বিবর্তনের ইতিহাসে অন্ধকার অধ্যায়ের খোঁজ? হইহই পড়ে গিয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক মহলে

| আপডেট :  ২৭ জুন ২০২১, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৭ জুন ২০২১, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ণ

পূর্বপুরুষদের জানা-চেনা কি এত সহজ? মোটেই নয়। হোমো সাপিয়েন্সের (Homo sapiens) ঠিক আগের পর্যায়ে ‘নিয়ান্ডারথাল’ (Neanderthal)বলে জানা ছিল এতদিন। কিন্তু ইজরায়েলের (Isarel) নাশের রামলায় প্রত্নতাত্বিক খনন সম্পূর্ণ নতুন এক কাহিনীর দিকে ইঙ্গিত করছে।

বলা হচ্ছে, এই এলাকা খুঁড়ে এমন কিছু হাড়গোড় মিলেছে, যা পরীক্ষা করে বোঝা যাচ্ছে, ওই সময়ে আরও একদল মানবেতর প্রাণীর বাস ছিল। তারাও আজকের মানুষের পূর্বপুরুষ। সম্ভবত খুব কম সংখ্যায় এই অঞ্চলের জনজাতির সঙ্গে এমনভাবেই মিলেমিশে ছিল, যাদের পৃথক করা যায়নি এতদিন। সাম্প্রতিক খননকাজে তা উঠে এল। বিষয়টি নিয়ে বেশ হইহই পড়ে গিয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক মহলে। সবাই খুব উৎসাহী নতুন এক পূর্বপুরুষের সন্ধান পেয়ে। বিশ্ববিখ্যাত পত্রিকা ‘জার্নাল’ (Journal) এ এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ইজরায়েলের নাশের রামলা এলাকায় খননকাজ (Excavation) করতে গিয়ে আচমকাই হাড়গোড়, খুলি বেরিয়ে আসে। যা পরীক্ষা করে রীতিমতো চমকে উঠেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। কী এমন পেয়েছেন? জানা যাচ্ছে, কঙ্কাল, চোয়ালের অংশ, হাড় পাওয়া গিয়েছে। এসব আনুমানিক ১ লক্ষ ৪০ হাজার বছর আগেকার। পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞদের মত, নিয়ান্ডারথাল কিংবা হোমো সাপিয়েন্সের থেকে এসব গঠন খানিকটা পৃথক।

এই দুই পর্যায়ের মাঝামাঝি থাকা মানব প্রজন্মের একটা পর্যায়, যা আগে কখনও জানাই যায়নি। প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, নাশের রামলার খননকাজ সম্পূর্ণ নতুন এক দিগন্ত খুলে দিয়েছে, যাতে মানবজগতের বিবর্তনের ইতিহাস লেখা হতে পারে নতুনভাবে।

এখান থেকে পাওয়া নমুনা পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা মানুষের এই পর্যায়ের পূর্বপুরুষদের প্রকৃতি কেমন ছিল, তারও একটা প্রাথমিক আভাস মিলেছে। প্রচুর ক্যাম্পফায়ারের চিহ্ন মিলেছে। যা থেকে অনুমান করা যায়, এই প্রজাতিটি আগুনের (Fire) ব্যবহার জানত। কিছু প্রাণীর ঝলসানো দেহ এবং হাড়গোড়, পচে যাওয়া মাংসপিণ্ড দেখে অনুমান, এরা মূলত শিকারি এবং মাংসাশী ছিল। জঙ্গলের জীবজন্তু ধরে এনে পুড়িয়ে খাবারের ব্যবস্থা করত।

‘জার্নাল’এ প্রকাশিত এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনটির একটি অংশে বলা হচ্ছে, ”আফ্রিকা ও ইউরেশিয়ার ঠিক সীমান্ত অঞ্চলে পূর্বপুরুষদের এই নতুন প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। যেভাবে মানবজন্ম বিবর্তনের ইতিহাস এতদিন ধরে রচিত হয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শনের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে, তা খানিকটা জটিল হয়ে গেল।

এখানে নিয়ান্ডারথালদের সঙ্গেই হয়ত এরা বসবাস করত।” তবে কি এই খননকাজ থেকে পাওয়া নমুনার উপর ভিত্তি করে নিয়ান্ডারথাল ও হোমো সাপিয়েন্সের মাঝে অন্য কোনও পর্যায় রয়েছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে? এই সিদ্ধান্তে আসতে গেলে আরও অনেক পরীক্ষানিরীক্ষা দরকার বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্বিকরা। সুত্রঃ সংবাদ প্রতিদিন