বিশেষ প্রকল্পে ৫ লাখ হাফেজ তৈরির উদ্যোগ মিসর আল আজহারের

| আপডেট :  ৫ জুন ২০২২, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৫ জুন ২০২২, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ণ

শিশুদের পবিত্র কুরআন হিফজের জন্য দারুণ এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মিসরের জামে আল আজহার। এ লক্ষ্যে কায়রোর মূল কেন্দ্রসহ পুরো মিসরে আল আজহারের সর্বমোট ৫০৭টি শাখায় ১৫ দিনব্যাপী শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হয়েছে। মিসর আল ইয়ায়ুম জানিয়েছে, গত ২৮ জুন থেকে শুরু হওয়া ওই ভর্তিক্যাম্পে সারাদেশ থেকে ভর্তি হয়েছে অন্তত পাঁচ লাখ শিশু।

মিসর আল ইয়ায়ুম আরো জানায়, এই হিফজ প্রকল্পে ভর্তি শেষে ইতোমধ্যেই শনিবার থেকে হিফজ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে পরীক্ষার মাধ্যমে বাচ্চাদের স্তর নির্ধারণ করা হয়। আল আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম শায়খ ড. আহমাদ আত তাইয়েব শিশুদের ফ্রি কুরআন হিফজের জন্য এটি চালুর নির্দেশ দেন।

প্রকল্পে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল পাঁচ থেকে তেরো বছর। সরকারি নির্দেশনার সাথে সঙ্গতি রেখে শিশুদের হিফজের সময় ও স্তরবিন্যাস করা হয়েছে। একইসাথে শিশুদের কুরআন হিফজের ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে আল আজহার কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে। সেগুলো হলো-

সর্বনিম্ন বয়স পাঁচ ও সর্বোচ্চ বয়স ১৩ হতে হবে। সবাইকে স্তর নির্ধারণী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ক্লাসে উপস্থিতির হার সর্বনিম্ন ৮০ শতাংশ থাকতে হবে। মাসিক পরীক্ষা, লেভেল এন্ডিং পরীক্ষা, ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। এক লেভেল থেকে আরেক লেভেলে যাওয়ার জন্য পরিক্ষায় পাস নম্বার পেতে হবে ইত্যাদি।

তাছাড়া কুরআন হিফজের ক্লাসগুলো মিসরে আল আজহারের সমস্ত ইন্সটিটিউটে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে। বিশাল কার্যক্রমটি পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে প্রচুরসংখ্যক হাফেজ ও সাধারণ কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

আল আজহারের এমন উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হলেও দেশটির কেউ কেউ এর সমালোচনা করছেন। তারা বলেছেন, এর মাধ্যমে বাচ্চাদের শৈশব ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পক্ষান্তরে আল আজহারের তরফ থেকে এর নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে, শিশু-কিশোরদের কুরআন শিক্ষা নিয়ে এমন মন্তব্য মূলত তাদেরকে দ্বীন, ধর্ম, নৈতিক মূল্যবোধ, জাতিগত পরিচয় ও সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান। একমাত্র কুরআন মাজিদই পারে সামাজিক শান্তি, স্থিতিশীলতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থান সর্বোত্তমভাবে নিশ্চিত করতে। সুতরাং কুরআন শিক্ষা নিয়ে এমন দৃষ্টিভঙ্গি জাতির জন্য ক্ষতিকর।

উল্লেখ্য, আল আজহারের অধীনে দেশী-বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের পবিত্র কুরআন হিফজের লক্ষ্যে প্রায় সারা বছর নানামুখী কার্যক্রম চলতে থাকে। প্রাইমারি থেকে নিয়ে মাস্টার্স পর্যন্ত প্রত্যেক লেভেলে ধারাবাহিকভাবে পবিত্র কুরআনের নির্দিষ্ট অংশ হিফজ করা এবং পরীক্ষা দেয়া বাধ্যতামূলক। পূর্ণ কুরআন হিফজকরণ এবং কুরআনের পঠনরীতির ওপর আলাদা সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীরা আল আজহারের কুরআন হিফজের প্রায় সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে ঈর্ষণীয় ফলাফলের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছেন। -আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হাশেমের অনুবাদ