ago

প্রকাশ্যে এলো রাজ-বুবলীর ‘গোপন’ রহস্য

বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় দুই অভিনয়শিল্পী শরিফুল রাজ ও শবনম বুবলী। কয়েক দিন আগে জানা গিয়েছিল,…

৮ মাস ago

পরীমণি এত টাকা কোথায় পান, জানালেন নিজেই

ক’দিন আগেই চিত্রনায়ক শরিফুল রাজের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ সেরেছেন নায়িকা পরীমণি। এখন পুত্র রাজ্যকে ঘিরেই…

৮ মাস ago

‘খেলা হবে’র পর নতুন সূচনা পরীমণির

মা হওয়ার সুবাদে দুই বছর কাজ থেকে দূরে ছিলেন। সেই বিরতি কাটিয়ে কাজে নিয়মিত হচ্ছেন।…

৮ মাস ago

শুভশ্রীর ৪০ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল

টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে…

৮ মাস ago