ঈদের সিনেমায় গ্রুপিংয়ের কালো ছায়া 

| আপডেট :  ১২ মে ২০২২, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১২ মে ২০২২, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বিনোদন: বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালী ঐতিহ্য হারিয়েছে। সারাদেশে ১২০০ সিনেমা হল থেকে কমতে কমতে নেমেছে ৫০ এর কোটায়। মহামারী করোনায় গত দুই বছরে সেখানেও নেমেছে ধস।

করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে নতুন সিনেমা। তবে সিনেমাগুলো দর্শক টানতে ব্যর্থ। তবে এবার বাংলা চলচ্চিত্রে পুনরায় জোয়ার আনতে আশা জাগিয়েছে ঈদের সিনেমাগুলো। তবে সংশয় থেকেই যায়।

স্বাভাবিকভাবে ঈদের সিনেমা মুক্তি নিয়ে মাসখানেক আগেই তোড়জোড় শুরু হয়। এবারো হয়েছে, তবে সেটা ছিল সুস্থ তোড়জোড়। অন্যান্য সময় ঈদের সিনেমা বেশি প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া নিয়ে সিনেমার প্রযোজকরা বুকিং এজেন্টদের সঙ্গে নানা আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতা করে, তা নিয়ে দেনদরবার করার পাশাপশি পেশীশক্তি প্রদর্শনও হয়।প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেয়ার জন্য হল মালিকদের রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় ক্যাডারদের দিয়ে চাপ সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায় বিভিন্ন সময়। তবে এবার এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। এটা চলচ্চিত্রের জন্য অবশ্যই ভলো দিক।

এবারের সিনেমা মুক্তির পর পাল্টে গেল সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহের চিত্র। দেশজুড়ে ১৬৩টি প্রেক্ষাগৃহে এবার মুক্তি পেয়েছে চারটি সিনেমা। ঈদ উপলক্ষে এবার নতুন করে ৯৩টি প্রেক্ষাগৃহ খুলেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে শাকিব খান অভিনীত ‘বিদ্রোহী’ মুক্তি পায় ১০০টি প্রেক্ষাগৃহে। এই নায়কের অন্য সিনেমা ‘গলুই’ মুক্তি পায় ২৮টিতে। সিয়াম আহমেদ-পূজা চেরি জুটির তৃতীয় সিনেমা ‘শান’ দেখা যাচ্ছে ৩৪টি প্রেক্ষাগৃহে। এ ছাড়া ‘বড্ড ভালোবাসি’ নামের সিনেমাটি মুক্তি পায় ব্লকবাস্টারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো দেখতে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ঈদের দিন বৃষ্টির কারণে প্রথম শোতে তেমন একটা দর্শক না এলেও পরের শোগুলোতে ছিল দর্শকের সরব উপস্থিতি। ক্রমেই দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ফিরছেন। বেশ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে দেখা গেছে সর্বাধিক দর্শক সমাগম। ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে একাধিক শো ছিল হাউস ফুল।

অনেকের ধারণা ছিল, সিনেমা যেমনই হোক দর্শক আর ঘর থেকে বেরিয়ে প্রেক্ষাগৃহে যাবে না। কিন্তু ঈদের সিনেমাগুলো প্রমাণ করেছে, সে ধারণা সঠিক নয়। ঈদের সিনেমা দিয়ে জমজমাট সিনেমাপাড়া। এই সিনেমাগুলোর মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে দর্শক ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতারা। এটাই এবারের ঈদে নির্মাতাদের বড় অর্জন।

প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘গলুই’, ‘শান’, ‘বিদ্রোহী’ তিনটি সিনেমাই ভালো ব্যবসা করছে। এ সিনেমাগুলোর মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর দর্শক আবারও প্রেক্ষাগৃহে আসছেন। এটি বাংলা সিনেমার জন্য ইতিবাচক। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি খুব শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে।’

সিনেমায় দর্শকদের আগ্রহ নিয়ে নেটিজেনরা ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সিনেমা হলেও পাশাপাশি অডিটোরিয়ামে প্রদর্শন করছিল ‘গলুই’। পাঁচদিনের মাথায় স্থানীয় প্রশাসন তা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ ও ক্ষোভ ঝাড়ে চচ্চিত্রের অনেকেই। তবে এখন প্রদর্শনের বাধা নেই বলে জানা যায়। এসব বিষয় নিয়েও চলচ্চিত্রে সিনেমা পাড়ায় গ্রুপিং। কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন এটাও কারো ইশারায় হয়েছে।