ভয়াবহ বন্যার কবলে সুনামগঞ্জ, সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

| আপডেট :  ১৭ জুন ২০২২, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৭ জুন ২০২২, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

বাংলা একাত্তর ডেস্কঃ টানা ভারী বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে ডুবেছে সুনামগঞ্জ। বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতেরও যেন বিরাম নেই। সময়ের সাথে সাথে বন্যা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে বানের জলের উচ্চতা। বাসাবাড়ির ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে আগেই। ইট, কাঠসহ নানা জিনিস ব্যবহার করে অনেকেই তাদের ঘরে শোবার খাটটি উঁচু করার চেষ্টা করেছেন, সেই খাটও তলিয়ে গেছে পানিতে।

বন্যার পানির সঙ্গে ঘরে ঢুকে পড়ছে মাছ, বিষাক্ত পোকামাকড় ও সাপ। অন্যদিকে দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে অন্ধকার রাতে বিভীষিকাময় সময় পার করেছেন সুনামগঞ্জের মানুষ।

পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় সারাদেশের সাথে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাত থেকে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-দিঘলী এলাকায় সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এতে করে এই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

সুনামগঞ্জে প্রথম দফা বন্যা হয় গত ১৩ মে। এই বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের বন্যার কবলে পড়েছে সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা। দ্বিতীয় দফা বন্যায় এখন শহরের সড়কে চলছে নৌকা। বিদ্যুৎ না থাকায় চার্জের অভাবে মুঠোফোনও বন্ধ হয়ে আছে অনেকের। কারো কারো ঘরে খাবার নেই, রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় আগুন জ্বলছে না চুলায়। সবমিলিয়ে বানের জলে দুঃস্বপ্নের রাত কাটিয়েছেন জেলাবাসী। যে কয়টি ঘরে পানি ওঠা বাকি ছিল, সেগুলোও এখন পানিতে থইথই।

সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামসুদ্দোহা গণমাধ্যমকে বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার বেশকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। রাত ১০টায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের মেঘালয়, আসাম, চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত বন্ধ না হলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হবে।

এ নিয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-দিঘলী এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সড়ক প্লাবিত হওয়ায় সেখান দিয়ে কোনও দূরপাল্লার গাড়ি আপাতত যেতে পারবে না। তবে সময় যত বাড়ছে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। আমরা পানিবন্দি মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছি এবং তাদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।