নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চা পানে’ দুই কোটি টাকা চান ছাত্রলীগ নেতা

| আপডেট :  ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ণ

চা পানের জন্য’ দুই কোটি টাকা চাঁ’দা চাওয়ার অ’ভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতার বি’রুদ্ধে। টাকা না দেয়ায় ত্রিশালে জাতীয় কবির নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজে বা’ধাও দেয়া হয়। তবে পরে সীমিত পরিসরে কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অ’ভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব তাদের কাছে চাঁ’দা চেয়েছেন। না পেয়ে নেতাকর্মীদের দিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা লিখিত অ’ভিযোগও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। প্রশাসন বলছে, অ’ভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে লিখিত অ’ভিযোগে কাজ বন্ধের কথা বলা হলেও চাঁ’দা চাওয়ার বি’ষয়ে কিছু বলা হয়নি।

তবে ছাত্রলীগ নেতা এই অ’ভিযোগ অস্বীকার করে অ’পপ্রচার বলেছেন। উপা’চার্য বলেছেন, ছাত্রলীগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভু’ল-বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটার মীমাংসা হয়ে গেছে। তবে কী নিয়ে ভু’ল-বোঝাবুঝি, সেটি জানাতে পারেননি তিনি। এক মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শ্র’মিক চলে গেছেন। এখন মাত্র ২০ জন শ্র’মিক দিয়ে ঢিমেতালে চলছে কাজ।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেএসবিএল-ইউসিসিএল জয়েন্ট ভেন্সারের স্থানীয় ব্যবস্থাপক আবু হানিফ জানান, গত বছর ৭০ কোটি টাকায় ১০ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ পান তারা। এর মধ্যে ১৮ কোটি টাকার কাজ শেষে বিল তুলেছেন ৯ কোটি টাকার মতো।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েক দফায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবের নির্দেশে নেতাকর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেন। কারণ জানতে চাইলে তাকে রাকিবের বাসায় ডাকা হয়। পরে বাসায় গেলে চা পানের জন্য রাকিব দুই কোটি টাকা চান। এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পরে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।’

হানিফ জানান, এক মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকায় বি’ষয়টির সমাধান চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপা’চার্য, রেজিস্ট্রার ও ত্রিশাল থানায় অ’ভিযোগ দেয়া হয়। তবে কোনো সুরাহা না হওয়ায় তিনি শ্র’মিকদের বেতন দিতে পারেননি। এ কারণে তার ১৩০ শ্র’মিকের মধ্যে এখন মাত্র ২০ জন আছেন। এখন শুরু হলেও শ্র’মিকসং’কটে কোনো রকমে কাজ চলছে।

কয়েকজন শ্র’মিক জানান, কাজ শুরুর কয়েক মাস পর শিক্ষার্থীরা এসে প্রায়ই কাজ বন্ধ করে দিত। কারণ জানতে চাইলে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবের সঙ্গে দেখা করতে বলত।

তবে চাঁ’দা দাবির বি’ষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা রাকিব বলেন, ‘ছাত্রলীগ উন্নয়নে বিশ্বাসী। উন্নয়ন বা’ধাগ্রস্ত হবে এমন কিছু করবে না। চাঁ’দা দাবি তো দূরের কথা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোথায় কী কাজ হচ্ছে, তাও ছাত্রলীগ জানে না। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করাতে এসব অ’পপ্রচার করা হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হুমায়ূন কবীর জানান, একাডেমিক ভবনের কাজ বন্ধের বি’ষয়ে তারা একটি লিখিত অ’ভিযোগ পেয়েছেন। তবে সেখানে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের কথা উল্লেখ নেই। বি’ষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

উপা’চার্য অধ্যাপক এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রলীগের মধ্যে একটি বি’ষয় নিয়ে ভু’ল-বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটি সমাধান হয়ে গেছে। এখন কাজ শুরু হয়েছে। স’মস্যা নেই।’