মনে মনে আমরাও পজিটিভ আছি, নইলে কি আর আপনাদের বাসায় আসতে বলতাম !

| আপডেট :  ১৩ অক্টোবর ২০২২, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৩ অক্টোবর ২০২২, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি বড় ছে’লে শাফকাত আসিফ রণকে বিয়ে করিয়েছেন ‘বাংলা গানের যুবরাজ’ খ্যাত আসিফ আকবর। ২৬ বছর বয়সে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন গায়কের ছে’লে। কনে গোপালগঞ্জের মে’য়ে ইসমত শেহরীন ঈশিতা। গত ৩ অক্টোবর রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে জাকজমকপূর্ণ আয়োজনে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেই বিয়েতে দুই পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও শোবিজের অনেক তারকাই উপস্থিত ছিলেন। যাদের বেশিরভাগই গানের জগতের।

এদিকে ছে’লের বিয়ে নিয়ে বুধবার (১২ অক্টোবর) রাতে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে নতুন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন আসিফ। সেখানে জানিছেন বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া থেকে শুরু করে অনেকে কথা। আসিফের স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধ’রা হলো-

চব্বিশ সেপ্টেম্বর ছে’লের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাই বেয়াই সাহেবের বাসায়। জীবনে প্রথম এই ধরনের অ’ভিজ্ঞতা, শুরু থেকেই মনে খুঁতখুঁত যদি না করে দেয় তখন কি হবে! নিজেসহ আশেপাশের বেশীরভাগ বিয়েই হয়েছে হয় ভাগিয়ে এনে না হয় ভেগে, প্রে’মের পথে কোন প্রতিবন্ধকতা অ্যালাউ করিনি। ছে’লের ব্যপারে এসে স্নায়ুচাপে পরে গেছি।

বেগম সালমা আসিফ আমা’র ভিতরে ঘটতে থাকা এসব ইস্যুগুলো টের পান। আমি আর রুদ্র সুবোধ ছে’লের মত বসে আছি। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রণ ঈশিতার বিয়ের কথা আসতেই বেয়াই সাহেব বললেন- মনে মনে আম’রাও পজিটিভ আছি, নইলে কি আর বাসায় আসতে বলতাম আপনাদের! এই কথা শোনার সাথে সাথেই আমি পুরনো ফর্মে ফিরে গেলাম। কিছুক্ষনের মধ্যে পানসুপারির ডালা, কুমিল্লা মাতৃভান্ডারের রসমলাই আর এনগেজমেন্ট রিং হাজির। এসবে আর মনযোগ নেই, বেগমের ত্বড়িৎ পারফরমেন্সে মুগ্ধ।

আমি আছি ফিউচার প্ল্যান নিয়ে। এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে হতেই হবে, কাজে নেমে পড়লাম। নিজের চারভাইসহ বহু বিয়ে করানোর অ’ভিজ্ঞতা আমা’র। ছাব্বিশ তারিখ রাতে ভেন্যু হিসেবে অফিসার্স ক্লাব পাওয়া গেল। হাতে আছে মাত্র একশো বিশ ঘন্টা। কাউন্টডাউন স্টার্ট করে দিলাম, দিনরাত মিলিয়ে কাজ করলে একটা গর্জিয়াস অনুষ্ঠান সম্ভব।

আমা’র ছে’লের বিয়ে বলে কথা, সব্বাইকে অ্যাটাচড করতে হবে। কার্ড ছাপিয়ে দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার সুযোগ নেই এই ট্র্যাফিক জ্যামের স্বর্গরাজ্যে, এদিকে টাকাপয়সাও গোছাতে হবে। আজমীর বাবু ভাই, স্নেহের জনি আর বন্ধু নবীন মিলে মিশন ইম্পসিবল শুরু। যেখানেই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি সেখানেই সল্যুশন খুঁজে নিতে হচ্ছে।

দাওয়াতের বেলায় একটা চিন্তাই মা’থায় ছিল, আমা’র গানের ক্যারিয়ার আর জীবনের সাথে মিশে যাওয়া মানুষগুলো যেন বাদ না পরেন (কুমিল্লায় রিসেপশন বাকী’ আছে)। রণ’র সাথে রুদ্র’র একটা কোল্ডওয়ার চলছিলো, এনগেজমেন্ট হওয়ার সাথে সাথে দুই ভাই হয়ে গেল হরিহর আত্মা। রণ ভরসা পাচ্ছে ছোট ভাইয়ের সিদ্ধান্তে, রুদ্র ছায়ার মত ভাইয়ের পাশে থেকে শেষ করেছে পুরো ইভেন্ট। বেগম তার চিরাচরিত আশা হতাশার স্ক্রিপ্টেই ছিলেন, তবে শেষ পর্যন্ত তার ক্লান্তিহীন দৌড়ঝাঁপ সফল হয়েছে।

ডিজিটাল কার্ডে দাওয়াত দিলে কিভাবে নেবেন সবাই সেটা একটা চিন্তার বিষয় ছিল। আমাকে ইন্ডাষ্ট্রীর মানুষ কেমন ভালবাসে সেটা জানারও প্রয়োজন ছিল। চ’মক দিলেন শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা আপা। তিনি আমাকে ফোন করেই বসলেন, বললেন আসবেন। এই ফোন থেকেই কাজে এলো দ্বিগুন গতি।

কনকচাঁপা আপা শুভ্র’দা এসেছেন আ’মেরিকা থেকে। খুরশীদ আলম ভাই, বিশ্ব’দাসহ কর্নিয়া কি’শোর কনা লিজা কোনাল’রাসহ সব আর্টিস্ট এই কার্ডেই দাওয়াতে এসেছেন। দেশসেরা গীতকবি সুরকার কম্পোজারদের পদচারনায় মুখরিত ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। বন্ধু ডলির করো’না, লীডার আঁখী মে’য়েদের সাথে মালয়েশিয়া। অনেকই অ’সুস্থ্য আর দেশের বাইরে। তবুও সংক্ষিপ্ত সময়ে সাংবাদিক খেলোয়াড় ফিল্ম নাট’ক আর গানের মানুষেরা আমা’র ডাকে সাড়া দিয়েছেন স্বতস্ফূর্তভাবে, আমি কৃতজ্ঞ ধন্য অ’ভিভূত।

অনেকেই দাওয়াত পাননি, সেজন্য ক্ষমাপ্রার্থী। অনেকে আসেননি আবার, সেটাও মনে রেখেছি। ইন্ডাষ্ট্রীতে নিজের শেকড়ের গভীরতা কতদূর প্রোথিত কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছি। আলহাম’দুলিল্লাহ। শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা আপা পুরো পরিবেশটাকেই রঙ্গীন করে দিলেন… ভালবাসা অবিরাম…