মীর সাব্বিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তোপের মুখে সেই উপস্থাপিকা

| আপডেট :  ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০৩ অপরাহ্ণ

ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা মীর সাব্বিরের একটি ভিডিও নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে অভিনেতা উপস্থাপিকা ইসরাত পায়েলকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এই মাতারি তুমি এরম উদলা গায়ে দাঁড়ায়ে আছো কিয়েরলিগা’। তখন বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলেও পরবর্তীতে এটি নিয়ে সরব হন পায়েল।

‘মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২২’-এর মঞ্চে বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দিলেও পরে সাব্বিরের মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তোলেন ওই উপস্থাপিকা। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক একটি মঞ্চে এসে পোশাক নিয়ে কথা বলাটা কুরুচির লক্ষণ। এই বিষয়ে তাকে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’

কিন্তু সাক্ষাৎকারটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর থেকে কমেন্ট বক্সে ওই উপস্থাপিকারই সমালোচনা করছেন নেটগেরিকরা। যাদের মধ্যে নারী নেটগেরিকরাও রয়েছেন। আরোহী হাওলাদার নামে একজন লিখেছেন, ‘ভাইরাল হওয়ার ধান্দা। আগে কেউ চিনতো না এখন ভালোভাবে চিনবে এটাই।’

শাহরিন জাহান শর্মি নামে একজন লিখেছেন, ‘আপনি যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবেন আপনাকে সেভাবেই দেখবে সবাই।’ এইচ এম নাসির উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, ‘সাব্বির ভাইকে স্যালুট, আপনার মতো সবাই যদি সব জায়গায় প্রতিবাদ করতো তাহলে আজ আমাদের সমাজে নারীরা এত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়তো না।’ জান্নাতুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, ‘তখন তো ঠিকই সাব্বির ভাইয়ের কথায় মজা নিছেন, হাসি দিলেন। এখন আবার ক্রাইম হয়ে গেল। আজব দুনিয়া।’

দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও বিরোধী দলীয় নেত্রী নারী- সাক্ষাৎকারে এমন উদাহরণ টানেন ওই উপস্থাপিকা। এ বিষয়ে মোশাররফ নোমান নামে এক নেটগেরিক লিখেছেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেত্রী আপনার মতো অশালীন পোশাক পরে না, যে তাদের উদাহরণ টানবেন!’

এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে বুধবার বিকালে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন মীর সাব্বির। ‘এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি’ উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘গত ১১ নভেম্বর মিসেস ইউনিভার্সের একটি প্রতিযোগিতায় আমি অতিথি হয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি কথা নিয়ে প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপিকা দুই একটি কথা বলেছেন। মঞ্চে আমার সঙ্গে কথা বলার পর দেখলাম , ওই উপস্থাপিকা তার বরাত দিয়ে দুই একটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত করেছেন। এর কারণে অনেক সাংবাদিক আমাকে ফোনও করেছেন।’

‘আসলে মূল বিষয়টা ছিল, ‘মানে বলতে পারেন তেমন কিছুই না। একটা ছোট্ট বিষয়কে হঠাৎ করে বড় করার চেষ্টা করা হয়েছে। উপস্থাপিকা মজার ছলে আমার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা শুনতে চেয়েছেন। যেহেতু আমি বরিশালের ছেলে। আমি যে কথাটা বলেছিলাম, সেটা উপস্থাপিকা চমৎকার হেসে রিসিভ করেছেন এবং দর্শকরা তখন মজা পেয়েছেন। আমি যেটা বলেছি সেটা তাৎক্ষণিক এবং এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কাউকে হেয় করার জন্য কিছু বলি নাই। সেটা নিশ্চয়ই সকলেই (যারা দেখেছেন তারা বুঝতে পেরেছেন)।’

উপস্থাপিকার ক্ষমা চাওয়ার মন্তব্যের বিষয়ে মীর সাব্বির লিখেছেন, ‘সে আমার ছোট বোনের মত। সে যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি দুঃখপ্রকাশ করতেই পারি। সেটা নিয়ে এভাবে ফেসবুক কিংবা বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তৃতা দিয়ে ছড়ানোর কিছু নাই। আমাকে বললেই পারত ‘দাদাভাই কিংবা ভাইয়া আপনাকে আমি রেসপেক্ট করি। আপনার কথায় আমি কষ্ট পেয়েছি।’ আমি তখন হয়তো বলতাম, ‘সরি তুমি কষ্ট পেও না। আমি তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য কথাটা বলিনি । কারণ তুমি আমার শব্দের মানে বুঝতে পারোনি।

বিষয়টা শেষ হয়ে যেত। আমি আমার ছোট বোনের আমার ব্যাপারে ভুল বোঝার কারণে দুঃখপ্রকাশ করতেই পারি। অতএব মন খারাপ না করে আমি আশা করছি, সকলের মতো আমার এই ছোট বোনটিরও আমার সম্পর্কে ধারণা এবং আমার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার ক্ষেত্রে (শব্দের মানে না বোঝার কারণে) যত অভিমান আছে সেটা ভুলে গিয়ে পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হবে।’