ডলার চলে যাওয়া ঠেকাতে যেসব বিলাসবহুল পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত

| আপডেট :  ২৮ মে ২০২২, ০২:৪৪ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ মে ২০২২, ০২:৪৪ অপরাহ্ণ

রাজস্ব আহরণের জন্যই মূলত পণ্যে শুল্ক বাড়ায় এনবিআর। কিন্তু এবার পেক্ষাপট ভিন্ন। রাজস্ব নয়, ডলার চলে যাওয়া ঠেকাতেই নেয়া হলো শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। মোট ১৩৫টি পণ্যে বসানো হয়েছে বাড়তি কর। আগামী কয়েকদিন পরই ঘোষণা করা হবে নতুন অর্থবছরের বাজেট। কিন্তু তার আগেই বিলাসবহুল পণ্য এবং বিদেশি ফলে বসলো নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক। বিশ্লেষকরা বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়লেও অন্য কোনো বিকল্প ছিল না।

লিচু, তরমুজ, পেঁপেসহ দেশীয় নানান ফলে সয়লাব বাজার। এখন ফলের মৌসুম হওয়ায় বাজারে দেখা মিলছে নানান ধরনের দেশীয় ফল। আমদানিনির্ভর ফলের বাজারও বেশ বড়। বিশেষ করে ক্রেতার চাহিদায় রয়েছে মাল্টা, বিভিন্ন ধরনের আপেল, নাসপাতি, আনার কিম্বা আঙ্গুর। বিদেশি এসব ফল আমদানির ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে শুল্ক। এরই মধ্যে বাড়তির দিকে ফলের দাম। অতিরিক্ত কর কার্যকরের পর দাম বাড়বে আরও। শুধু ফলই নয়। ১৩৫টি বিলাসবহুল পণ্যে শূন্য এবং ৩ ভাগের পরিবর্তে ২০ ভাগ শুল্কারোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। যা গত ২৩ মে থেকেই কার্যকর করেছে এনবিআর। বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় করাই এর উদ্দেশ্য।

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে জনগণকে। এক্ষেত্রে তিন পর্যায়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক। রড এবং সিমেন্ট আমদানিতেও বসানো হয়েছে শুল্ক। এতে বাড়বে নির্মাণ ব্যয়। এছাড়া আসবাবপত্র এবং শিল্প সংক্রান্ত কাঁচামাল আমদানিতেও বসেছে ২০ ভাগ শুল্ক। সাজগোজ করতে বিদেশি প্রসাধনীতে যাদের আগ্রহ ছিল তাদের জন্যও আছে দুঃসংবাদ। আমদানিতে বসেছে ২০ ভাগ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক। চিকিৎসা সামগ্রী এবং চাল আমদানিও নিরুৎসাহিত করতে চায় সরকার।

এ নিয়ে অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমাদের আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সেজন্য ডলারের চাহিদাও বেড়েছে। করোনার সময় রেমিট্যান্সে আমরা যে বৃদ্ধি দেখেছি, ওই সময় প্রায় ৬০০ কোটি টাকা এক বছরে বেড়েছিল। সেটি যে কারণে বেড়েছিল, করোনা পরবর্তী সময়ে তা আর নেই। ফলে যোগান ও চাহিদার মধ্যে একটি বড় ফারাক তৈরি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে পণ্যের দাম। ফলে জ্বালানি তেলসহ নানান পণ্য কিনতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। তবে চাহিদার তুলনায় ডলারের যোগান না থাকায় বৈদেশিক লেনদেনে তৈরী হয়েছে ঘাটতি। শুধু এনবিআরই নয়, বিলাসবহুল পণ্য নিরুৎসাহিত এবং বিদেশ ভ্রমণও নিয়ন্ত্রণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়।