সংসার সামলেও ৩৮তম বিসিএসে তৃতীয় হলেন স্বর্ণজয়ী নিলীমা

| আপডেট :  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ণ

ফাতিমা আলম মেঘলা পেশায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। বাবা মো. শাহ আলম, মা সামসুন্নাহার মায়া। তিনি ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। সম্প্রতি তার ক্যারিয়ার ও সফলতা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাংবাদিক জাহিদ হাসান— আপনার ছেলেবেলা কেমন কেটেছে?ফাতিমা আলম মেঘলা: ছেলেবেলা কেটেছে স্কুলে, খেলাধুলার মাঠে, নাচ আর গানে। আমি সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি। তাই ছোটবেলা থেকেই নানান কিছুর সাথে জড়িত ছিলাম। ‘এক্সট্রোভার্ট বাচ্চা’ যাকে বলে আর কি! হা হা হা!

পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল কি?ফাতিমা আলম মেঘলা: তেমন কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল না। তবে খুব একটা উৎসাহও পাইনি। মেয়ে বলে কথা, খুব ভালো ফলাফল করলেও পরিবার থেকে তেমন সাড়া পেতাম না, যতটা পাওয়ার কথা ছিল। তবে আমি আমার পড়াশোনাকে খুব ভালোবাসি। আমি নিজের জন্য পড়ি। নিজেকে উন্নত করার জন্য পড়ি।

আমার বাবা-মা যেন ছেলে না থাকার আফসোস না করেন, সে জন্য পড়ি।শিক্ষকতা পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?ফাতিমা আলম মেঘলা: ছোটবেলায় টিচার টিচার খেলতাম। তখন থেকেই মনে হতো যে, বড় হয়ে শিক্ষক হবো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বেশকিছু ভালো শিক্ষককে দেখে সে ইচ্ছা আরও বেড়ে যায়।

ক্যারিয়ার যাত্রার গল্প শুনতে চাই—ফাতিমা আলম মেঘলা: ঢাবির ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স শেষ করেই স্বনামধন্য কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান ‘রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়’র ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করি। এখনো সেখানেই আছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আমি।

এছাড়াও এখানকার ডিসিপ্লিনারি কমিটির মেম্বর এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রক্টর হিসেবে কাজ করছি। বিভাগীয় পরীক্ষা কমিটিসহ একাডেমিক কমিটির দায়িত্ব পালন করছি। এখানে শিক্ষকতা করার সময়েই ঢাবির যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগে আরেকটি মাস্টার্স করি। এখন সে বিভাগেই এম.ফিল গবেষক হিসেবে নিয়োজিত আছি।

শিক্ষকতা পেশায় যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?ফাতিমা আলম মেঘলা: শিক্ষকতা পেশাটি আসলে একটি মহান পেশা। পেশার চেয়ে নেশাই বেশি কাজ করে এখানে। শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর।

তাই তার নৈতিকতা হবে সর্বোত্তম। শিক্ষক হবেন স্বার্থহীন, লোভহীন এবং সৎ ব্যক্তি। ছাত্রদের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করার নামই শিক্ষকতা। যে বা যারা এসব মেনে নিতে পারবেন, তারাই এ মহান পেশাকে আপন করতে পারবেন।কারো কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কি?ফাতিমা আলম মেঘলা: প্রথমত আমি নিজেই নিজের প্রেরণা। পরিবার থেকে তেমন সাড়া না পেলেও আমার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?ফাতিমা আলম মেঘলা: ভবিষ্যতে আমি নিজেকে একজন ভালো শিক্ষক হিসেবে দেখতে চাই। আমার দ্বারা যেন কারো ক্ষতি না হয়, সেটাই চাই। আমার চাওয়া দেশ ও মানুষের কল্যাণে সীমাবদ্ধ।

দেশ ও মানুষের জন্য যদি কিছু করতে পারি, তবেই নিজেকে স্বার্থক মনে হবে। সবশেষে যা না বললেই নয়- অটিস্টিক বাচ্চারা আমার জীবনে এক অন্যতম অনুপ্রেরণা। আমি তাদের জন্য কিছু করতে চাই। আমি তাদের অন্তরের ভাষা বুঝতে চাই।