মসজিদুল হারামে টানা ৪৫ বছর আজান দিয়ে ‘বেলাল’ উপাধি পান আহমাদ মোল্লা

| আপডেট :  ১ জুলাই ২০২২, ০৯:৪০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১ জুলাই ২০২২, ০৯:৪০ পূর্বাহ্ণ

বাংলা একাত্তর ডেস্কঃ টানা ৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে মসজিদুল হারামে আজান দেয়ায় শায়খ আলি আহমাদ মোল্লাকে ‘বেলাল আলহারাম’ বা হারামের বেলাল এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। মসজিদুল হারামের মিনার থেকে ভেসে আসা সুমধুর আজানের ধ্বনি আশপাশের পাহাড়গুলোতে দৈনিক অন্তত পাঁচবার প্রতিধ্বনিত হয়। গত অর্ধ শতাব্দী ধরে যার কণ্ঠের আজান মক্কার পাহাড়ে সবচেয়ে বেশি প্রতিধ্বনিত হয়েছে তিনি হলেন শায়খ আলি আহমাদ মোল্লা।

জানা যায়, মসজিদুল হারামে আজান দেয়ার অনন্য এ মর্যাদা তার বংশীয় ঐতিহ্য। তার দাদা, বাবা, চাচা, চাচাতো ভাই, এমনকি সন্তানেরা মহান এই গৌরব অর্জন করেছেন।

দাদা আব্দুর রহমান মোল্লা সর্বপ্রথম হারাম শরিফের মুয়াজ্জিন হওয়ার পরম সৌভাগ্য লাভ করেন। এরপর তার বাবা শায়খ সিদ্দিক ও চাচা শায়খ আব্দুর রহমান এই মর্যাদাপূর্ণ পদে আরোহণ করেন। শায়খ আলি আহমাদ মোল্লা ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তার চাচাতো ভাই শায়খ আব্দুল মালিক মোল্লার ইন্তেকালের পর তিনি মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিনদের প্রধান শায়খ নির্বাচিত হন। তার অনন্য সুন্দর কণ্ঠের সুমধুর আজানের জন্য ‘বেলাল আল হারাম’ উপাধি পান।

মসজিদুল হারামে আজান দেয়ার ক্ষেত্রে তার মায়ের পরিবারেরও বংশীয় ঐতিহ্য রয়েছে। তার নানা আব্দুল্লাহ খাওজ এখানের মুয়াজ্জিন ছিলেন।

শায়খ আলি আহমাদ মোল্লা ১৯৭৫ সাল মোতাবেক ১৩৬৬ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। মসজিদুল হারামের চত্বরে শায়খ আশুরের কাছে তার অক্ষরজ্ঞান লাভ হয়। প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করেন হারামের সীমানার মধ্যে অবস্থিত মাদরাসাতুর রহমানিয়্যা হতে। পরে আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে পড়ার পর ভর্তি হন মা’হাদ আল আসিমাহ আননামুজুজিয়্যায়। ১৩৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে এখান থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।

তিনি যখন ১৩ বছরের শিশু, তখনই মসজিদুল হারামের বাবে জিয়ারতের মিনারের উঁচুতে দাঁড়িয়ে আজান দেয়ার সুযোগ পান। এরপর বাবে মাহকামার মিনারেও আজান দেন এবং এক সময় তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়, তিনি মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং সব মিনারের উঁচুতে দাঁড়িয়েই আজান দেয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ১৪০০ হিজরির আগে মিনারের উঁচুতে দাঁড়িয়ে আজান দেয়ার প্রচলন ছিল।

আলআরাবিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শায়খ আলি আহমাদ বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে বড় খবর হলো- যখন আমার বাবা আমাকে জানালেন আমি মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন নিযুক্ত হয়েছি।’ সূত্র : আলআরাবিয়া