মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করলেন চিকিৎসক

| আপডেট :  ২১ অক্টোবর ২০২১, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২১ অক্টোবর ২০২১, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

কিডনি মানবদেহের অতিব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের একটি।বিশ্বে এই প্রথম মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করে যুগান্তকারী সফলতা দেখিয়েছেন একদল চিকিৎসক।মানুষের শরীরে প্রাণীর কিডনি প্রতিস্থাপনে যে সফলতার মুখ দেখবে বলে গত কয়েক দশক ধরে চিকিৎসকরা প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন; নিউইয়র্কের চিকিৎসকরা সেই প্রচেষ্টার প্রথম সফলতা পেলেন।আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ও নিউইয়র্ক টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, প্রাণীর কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এজন্য শূকরের একটি জিন পাল্টে নতুন শূকরের জন্ম দিয়ে সেটি বড় করে তোলেন। এরপর সেই শূকরের কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপন করলে স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে।একটি মানুষের কিডনি যে পরিমাণ বর্জ্য পরিশোধন করে মূত্র নিষ্কাশনে সহায়তা করে শূকরের কিডনিও একই কাজ করছে এবং তা মানবদেহ প্রত্যাখ্যান করেনি।

মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে চিকিৎসকরা দেখতে পান যে, শূকরের শরীরের কোষে বিশেষ এক ধরনের সুগার রয়েছে যা মানবদেহ তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে। পরে শূকরের জিন প্রতিস্থাপনের জন্য নতুন জিন সম্পাদন করা হয়। জিন সম্পাদনা করে শূকরের শরীর থেকে সেই সুগার ফেলে দেওয়া হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাতে আক্রান্ত না হয় সেজন্য শূকরের জিন সম্পাদনা করা হয়।

মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজটি সম্পন্ন হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটির ‘এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হেলথ হাসপাতালে। চিকিৎসকরা ‘ব্রেইন ডেথ’ এক নারীর শরীরের বাইরে এক জোড়া বড় রক্তনালীর সঙ্গে শূকরের কিডনি সংযুক্ত করে দিয়েছিলেন। এরপর চিকিৎসকরা দু’দিন ধরে এই কিডনি প্রতিস্থাপন পর্যবেক্ষণ করেন। এতে দেখা যায়, কিডনির যেভাবে কাজ করার কথা ছিল, ঠিক সেভাবেই কাজ করছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, কিডনি গ্রহীতার শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা অস্বাভাবিক ছিল। তবে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তা স্বাভাবিক হয়ে যায়।

এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হেলথ হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনে চিকিৎসক দলের নেতৃত্বে থাকা ডা. রবার্ট মন্টগোমারি বলেন, শূকরের কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপনের পর উদ্বিগ্ন ছিলাম। যে আগের মতো কিডনি মানবদেহ প্রত্যাখ্যান করে কিনা। কিন্তু পুরোপুরি স্বাভাবিকভাবে কিডনি কাজ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক চিকিৎসক অ্যান্ড্রু অ্যাডামস বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজটি সঠিক পথে এগোচ্ছে। এটি রোগী, গবেষক এবং নিয়ন্ত্রকদের আশ্বস্ত করবে।