যু’ব’তীর স’ঙ্গে জো’রপূ’র্বক অ’শ্লীল ভি’ডিও করাতো অ’০ পহ’রণকা’রীরা

| আপডেট :  ২০ জানুয়ারি ২০২১, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২০ জানুয়ারি ২০২১, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

মিহির রায় একজন ফাস্ট ফুড বিক্রেতা। উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরে তার ‘ফুড স্টোরী’ নামে একটি দোকান আছে। ব্যবসা ভালোই চলছিল এই ব্যবসায়ীর। তার ফাস্ট ফুডের মান ভালো সেজন্য কিছু ক্রেতা নিয়মিত তার দোকানে আসতেন। একদিন এমনই এক ক্রেতা মিহিরকে খাবারের প্রশংসা করে ‘বলেন- তার ভাইয়ের একটি অনুষ্ঠানে ৮০ প্যাকেট খাবার লাগবে। মিহির তখন সম্মতি জানিয়ে বলেন- কিছু টাকা অগ্রিম দিতে হবে। তখন ওই ক্রেতা বাসা থেকে টাকা দিতে হবে- এমনটা জানিয়ে মিহিরকে স’ঙ্গে নিয়ে যান। এরপর থেকে পরিবারের স’দস্যরা মিহিরের আর খোঁজ পাচ্ছিলেন না।

হা’ত, মু’খ ও চো’খ বাঁ’০ধা মিহির একসময় নিজেকে আ’বি’ষ্কার করেন তিনি অ’০প’হৃ’ত হয়েছেন। এদিকে মিহিরের প’রিবারের সদস্যরা যখন খোঁ’জাখুঁ’জি করে তার স’ন্ধান পা’চ্ছিলেন না ঠিক তখন একটি অ’পরিচিত নম্বর থেকে তার স্ত্রীর মোবাইলে কল আসে। মোবাইল ফোনের অপর প্রান্ত থেকে মিহির বলেন, তার হা’ত-পা বেঁ’০ধে রা’খা হয়েছে। ২০ লাখ টাকা দিলে তারা তাকে ছে’ড়ে দেবে। পরে তার স্ত্রী বিভিন্ন সময়ে অ’ প’ হ’র’ণকা’রীদের ২ লাখ ৯১ হাজার টাকা দেন। তবুও অ’ পহ’ রণকা’রীদের ডেরা থেকে মু’ক্তি পা’ননি মিহির।

তাদের দা’বি”কৃত বাকি টাকা দেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত মিহিরকে ট’০ র্’চার করতে থাকে এবং প্রা ‘ণে মে’ রে ফে’লার হু’ম ‘কি দেয়। উ’পায়ান্তর না পেয়ে মিহিরের স্ত্রী আ’ইনশৃ’ঙ্খলা র’ক্ষাকা’রী বা’হিনীর দ্বারস্থ হন। পরবর্তীতে ম’হানগর গো’য়ে’ন্দা পু’লিশ উত্তরের একটি টিম মিহিরকে উ’দ্ধা’র করেছে। গ্রে’প্তা’র করা হয়েছে অ’ ০পহ’র’ণকা’রী চ’ক্রের মিরাজ (৩৫) ও বৃষ্টি (২১)কে। বাকি স’দস্যরা প’লা’তক রয়েছেন।

ঢাকা ম’হানগর গো’য়েন্দা পুলিশের অ’তিরিক্ত ক’মিশনার কে এম হাফিজ আক্তার গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সোমবার বিকাল চারটায় দক্ষিণখান থানার চেয়ারম্যান পাড়ার একটি বাড়িতে অ’ভি’যান চা’লিয়ে অ’০প’হৃ’ত ভি’কটিমকে উ’দ্ধা’রসহ অ’০ পহ’র’ণকারী চ’ক্রের স’দস্যদের গ্রে’প্তার করে উত্তরা জোনাল টিম। গ্রে’প্’তারের সময় তাদের হে’ফাজত থেকে অ’ ০পহ’রণে ব্যবহৃত একটি ছু’০রি, ৫৭টি ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল টাইস, একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও একটি প্লাস উ’দ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে ভি’ক’টিমের স্ত্’রীর কাছ থেকে বিকাশে নেয়া নগদ ৪৯ হাজার টাকা উ’দ্ধা’র করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যে চ০’ক্রটি ব্যবসায়ী মিহির রায়কে অ’ ০পহ’রণ করেছিল তারা পে’শাদার অ’ ০পহ’র’ণ’কারী। গত বছরের অক্টোবর থেকে তারা নিয়মিত এই কাজ করতো। প্রতি মাসে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অন্তত ৩/৪ জন ব্’যক্তিকে তারা ধ’রে নিয়ে যেতো। গো’পন আ’স্তানায় নিয়ে তারা ভু’ ক্তভো’গীদের নানাভাবে ট’০ র্চা’র করতো। প্রা’০ণনা’ শের ভ’০য়ভী’তি দেখিয়ে প’রিবারের লো’কজনের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে আ’দায় করতো লাখ লাখ টাকা।

ডি’বি জানিয়েছে, ১৩ই জানুয়ারি মিহির রায় অ’ ০প’হ’রণের পর বিকাশের মাধ্যমে অনেক টাকা দিয়েও অ’ ০পহ’র’ণ’কারীদের কাছ থেকে স্বা’মীকে ছা’ড়াতে পা’রছিলেন না তার স্ত্রী। বরং উ’ল্টো অ’ ০পহ’রণকারীরা মিহিরকে নি’র্০যা’তন করে প্রা’ ণনা০’শের হু’ম’কি দিচ্ছিলো। পরে ১৬ই জানুয়ারি উত্তরা পশ্চিম থানায় অ’ পহৃ’ত ব্যবসায়ী মিহির রায়ের স্ত্রী বা’দী হয়ে একটি মা’ম’লা করেন। ওই ব্’বসায়ীকে উ’দ্ধা’রের জন্য বিভিন্ন স্থানে অ’ভি’যান চা’লায় ডি’বি।

ত’দন্তকালে ডি’বি জানতে পারে অ’০ পহ’রণ চ’ক্র’টি ভি’কটিমকে দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান পাড়ার হেজুর উদ্দিন রোডের একটি বাড়িতে আ’ট’কে রেখেছে। এমন সং’বাদ পেয়ে ওই বাড়িতে অ’ভি’যান চা’লা’নো হয়। বাড়িটির ৩য় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হা’ত-পা বাঁ’০ধা অ’বস্থায় ভি’ক’টিমকে উ’দ্ধা’র করা হয়।

ডি’বি আরো জানায়, অ’ ০পহ’রণকারী এই চ’০ক্রের আ’স্তানায় এ’কজন ত’রুণীকে রাখা হয়। ওই ত’রুণী অ’ ০পহ’রণকারীদের জন্য রান্না করেন। এ ছাড়া যাদেরকে অ’ ০পহ’রণ করে নেয়া হয় তাদেরকে ব’স্ত্রহী’ন করে ওই ত’রুণীর স’ঙ্গে অ’শালীন ভিডিও ও ছবি তোলা হয়। অ’০ পহৃ’তদেরকে নানাভাবে ট’০র্চা’র করে তাদের প’রিবারের কাছ থেকে টাকা আদা’য়ের পর ছে’ড়ে দেয়ার সময় বলা হয় যদি মু’খ খু’লে বা পুলিশের কাছে কিছু বলে তবে এসব অ’শ্লীল ভিডিও ও ছবি সা’মাজিক যো’গাযোগ মাধ্যমে ছে’ড়ে দেয়া হবে। এ জন্য অনেক ভু’ক্তভো’গী মা’ন-স’ম্মানের ভ’য়ে নি’র্যাত’নের শি’কা’র হয়েও মু’খ খু’লতো না। কিছু দিন পর পর তারা

এই কাজের জন্য নতুন নতুন যু’ব’তীকে নিয়ে আসতো। নির্দিষ্ট বেতনে ওই যু’ব’তীরা কাজ করতো। রান্না আর ভু’ক্তভো’গীদের স’ঙ্গে ছবি তোলা ছাড়াও অ’ ০পহ’রণকারীদের স’ঙ্গে যু’বতীরা শা’রী’রিক স’ম্পর্ক করতো। এই চ’ক্রের সর্বশেষ যু’বতী ছিল গ্রে’প্তা’র বৃষ্টি। ডি’বি জানায়, এই চ’ক্রের মূ’লহো’তারা প’লা’তক রয়েছে। তাদেরকে এখনো গ্রে’প্তা’র করা যায় নি।

এদিকে অ’০ পহ’রণকারী চ’ক্রের স’দস্যদেরকে ডি’বি গ্রে’প্তা’র করেছে, এমন খবর পেয়ে গতকাল ডি’বি অফিসে এসেছিলেন এমন আরো অনেক ভু’ক্তভো’গী। তাদের কাছ থেকেও প্রায় একই কৌশ’লে নি’ র্যা’তন করে টাকা আ’দায় করেছে অ’ ০পহ’র’ণকারীরা।

এমন এক ভু’ক্তভো’গী হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এলাকার নেয়ামত উল্লাহ। তিনি দীর্ঘদিন ধ’রে ঢাকায় রেন্ট-এ- কারের গাড়ি চালাতেন। গত বছরের শেষের দিকে তাকে অ’০পহ’রণ করে নিয়ে যায় চ’ক্র’টি। নেয়ামত মানবজমিনকে বলেন, ১০ই ডিসেম্বর রাতে আমি কেউলা এলাকা দিয়ে গাড়ি চা’লিয়ে আসছিলাম। এমন সময় দেখতে পাই একটি হাইয়েস গাড়ি আমার গাড়ি থামানোর জন্য সংকেত দিচ্ছে। কিন্তু আমি গাড়ি না থামিয়ে সামনে যাচ্ছিলাম।

এমন সময় ওই হাইয়েসটি সামনে এসে ব্যা’রিকেড দিয়ে আমার গাড়ি থামায়। পরে গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে এসে আমাকে বলে এত দেরি হলো কেন গাড়ি থামাতে। আমি বলি চাইলেই তো গাড়ি থামানো যায় না, সময় লাগে। পরে তারা আমার গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চায়। আমি বলি কাগজপত্র দেখার জন্য তো পু’লিশের আরেকটি ডিপার্টমেন্ট আছে। তখন তারা তুই কি আমাদেরকে আ’ইন শি’খাবি বলেই মা ‘রধ’র শুরু করে। তারপর আমার গাড়ির লাইসেন্স দেখে বলে মেয়াদ নাই স্যারের কাছে যেতে হবে। এরপর আমাকে তাদের হাইয়েসের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পরপরই আমাকে কয়েকজন ধরে ধা’ক্কা দিয়ে গাড়ির ভেতরে তু’লে। তখন মা’থায় রি’ভলবার ধ’রে আমার মু’খে কিছু একটা দিয়ে মু”খ চো’খ-মু’খ বেঁ’ ধে ফে’লে। ১ মিনিট পরে আমি আর কিছু বলতে পা’রি নাই।

তিনি বলেন, ১৪ দিন তারা আমাকে আ’ট’কে রেখেছিল। আমার কাছে তারা ২০ লাখ টাকা চায়। কিন্তু এত টাকা দিতে আমি রাজি হ’ইনি। এরপর টাকা কমিয়ে ১১ লাখ চায়। সেটিও দিতে অ’পারগতা জানালে তারা আমার শ’রীরে ই’লেকট্রিক শ’র্ট দিয়ে ট’ ০র্চা’র করে। ওই সময় তারা আমার ঢাকা ও বাড়ির ঠিকানা নিয়ে হয়তো খোঁ’জখবর নিয়েছে। একপর্যায়ে তারা আমাকে বলে ৫ লাখ টাকা দিতেই হবে। পরে আমার প’রিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আ’দায় করে। পরে আমাকে তিনশ’ ফিট সড়কে চো খ বেঁ’ ধে ফে’ লে রেখে যায়।

সূত্রঃ মানবজমিন