নিজের হাতে আবিষ্কৃত ‘হেলিকপ্টার’ ই কেড়ে নিল ইসমাইলের প্রাণ

| আপডেট :  ১২ আগস্ট ২০২১, ০২:৩৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১২ আগস্ট ২০২১, ০২:৩০ অপরাহ্ণ

স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। যে ‘আবিষ্কার’ দিয়ে দেশ ও দশের মন জয়ের চেষ্টা করেছিলেন, সেই ‘আবিষ্কার’ই তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল। অনেকটা মেরি শেলীর উপন্যাস ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন’-এর মতো। নিজের তৈরি হেলিকপ্টারের ব্লেডে গলা কেটে মৃত্যু হল মহারাষ্ট্রের স্কুলছুট যুবক

ইসমাইল শেখের। পড়াশোনায় মন বসত না। তাই অষ্টম শ্রেণিতে থাকতেই স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেন মহারাষ্ট্রের প্রত্যন্ত গ্রাম ফুলসাওয়াঙ্গির ইসমাইল। কাজ শুরু করেন ভাই মুসাভিরের ওয়েল্ডিংয়ের দোকানে। সেখানে কাজ করতে করতেই ইসমাইল গৃহস্থের নানা আসবাব বানানোর কৌশল আয়ত্ত

করে ফেলেন। তবে তাঁর নজর ছিল আরও উঁচুতে। সব সময় এমন একটা কিছু করতে চাইতেন যাতে ফুলসাওয়াঙ্গির নাম আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছয়। ইসমাইল ঠিক করেন তিনি একটা মিনি হেলিকপ্টার বানাবেন। এক আসনের হবে সেই কপ্টার। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। দোকানে কাজ করার ফাঁকে

তাঁর ‘আবিষ্কার’কে একটু একটু করে রূপ দেওয়া শুরু করেন। ইসমাইলের প্রিয় ছবি ছিল ‘থ্রি ইডিয়টস’। সেই ছবির র‌্যাঞ্চো ছিল তাঁর জীবনের আদর্শ। সেই আদর্শকেই অনুসরণ করে নিজের মিশনে নেমে পড়েন ইসমাইল। শুরু হয় ইউটিউব থেকে জ্ঞান সংগ্রহ করার পালা। ইউটিউব দেখে তাঁর

স্বপ্নের আবিষ্কারকে রূপ দেওয়ার কাজ শুরু করেন। দু’বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলেন এক আসনের একটি হেলিকপ্টার। মারুতি ৮০০ গাড়ির ইঞ্জিন লাগিয়ে দিয়েছিলেন তাতে। অপেক্ষা ছিল সেটা দেশ ও দশের সামনে তুলে ধরার। তাই স্বাধীনতা দিবসের দিনটিকেই বেছে নিয়েছিলেন ইসমাইল।

সেই আবিষ্কারই মঙ্গলবার প্রাণ কেড়ে নিল ইসমাইলের। তাঁর এক বন্ধু শচীন উবালে জানান, নিজের আবিষ্কার নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন ইসমাইল। মঙ্গলবার রাতে সেই হেলিকপ্টার পরীক্ষা করছিলেন তিনি। গ্রামের বহু মানুষ হাজির হয়েছিলেন তা চাক্ষুষ করতে। হেলিকপ্টার চালু করেছিলেন ইসমাইল।

আচমকাই তার টেল রোটেটর হেলিকপ্টারের মূল পাখাকে আঘাত করে। মূল পাখার ব্লেড ভেঙে গিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ইসমাইলের গলায় আঘাত করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয়। ইসমাইল ভালবেসে তাঁর হেলিকপ্টারের নাম দিয়েছিলেন ‘মুন্না হেলিকপ্টার’। ইসমাইলের ডাকনাম ছিল মুন্না। সূত্রঃ আনন্দ বাজার