মায়ের দেয়া ৯৪৮ টাকায় ব্যবসা শুরু করে বর্তমানে কোটি টাকার মালিক

| আপডেট :  ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ব্যবসা শুরু করেছিলেন মায়ের দেয়া ৯৪৮ টাকায়। প্রথমে শুধুমাত্র লাকড়ির (জ্বালানী কাঠ) ব্যবসা করতেন। বেশ ভালই লাভ করছিলেন এই ব্যবসায়। ব্যবসা প্রসারেরও চিন্তা করছিলাম। কিন্তু এক সময় তার নজরে আসে ধান ঝাড়া মেশিন। এরপর নিজেই ধানঝাড়া মেশিন তৈরি করতে শুরু করেন। আর সেই ব্যবসাতেই বর্তমানে কোটিপতি আলহাজ্ব লুৎফর রহমান (৬৫)।

লুৎফর রহমান বলেন, “আশির দশকে কুমিল্লা থেকে ধান ঝাড়া মেশিন কালীগঞ্জে আসতো। কষ্ট ও সময় সাশ্রয়ী হওয়ায় মেশিনগুলো কৃষকের কাছে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে এবং দিনদিন মেশিনগুলোর চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। দীর্ঘদিন কাঠ নিয়ে কাজ করার সূত্রে বুঝতে পারি এ মেশিনতো আমরাও তৈরী করতে পারি। সেই চিন্তা থেকেই ১৯৮৭ সালে নিজেই ধানঝাড়া মেশিন তৈরীর সিদ্ধান্ত নেই। এমন চিন্তা থেকেই ৩০ বছর পূর্বে কালীগঞ্জে প্রথম ধান ঝাড়া মেশিন তৈরী করা শুরু করেছিলাম। গড়ে তুলেছি দিশারী কাঠগোলা এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ নামের ধান ঝাড়া মেশিন তৈরীর কারখানা। এই কারখানায় উৎপাদিত মেশিন রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাচোল, সাতক্ষীরা, নড়াইল, পাংশা, ফরিদপুর, বোয়ালমারী, যশোর, ফকিরহাট, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে।”

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিশারী কাঠগোলা এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের ধান ঝাড়া মেশিন তৈরীর কারখানাটিতে বর্তমানে লেদের শ্রমিক, কাঠের শ্রমিকসহ কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখা তার ব্যবসায় ৫৫ লাখ টাকার ঋণ সহায়তা দিয়েছেন।

মেশিনে ব্যবহৃত উপাদানগুলো সংগ্রহ সম্পর্কে লুৎফর রহমান বলেন, মেশিনে ব্যবহৃত কিছু যন্ত্রাংশ কুমিল্লা বিসিক থেকে আনা হয় এবং কাঠ স্থানীয় ভাবে সংগ্রহ করা হয়। লোহার পাত ও রড দিয়ে ধানঝাড়া মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কারখানাতেই তৈরী করা হয়।

কারখানার নিয়মিত শ্রমিক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ধানঝাড়া মেশিনের কাঠের পাঠাতনে তারের কাঁটা বসিয়ে দৈনিক ৭’শ থেকে ৮’শ টাকা আয় করেন। শ্রমিক আব্বাস আলী বিশ্বাস বলেন, তিনি মেশিন ফিটিংস এর কাজ করে দৈনিক ৭-৮’শ টাকা আয় করেন।

লাভ-ক্ষতির প্রসঙ্গ আসতেই উদ্যোক্তা লুৎফর রহমান বলেন, এ মৌসুমে কারখানা থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মেশিন বিক্রি করা হয়েছে। প্রথম দিকে একটি মেশিন ১৫০০-২০০০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হতো। জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ওই একই মেশিন সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।