নায়িকা বানাতে রাজনৈতিক নেতার কাছে মেয়ে নিয়ে যান জেনিফার

| আপডেট :  ২৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:৩০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:৩০ অপরাহ্ণ

দুইজনই ঢাকাই সিনেমার নতুন প্রযোজক। একজন মো. ইকবাল অন্যজন তাহেরা ফেরদৌস জেনিফার। সাবেক দম্পতি তারা। বিচ্ছেদ হয়েছে তিন বছর । এবার একে অপরের বি’রুদ্ধে থানায় পাল্টাপাল্টি অ’ভিযোগ করলেন তারা। সাবেক স্বামী চলচ্চিত্র প্রযোজক মোহাম্মদ ইকবালের বি’রুদ্ধে গত মঙ্গলবার হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন প্রযোজক তাহেরা ফেরদৌস জেনিফার। সেখানে জেনিফার জানান, প্রথম অ’ভিযোগ, সাবেক স্ত্রীকে জো’রপূর্বক বিয়ে করতে চাওয়া এবং ইন্টারনেটে অ’শ্লীল ভিডিও বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার হু’মকি দেয়া। পরদিন বুধবার রাতে জেনিফারের নামে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন ইকবাল। সেখানে সাবেক স্ত্রীর বি’রুদ্ধে চলচ্চিত্রের সুনাম ন’ষ্টের অ’ভিযোগ ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি।

উপস্থাপক, প্রযোজক, ব্যবসায়ী তাহেরা ফেরদৌস জেনিফারের সঙ্গে তিন বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়েছে চলচ্চিত্র প্রযোজক মো. ইকবালের। বিয়ের বছর খানেক পর বনিবনা না হওয়ায় একপর্যায়ে জেনিফার নিজেই আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দুজনের ছাড়াছাড়ি হওয়ার আগে সাবেক স্বামী ইকবালের বি’রুদ্ধে ঢাকার কলাবাগান থানায় নারী নি’র্যাতন মা’মলাও দা’য়ের করা হয়। মা’মলা দা’য়েরের পরপরই তারা দুজন আলাদা হয়ে যান। কিন্তু ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরও মো. ইকবাল তার পিছু ছাড়েননি বলে মন্তব্য করেন জেনিফার। নানা সময়ে ভ’য়ভীতি দেখিয়ে আসছেন।

সাধারণ ডায়েরিতে জেনিফার উল্লেখ করেন, ইকবালের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তিনি নিজের মতো করেই থাকেন। ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজের জীবিকা নির্বাহ করছেন। তালাকের পরও সাবেক স্বামী মো. ইকবালের বি’রুদ্ধে ন্যায্য দাবি আদা’য়ের জন্য আ’দালতে মা’মলা চলমান রাখেন। এই কারণে বিবা’দী তাকে নানা সময় নানাভাবে হু’মকি ও ভ’য়ভীতি প্রদর্শন করতেন। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জেনিফারের নামে অ’পপ্রচার চালাতে থাকেন বলে জেনিফারের অ’ভিযোগ।

সাধারণ ডায়েরিতে ইকবাল উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে প্রেম করে বিয়ে করেন তারা। সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই উচ্ছৃঙ্খলতা, অ’নৈতিক কার্যকলাপ ও বে’পরোয়া জীবনযাপন শুরু করেন জেনিফার। এই কারণে বনিবনা হচ্ছিল না বলে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে জেনিফার তার বি’রুদ্ধে মা’মলা, হ’য়রানি ও হু’মকি-ধমকি দিচ্ছিলেন। চলচ্চিত্র জগতে ভাবমূর্তি ন’ষ্ট করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে থাকেন সাবেক স্ত্রী জেনিফার। এমনকি তার সিনেমার কাজে আগ্রহী শিল্পীদের বিভিন্ন ধরনের কুপরামর্শ দিতে থাকেন।

সাধারণ ডায়েরিতে ইকবাল আরো উল্লেখ করেন, অভিনয়ে আগ্রহী তাসনিয়া নামের এক ত’রুণীকে তার ছবিতে কাজ করতে বারণ করেছেন জেনিফার। এমনকি তাসনিয়াকে সিনেমার নায়িকা বানানোর আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার কাছে নিয়ে যান তিনি।

বিবাহবিচ্ছেদের পর থেকে ইকবালের নামে এ পর্যন্ত তিনটি মা’মলা করেছেন জেনিফার, যেগুলোর ত’দন্ত চলছে। ইকবালের দাবি, মা’মলা তুলে নেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময়ে জেনিফার সাবেক স্বামীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেছেন। সাধারণ ডায়েরির এক জায়গায় ইকবাল উল্লেখ করেন, জেনিফারকে ২০ লাখ টাকা দিলে তিনি সব মা’মলা তুলে নেবেন, সংগীত পরিচালক ইমন সাহার মাধ্যমে মো. ইকবালকে এ প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

এসব অ’ভিযোগ অস্বীকার করে জেনিফার বলেন, ‘তিনি আমাকে বিয়ে করেছেন প্র’তারণা করে। ধরা পড়ার পর অবস্থা বেগতিক দেখে বিচ্ছেদ নিয়েছেন।’

চলচ্চিত্রে ইকবালের ভাবমূর্তি ন’ষ্ট ও জীবনের হু’মকির অ’ভিযোগের বি’ষয়ে জেনিফার বলেন, ‘এর কোনো সত্যতা নেই। বরং আমার ছবির কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে তিনিই আমার পেছনে লেগেছেন। নানাভাবে আমাকে হ’য়রানি, উসকানিমূলক কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন। আমি জি’ডিতে সব কাহিনি উল্লেখ করেছি। বি’ষয়টির সাক্ষীও আছেন আমার ছবির পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক ও ব্যবস্থাপক মিনহাজ।’

মা’মলা তুলে নেওয়ার জন্য সংগীত পরিচালক ইমন সাহার মাধ্যমে মো. ইকবালের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকার প্রস্তাবের বি’ষয়টিও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জেনিফার। তিনি বলেন, ‘ইমন সাহা আমার ছবির মিউজিকের কাজ করছেন। তার সঙ্গে আমার দেখাও হয়নি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। শুধু ছবির গানের বি’ষয়ে দুই–এক দিন কথা হয়েছে।’

জেনিফারের ভাষ্য অনুযায়ী তার ছবির পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক ও ইউনিটের ব্যবস্থাপক মিনহাজের সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে তাদের দুজনের ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়।

জেনিফার ফেরদৌস স’রকারি অনুদানে ‘আশীর্বাদ’ চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন মাহিয়া মাহি, জিয়াউল রোশান প্রমুখ। ছবির সংগীত পরিচালনা করছেন ইমন সাহা।