কনস্টেবল মাহমুদুলকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন এডিসি লাবণী

| আপডেট :  ২১ জুলাই ২০২২, ০৭:৪৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২১ জুলাই ২০২২, ০৭:৪৩ অপরাহ্ণ

মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) খন্দকার লাবণী (৪০) এবং তার সাবেক দেহরক্ষী কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের (২৩) আত্মহ’’ত্যার ঘটনায় র’হস্যের সৃষ্টি হয়েছে। দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করছেন অনেকে। তবে নি’হত মাহমুদুল হাসানের পরিবার ও স্বজনরা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে ভাইবোনের মতো সম্পর্ক ছিল। পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী কনস্টেবল মাহমুদুলকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন।

নি’হত মাহমুদুল হাসান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজে’লার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের পিপুলবাড়িয়া গ্রামের এজাজুল হকের ছেলে। কুষ্টিয়া শহরের দাদাপুর রোডের নতুন কমলাপুর এলাকায় শুভেচ্ছা ভিলা নামে একটি দোতলা বাড়ি রয়েছে তাদের। প্রায় তিন বছর আগে মাহমুদুল পুলিশে যোগদান করেন।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাগুরা পুলিশ লাইন্সের পুলিশ ব্যারাকের চার তলা ভবনের ছাদে নিজের শর্টগানের গু’লিতে আত্মহ’’ত্যা করেন কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান।

অনেকেই মনে করছেন দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। কারণ নি’হত পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান মাগুরায় আসার আগে এডিসি খন্দকার লাবণীর দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মাত্র দেড় মাস আগে মাগুরায় বদলি হয়ে আসেন তিনি।

নি’হত কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বোন সুমাইরা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা লাবণীর সঙ্গে আমার ভাইয়ের খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে ভাইবোনের মতো সম্পর্ক ছিল। লাবণী আমার ভাইকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন। আমার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কখনো কোনো দিন কারো সঙ্গে খা’রাপ ব্যবহার করেননি। লাবণীর সঙ্গে আমার ভাইয়ের অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল না।

মাহমুদুলের স্বজনরা বলেন, ঈদের আগের দিন বাড়িতে এসেছিল মাহমুদুল। ঈদের পরদিন সে মাগুরায় চলে যায়। কেন আত্মহ’’ত্যা করল বুঝতে পারছি না। শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিল মাহমুদুল। তার মৃ’ত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মাহমুদুলের বাবা এজাজুল হকও পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকরি করেন। তিনি চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত।

এডিসি খন্দকার লাবণী মাগুরার শ্রীপুর উপজে’লার ৬নং কাদিরপাড়া ইউনিয়নের বরালিদহ গ্রামের খন্দকার শফিকুল আজমের মেয়ে। তার স্বামী তারেক আবদুল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক। তাদের সংসারে দুটি কন্যা স’ন্তান রয়েছে। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে গতকাল বুধবার (২০ জুলাই) রাতে ফাঁ’স নিয়ে আত্মহ’’ত্যা করেন তিনি।

নি’হত লাবণীর বাবা খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লাবণীর সঙ্গে তার স্বামীর ক’লহ চলে আসছিল। সংসারে আমার মেয়ে সুখী ছিল না। মূলত সাংসারিক বিভিন্ন বি’ষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে লাবণীর বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণেই আমার মেয়ে আত্মহ’’ত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অ’পরাধ ও প্রশাসন কামরুল হাসান বলেন, দুটি আত্মহ’’ত্যার ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না সে বি’ষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনা দুটি ভিন্ন ভিন্ন বলেই আমাদের কাছে মনে হচ্ছে।

শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন স’রকার বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবণীর আত্মহ’’ত্যার বি’ষয়ে এখনো কোনো পরিষ্কার কারণ আমরা জানতে পারিনি।