অপহরণকারীদের লাশ রাস্তার মোড়ে ঝুলিয়ে রাখলো তালেবান

| আপডেট :  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৪৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৪৭ অপরাহ্ণ

আফগানিস্তানের হেরাত শহরের রাস্তার মোড়ে স’ন্দেহভাজন চার অ’পহরণকারীর লা’শ ঝু’লিয়ে রেখেছে তালেবান। তাদের গু’লি করে হ’’ত্যার পর লা’শ ঝু’লিয়ে রাখা হয়েছে। তালেবানের একজন কু’খ্যাত কর্মকর্তার মৃ’ত্যুদ’ণ্ড এবং অঙ্গহানির মতো ক’ঠোর শা’স্তি আবার শুরু হওয়ার হুঁ’শিয়ারি দেয়ার একদিন পর এই ভয়াবহ প্রদর্শন ঘটলো।

স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, একজন ব্যবসায়ী এবং তার ছেলেকে জি’ম্মি করার অ’ভিযোগের পর ব’ন্দুকযু’দ্ধে ওই ব্যক্তিরা নি’হত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের কেন্দ্রে একটি ক্রেন থেকে একটি লা’শ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

ওয়াজির আহমাদ সিদ্দিকি নামে স্থানীয় এক দোকানদার বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এপিকে বলেন, চারটি লা’শ মোড়ে আনা হয়, একটিকে সেখানে ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং বাকি তিনটি লা’শ প্রদর্শনের জন্য শহরের অন্যান্য মোড়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

হেরাতের ডেপুটি গভর্নর মৌলভী শাইর বলেন, অ’পহরণের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্যই লা’শগুলো এভাবে ঝুলিয়ে প্রদর্শন করা হয়েছে। তিনি বলেন, একজন ব্যবসায়ী এবং তার ছেলেকে অ’পহরণের খবর পেয়ে তালেবান সদস্যরা তাদের গু’লি করে হ’’ত্যা করে। পরে ওই ব্যবসায়ী ও তার ছেলেকে মুক্তি করা হয়।

তবে ওই ব্যক্তিদের কোন পরিস্থিতিতে হ’’ত্যা করা হয়েছিল, সেটি বিবিসি নিরপেক্ষভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি। যাই হোক, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা ছবিতে দেখা গেছে যে, একটি পিক-আপ ট্রাকের পিছনে র’ক্তাক্ত দেহ দেখা যাচ্ছে, যেখানে একজনের লা’শ ক্রেনের সাথে ঝুলে আছে।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে একজন ব্যক্তিকে ক্রেন থেকে ঝুলিয়ে দেয়ার পর তার বুকে একটি সংকেতে লেখা হয়েছে, ‘অ’পহরণকারীদের এভাবে শা’স্তি দেয়া হবে।’ ১৫ অগাস্ট আফগানিস্তানে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তালেবানরা তাদের আগের শাসনামলের তুলনায় একটি কিছুটা নমনীয় শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। কিন্তু ইতোমধ্যে দেশজুড়ে মা’নবাধিকার ল’ঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনার উল্লেখ পাওয়া গেছে।

তালেবানের সাবেক ধর্মীয় পুলিশ বাহিনীর প্রধান মোল্লা নূরুদ্দিন তুরাবি, তিনি নতুন স’রকারের অধীনে কা’রাগারের দায়িত্বে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার হুঁ’শিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, আফগানিস্তানে মৃ’ত্যুদ’ণ্ড এবং অঙ্গহানির মতো ক’ঠোর শা’স্তি আবার শুরু হবে। এসব শা’স্তি ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয়’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এপি- কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ১৯৯০ এর দশকের তালেবান শাসনামলের মতো এই শা’স্তিগুলো জনসমক্ষে কার্যকর করা হবে না। গোষ্ঠীটির আগের পাঁচ বছরের শাসনামলে কাবুলের স্পোর্টস স্টেডিয়ামে বা ঈদগাহ মসজিদের বিস্তীর্ণ মাঠে প্রায়ই প্রকাশ্যে মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর করা হতো।

জাতিসঙ্ঘের নি’ষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা তুরাবি তাদের আগের সাজা কার্যকরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘স্টেডিয়ামে শা’স্তির জন্য সবাই আমাদের সমালোচনা করেছিল, কিন্তু তাদের আইন এবং শা’স্তি কেমন হবে সে সম্পর্কে আমরা কখনো কিছু বলিনি।’

আগস্ট মাসে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল যে, নি’র্যাতিত হাজারা সংখ্যালঘুদের নয়জন সদস্যের হ’’ত্যাকাণ্ডের পেছনে তালেবান যো’দ্ধারা ছিল। অ্যামনেস্টির মহাস’চিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড সেই সময় বলেছিলেন, ‘ঠাণ্ডা মাথায় ব’র্বর হ’’ত্যাকাণ্ডের’ এই ঘটনা ছিল ‘তালেবানদের অতীত রেকর্ডের স্মারক এবং তালেবান শাসন কী নিয়ে আসতে পারে তার একটি ভয়াবহ সূচক।’ সূত্র : বিবিসি