শামসুল হুদা লিটনঃ কাপাসিয়ার তারাগঞ্জ অঞ্চলের একডালা গ্রামের রত্নগর্ভ সন্তান মেজর জেনারেল (অব.) মনজুর রশীদ খান ছিলেন এলাকার অহংকার ও গর্ব। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক মেধাবী ও চৌকস কর্মকর্তা। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। ১৭ জুলাই, রবিবার রাতে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ মেজর জেনারেল মনজুর রশীদ খান ছিলেন বর্নাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী। তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবনের উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
জন্মঃ তিনি ১৯৩৯ সালে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক একডালা দূর্গের স্মৃতিবিজড়িত জনপদখ্যাত একডালা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক মরহুম ডাঃ আব্দুর রশীদ খান ও মহীয়সী মাতা মরহুমা কুরছিয়া বেগম।
পারিবারিক জীবনঃ মেজর জেনারেল মনজুর রশীদ ছিলেন ৩ ভাই, ৩ বোনের মধ্যে সবার বড়। মেঝো ভাই ও ২ বোন চলে গেছেন না ফেরার দেশে। একমাত্র জীবিত আছেন সবার ছোট ভাই আজগর রশীদ খান। আজগর রশীদ খান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি। পারিবারিক জীবনে মনজুর রশীদ খান স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ে সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ছেলে মেয়ে সবাই উচ্চ শিক্ষিত ও কানাডা প্রবাসী।
শিক্ষা জীবনঃ ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তারাগঞ্জ এইচ এন উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে পিতার কর্মস্থল নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবনঃ মেজর জেনারেল মনজুর রশীদ খান ১৯৬৪ সালের ১৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন । ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের শিয়ালকোট রণাঙ্গনে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । ১৯৭১ সাল থেকে প্রায় আড়াই বছর পাকিস্তানে অন্তরীণ জীবনযাপন করেন । ১৯৭৩ সালে দেশে ফিরে মেজর হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ রাইফেলস ও সেনা সদর দপ্তর, দুটি আর্টিলারি ও পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন । তিনি ১৯৮৬ সালে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানার প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। প্রথমে রাষ্ট্রপতি জেনারেল এরশাদ এবং পরে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে এরশাদ-বিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ছিল তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ।তিনি ১৯৯৫ সালে বর্নাঢ্য কর্মময় জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন । তিনি ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিনের শাসনামলে ট্রুথ কমিশনের সদস্য ছিলেন।
লেখক ও কলামিস্টঃ তিনি ছিলেন একজন উচুমানের লেখক, কলামিস্ট ও সামরিক বিশ্লেষক। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো, সংবাদ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় তিনি নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় কলাম লিখতেন। তিনি বেশ কয়েকটি আলোচিত ও পাঠক নন্দিত গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে এরশাদের পতন ও সাহাবুদ্দীনের অস্থায়ী শাসন: কাছে থেকে দেখা, আমার সৈনিক
জীবনঃ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, ইত্যাদি।
সামাজিক সংগঠনঃ ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি তারাগঞ্জ এইচ এন উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ গভর্ণিংবডির সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
লেখক –
শামসুল হুদা লিটন
সহকারী অধ্যাপক
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
তারাগঞ্জ এইচ এন উচ্চবিদ্যালয় অ্যন্ড কলেজ
নেটফ্লিক্সে আজ মুক্তি পাচ্ছে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন অভিনীত প্রথম হিন্দি ওয়েব ফিল্ম ‘খুফিয়া’। এ…
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় দুই অভিনয়শিল্পী শরিফুল রাজ ও শবনম বুবলী। কয়েক দিন আগে জানা গিয়েছিল,…
ক’দিন আগেই চিত্রনায়ক শরিফুল রাজের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ সেরেছেন নায়িকা পরীমণি। এখন পুত্র রাজ্যকে ঘিরেই…
মা হওয়ার সুবাদে দুই বছর কাজ থেকে দূরে ছিলেন। সেই বিরতি কাটিয়ে কাজে নিয়মিত হচ্ছেন।…
টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে…
মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে তারকাদের নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ‘সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ’ (সিসিএল)। সেখানে শুক্রবার (২৯…