১৪তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মু. আয়াজ আজাদ। সারাদেশে মোট ১০২ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। এর মধ্যে তিনি ৩৮তম হয়েছেন। তবে আগে টানা পাঁচবার ভাইভা দিয়েও ফিরে আসতে হয় তাকে। হাল ছাড়েননি। ফলে ষষ্ঠবারে সাফল্য অর্জন করেছেন। এখন অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার নাম আজাদ। তিনি সফলতা ও ব্যর্থতার গল্প বলেছেন ঢাকা পোস্টের কাছে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রেদওয়ান রাকিব।
ঢাকা পোস্ট : আপনার জন্ম, শৈশবকাল এবং পিতা-মাতার অবদান সম্পর্কে বলুন।
আয়াজ আজাদ : আমার জন্ম কক্সবাজারের রামুতে। বাবা মৃত কবির আহমদ ও মা মোকররমা বেগমের প্রথম সন্তান। রামুতেই বেড়ে উঠা। বাবা সবসময়ই চাইতেন আমি যেন অন্য ১০ জনের মতো না হই। প্রচুর পড়তাম। বাবা-মায়ের কাছেই মূলত আমার পড়ালেখার হাতেখড়ি। ছোটকাল থেকেই ক্লাসের ফার্স্ট বয় ছিলাম। দুটি পরীক্ষা ছাড়া স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি লাইফে ক্লাসে সব সময় প্রথম হতাম। নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন বাবা মারা যাওয়ার পর বড় সন্তান হিসেবে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে পরিবারের হাল ধরতে চাইলাম। কিন্তু মা আমার শিক্ষকদের হাতে আমাকে তুলে দিয়ে বললেন, ‘আমার ছেলেটা পড়ালেখা করে বড় কিছু করুক। আপনারা তার পাশে থাকবেন।’ বলতে গেলে আমার মায়ের কারণেই আমার পড়ালেখার গতি নতুন করে শুরু হয়।
ঢাকা পোস্ট : বিচারক হওয়ার স্বপ্ন ছিল কি?
আয়াজ আজাদ : আসলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের দ্বিতীয় বর্ষে এসে বিচারক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নটি মনে দানা বাঁধে। তখন থেকে আইনকে আপন করে নিয়েছি। পরে মনে প্রাণে চাইতাম, বিচারক হই। আইন অঙ্গনে ক্যারিয়ার গড়ার বাসনা থেকেই চেষ্টা করেছি আইনে দক্ষতা অর্জন করার। জানি না কতটুকু সফল হয়েছি।
ঢাকা পোস্ট : বিচারক হওয়ার পেছনে কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে?
আয়াজ আজাদ : আইনে প্রচুর পড়ালেখা করতাম এবং টুকটাক লেখালেখি করতাম। আইনের ওপর গবেষণামূলক কাজ করতে ভালো লাগে। আমার কিছু গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এসবই বিচারক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে আমাকে প্রস্তুত করেছে বলে মনে করি।
ঢাকা পোস্ট : কত ঘণ্টা করে পড়ালেখা করেছেন?
আয়াজ আজাদ : বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে আইনকে হাতের পুতুল বানানোর প্রবল ইচ্ছা ছিল। সময় নষ্ট করেছি বলে মনে পড়ে না। এমনও রাত আছে, পড়তে পড়তে সকাল হয়েছে, আমি বুঝতেই পারিনি। ক্লাস করতাম মনোযোগ দিয়ে। দিনের পড়া দিনেই শেষ করতাম। শিক্ষকদের পরামর্শগুলো অনুসরণ করতাম।
ঢাকা পোস্ট : বিচারক হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর অনুভূতি কেমন?
আয়াজ আজাদ : খুব ভালো লাগছে। মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
ঢাকা পোস্ট : কয়বার ভাইভা দিয়েছেন এবং কততম ভাইভাতে সফল হয়েছেন?
আয়াজ আজাদ : ছয় বার ভাইভা দিয়েছি। পাঁচ বার ভাইভা থেকে ফেরত আসতে হয়েছে। বার বার ব্যর্থ হওয়ার পর এক ধরনের হতাশা কাজ করছিল। তবে হাল ছাড়িনি। ষষ্ঠবারে এসে জজ হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
ঢাকা পোস্ট : বিচারক হিসেবে দেশ ও মানুষের জন্য কী করতে চান?
আয়াজ আজাদ : মানুষের প্রতিকার প্রার্থনার শেষ আশ্রয়স্থল হলো বিচার বিভাগ। নিজের অর্জিত আইনের দক্ষতাকে দেশ ও মানুষের সেবায় নিয়োজিত করতে চাই। দেশ ও বিচার বিভাগের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখায় অবদান রাখতে চাই।
ঢাকা পোস্ট : যারা বিচারক হতে চান তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
আয়াজ আজাদ : প্রচুর পড়ালেখা করতে হবে। সফলতার শর্টকাট কোনো পদ্ধতি নেই। মূল আইনের ধারা-অনুচ্ছেদগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে। জুডিশিয়াল সার্ভিস ও বিসিএসের বিগত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো আয়ত্বে আনতে হবে। তাতে করে, পরীক্ষার প্রশ্ন সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে। বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা জরুরি। ভালো ও বিখ্যাত লেখকদের বই অনুসরণ করতে হবে। তাতে করে, ভুল শেখার আশঙ্কা কম থাকবে। কেস ল’এর ওপর দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে বিখ্যাত মামলাগুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে। শুধু গাইড বইয়ের ওপর নির্ভরশীল হওয়াটা ঠিক হবে না।
ঢাকা পোস্ট : ধন্যবাদ আপনাকে।
আয়াজ আজাদ : আপনাকেও ধন্যবাদ।
ঢাকাই সিনেমার প্রবাদপ্রতিমা অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতির মেয়ে লামিয়া চৌধুরী চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে তার মায়ের…
নেটফ্লিক্সে আজ মুক্তি পাচ্ছে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন অভিনীত প্রথম হিন্দি ওয়েব ফিল্ম ‘খুফিয়া’। এ…
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় দুই অভিনয়শিল্পী শরিফুল রাজ ও শবনম বুবলী। কয়েক দিন আগে জানা গিয়েছিল,…
ক’দিন আগেই চিত্রনায়ক শরিফুল রাজের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ সেরেছেন নায়িকা পরীমণি। এখন পুত্র রাজ্যকে ঘিরেই…
মা হওয়ার সুবাদে দুই বছর কাজ থেকে দূরে ছিলেন। সেই বিরতি কাটিয়ে কাজে নিয়মিত হচ্ছেন।…
টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে…