পরিবারকে কষ্ট দিয়ে বিয়ের কথা ভাবিনি: রোবেনা জুঁই

| আপডেট :  ১০ মে ২০২২, ০৪:১৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১০ মে ২০২২, ০৪:১৮ অপরাহ্ণ

ছোট পর্দার তারকা দম্পতি মোশাররফ করিম ও রোবেনা রেজা জুঁই। ২০০৪ সালের ৭ অক্টোবর ভালোবেসে বিয়ে করেন তারা। এই দম্পতির সংসারে রায়ান নামে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। মোশাররফ করিম শুধু একজন দুর্দান্ত অভিনেতাই নন, একাধারে একজন কবি, চিত্রনাট্যকার ও গীতিকার। তবে সব ছাপিয়ে তার অভিনেতা পরিচয়ই সামনে চলে আসে। তার অভিনয় দেখে দর্শক কখনো হেসে গড়াগড়ি খায়, আবার কখনো চোখের কোণ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রুকনা। নিত্য-নতুন চরিত্রে অভিনয় করে জয় করছেন মানুষের মন। মোশাররফ করিম যতটা বড় অভিনেতা ততোটাই তিনি সাদামাটা।

অন্যদিকে, অভিনেত্রী রোবেনা রেজা জুঁই সাবলীল অভিনয় দিয়ে এরই মধ্যে দর্শকের মাঝে আলাদা একটা অবস্থান করে নিয়েছেন। বর্তমানে তার অভিনয় ও সংসার ঘিরেই সকল ব্যস্ততা।গতকাল ৯ মে ছিল এই তারকা দম্পতির বিশেষ দিন। জন্মদিন, বিয়ে—এমন বিশেষ দিনগুলোর সঙ্গে ৯ মে দিনটির কথা কখনো ভোলেন না তারা। প্রায় দেড় যুগ আগে দিনটির জন্য কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল এই তরুণ প্রেমিক জুটিকে। যে কারণে বিয়ের দিনের চেয়েও তাঁদের কাছে বহুগুণ বিশেষ এই দিন। কী ঘটেছিল ১৮ বছর আগে?

সেই সময়ে তরুণ প্রেমিক-প্রেমিকা মোশাররফ করিম ও জুঁইয়ের মাথায় ভর করেছিল পাহাড়সমান দুশ্চিন্তা। গোপনে তাঁদের প্রেম হয়েছিল। কিন্তু গোপনে তাঁরা বিয়ের কথা ভাবেননি। তাঁরা পরিবারকে জানিয়েছিলেন প্রেমের কথা। তখন যেন সেই সিনেমার মতো চিরচেনা দৃশ্যে। এই বিয়েতে পরিবারের মত নেই। তার যৌক্তিক কারণও ছিল বলে মনে করেন এই দম্পতি। তখন দুজনেরই পরিচয় দেওয়ার মতো তেমন কিছু ছিল না। মোশাররফ করিম সবে অভিনয়ে কিছুটা পরিচিতি পাচ্ছেন। পড়াশোনা শেষ করেছেন জুঁই।

বিয়ে নিয়ে সেই দিনগুলোর কথা জানতে চাইলে মোশাররফ করিম বলেন, ‘তখন কী ভাবব? আসলে আমি কিছুই ভাবিনি। শুধু এটাই ভাবছিলাম, আমাদের বিয়েটা হয়ে গেলে ভালো হয়। পারিবারিকভাবে বিষয়টা কোন দিকে যায়, সেটাই দেখছিলাম। সময় গেলেও পরে সবাই রাজি হয়েছিল। পরিবারগুলো আমাদের সম্পর্ক মেনে নিল। আমরা বিয়ে করলাম। জীবন চলে যাচ্ছে। এসব নিয়ে আমি কখনোই পেছনে তাকাই না। তখনো দারুণ সময় গেছে, এখনো দারুণ সময় যাচ্ছে। সামনেও আমাদের দারুণ সময় যাবে।’ প্রেম করার সেই দিনগুলোর সময়ে আপনাদের মধ্যে কী ধরনের উপহার লেনদেন হতো? সরাসরি মোশাররফ করিম বলেন, ‘আমি জুঁইকে কখনোই তেমন কোনো উপহার দিইনি। ওকে গিফট করতাম না। এর কারণ, আমি তেমন গোছানো ছিলাম না। কিন্তু জুঁই আমাকে অনেক উপহার দিয়েছে। তার দেওয়া আংটি আমি এখনো যত্ন করে রেখেছি।’

সিনেমায় পালিয়ে বিয়ে করা দেখলেও বাস্তবে কখনোই পালিয়ে বা বাবা-মাকে কষ্ট দিয়ে কখনোই বিয়ের কথা চিন্তা করেননি রোবেনা জুঁই। তিনি বলেন, ‘আজকের দিনেই আমাদের বিয়ের জন্য পরিবার থেকে স্বীকৃতি পাই। এর আগে পরিবারের লোকজন বিয়েতে রাজি ছিল না। বিশাল একটা বাধা ছিল। সব দিক থেকে চাপ ছিল। বিয়ে নিয়ে কী হয়, এই নিয়ে অনেক চিন্তা হতো। কী হয়, এসব ভেবে খারাপ লাগা কাজ করত। মানসিকভাবে স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। পরে একসময় পরিবারের লোকজন রাজি হলো। তখন দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়লাম। কিন্তু আমাদের দুজনেরই আত্মবিশ্বাস ছিল পরিবারের লোকদের জানালে তারা মেনে নেবেই। এ জন্য আমরা অপেক্ষা করতে রাজি ছিলাম; কিন্তু পরিবারের অমতে, তাদের কষ্ট দিয়ে পালিয়ে বিয়ের কথা ভাবিনি।’

বিশেষ এই দিনে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ঢাকার বাইরে রয়েছেন এই তারকা দম্পতি। বলতে গেলে এটাই বিশেষ। একসঙ্গে কাটানো দীর্ঘ এই সময় কেমন ছিল? এই প্রশ্নে রোবেনা জুঁই বলেন, ‘দুঃখ-বেদনা-অভিমান-ঝগড়া, সবকিছুই থাকে। কিন্তু সময়টা ভালোভাবে উপভোগ করাই আসল। দুইটা মানুষের সব সময় এক রকম যায় না। একসঙ্গে চলতে গেলে ৫টা বিষয় মিলবে, বাকি ১০টা বিষয় মিলবে না, এটাই স্বাভাবিক। তারপরও যার যার জায়গা থেকে শ্রদ্ধা-সম্মান করে একসঙ্গে থাকাটাই জীবন মনে হয়। তা ছাড়া জীবন দুর্বিষহ আমার কাছে। সেই জায়গা থেকে আমরা সফল। সব সময় চেষ্টা করেছি ভালো লাগার মুহূর্ত তৈরি করতে।’