একইসঙ্গে মাছ কাটেন অর্ধশত নারী, প্রতিদিন আয় ২৫ হাজার

| আপডেট :  ৬ জানুয়ারি ২০২১, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ জানুয়ারি ২০২১, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

মামা, এদিকে আনেন’, ‘কাইট্টা দিই, তাড়াতাড়ি হবে’—মাছ বাজারে ঢুকে এমন হাঁকডাক শোনা খুবই স্বাভাবিক। তবে এসব ডাক যদি অর্ধশত নারীর মুখ থেকে একসঙ্গে উচ্চারিত হয়, তাহলে ব্যাপারটা কিছুটা ভিন্ন চোখে দেখা যায়।

নাটোরের নিচা বাজারে প্রবেশ করলেই এসব নারীদের দেখা মেলে। বর্তমানে অর্ধশত নারী বাজারে মাছ কে’টে জীবন চালাচ্ছেন। সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতা।

জুলেখা আক্তার প্রথম এ বাজারে মাছ কাটতেন। পাঁচ বছর আগে স্বামী মা’রা যাওয়ায় অসহায় অবস্থায় ভাগ্য পরিবর্তনে আশায় বটি নিয়ে শুরু করেন মাছ কাটতে। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বরং দিন দিন কাজের চাপ বাড়তে থাকে।

কাজের চাপ বেশি হওয়ায় আরো অসহায় নারীকে এই পেশায় নিয়ে আসেন জুলেখা। যাদেরকে নিজে এসেছেন তারাও একে অ’পরের প্রতি হাত বাড়িয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

জুলেখা আক্তার বলেন, আমি যখন প্রথম মাছ কাটতে আসি, তখন আমা’র খুব কাজের চাপ ছিল। এরপর আমি গরীব ও কর্মহীন নারীদের এ কাজে আনতে থাকি। এখন প্রায় ৫০ জনের মতো মাছ কাটি। আম’রা সবাই মিলেমিশে এ কাজটা করি।

প্রতিকেজি মাছ কে’টে ২০ থেকে ৩০ টাকা পান তারা। এভাবে প্রতিদিন আয় করেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। জুলেখা আক্তারের মতে, তারা সবাই মিলে অন্তত ২৫ হাজার টাকা আয় করেন প্রতিদিন। এ টাকা দিয়েই কারো কারো সংসার চলছে। অনেকে আবার স্বামীর আয়ের সঙ্গে এ টাকা যোগ করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাচ্ছেন।

মাছ কা’টার এই উদ্যোগে অসহায় নারীদের পাশাপাশি উপকৃত হচ্ছেন বাজারে মাছ কিনতে আসা ক্রেতারাও। হাবিব নামের এক ক্রেতা বলেন, মাছ কেনার পর তাদের দিয়ে কা’টাই। এতে তারাও কিছু টাকা পেলো, বাসায়ও সময় অ’পচয় কম হয়।

প্রতিদিন সকাল হলেই এসব নারীরা দা-বটি নিয়ে হাজির হয়ে যান বাজারে। তাদের মধ্যে কোনো কাড়াকাড়ি নেই। যে যতই আয় করুক, সবাই দিন শেষে হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন।