শুট করেছে মুছা ও সালেহ পর্যবেক্ষণ করে ফারুক অস্ত্র দেয় কাইল্যা

| আপডেট :  ২৭ মার্চ ২০২২, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৭ মার্চ ২০২২, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ণ

কি’লিং মিশনে ছিল তিনজন। এর মধ্যে মুছা ও সালেহ সরাসরি টিপুকে শুট করে, আর ওমর ফারুক ওরফে কানা ফারুক দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। তাদেরকে অ’স্ত্র সরবরাহ করে কাইল্যা পলা’শ। নেপথ্যে আরো অনেকেই আছে। তবে যাদের নাম প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে তাদের অন্যতম হলো- ২০১৩ সালে রাজধানীর গুলশানে দু’র্বৃত্তদের গু’লিতে নি’হত তৎকালীন মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কীর ড্রাইভার সাগর এবং মহানগর আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সারির এক নেতা ও এক কাউন্সিলরের নাম।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু দু’র্বৃত্তদের গু’লিতে নি’হত হন। এ সময় দু’র্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গু’লিতে প্রীতি নামের এক কলেজছাত্রীও নি’হত হন। এই ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারহা’না ইসলাম ডলি শাহজাহানপুর থানায় গত শুক্রবার হ’’ত্যা মা’মলা দা’য়ের করেছেন, যাতে কাউকে আ’সামি করা হয়নি।

তবে মা’মলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার স্বামী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। ১০ বছর ধরে বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয় কোন্দল ছিল। চার-পাঁচ দিন আগে অ’জ্ঞাতনামা দু’ষ্কৃতকারী আমার স্বামীকে মোবাইল ফোনে হ’’ত্যার হু’মকি দেয়। দলীয় কোন্দলের জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হ’’ত্যা করা হয়েছে। ফারহা’না ইসলাম ডলি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগের নেত্রী।

সূত্র জানায়, এই হ’’ত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল এলাকার আধিপত্য বিস্তার। ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণি-বিতানের সামনে খু’ন হন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কী। আলোচিত এ হ’’ত্যা মা’মলার অন্যতম আ’সামি ছিলেন তৎকালীন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নি’হত জাহিদুল ইসলাম টিপু। মিল্কী হ’’ত্যা মা’মলায় গ্রে’ফতার হয়ে দীর্ঘ দিন কা’রাগারে ছিলেন টিপু।

পরে এই মা’মলার চার্জশিট থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়; কিন্তু মা’মলা থেকে অব্যাহতি পেলেও প্রতিপক্ষের কূটকৌশল থেকে তার অব্যাহতি মেলেনি। মিল্কী হ’’ত্যার পর থেকে দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে তাকে রাখা হয়নি। দেয়া হয়নি কোনো পদপদবি। অথচ একসময় এরাই ছিলেন মতিঝিল আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি। মিল্কীকে হ’’ত্যা এবং টিপুকে দূরে রাখার পর এরই মধ্যে মতিঝিল এলাকায় আলাদা একটি সাম্রাজ্যের সৃষ্টি হয়। সেই সাম্রাজ্যে যোগ দেয় একসময়ে মিল্কীর ড্রাইভার মারুফ রেজা সাগর। সাগরের স্ত্রীর তথ্যেই কি’লাররা মিল্কীকে শনাক্ত করে খু’ন করেছিল। সাগর ওই সময় স’ন্দেহের তালিকায় থাকলেও পার পেয়ে যায়।

সূত্র জানায়, এই গ্রুপটিই হ’’ত্যা করেছিল মতিঝিলের যুবলীগ কর্মী বোচা বাবুকে। এই বোচা বাবু হ’’ত্যাকাণ্ডে মুছা এবং তার ভাই সালেহ সরাসরি জ’ড়িত। ওমর ফারুক ওরফে কানা ফারুক যে নিজেকে ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে আসছিল সে-ও এই বোচা বাবু হ’’ত্যায় আ’সামি হয়। অনেকেই এই হ’’ত্যা মা’মলা থেকে পার পেলেও ওমর ফারুক, মুছা ও সালেহর বি’রুদ্ধে চার্জশিট হয়।

শিগগির এই মা’মলার রায় ঘোষণা হবে বলে জানা গেছে। এরা বোচা বাবুর বাবা আবুল কালামকে নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছিল। এমনকি, ৩০ লাখ টাকা এবং দু’টি দোকানসহ আরো অনেক কিছু অফার করা হয় কালামকে; কিন্তু কালাম তার স’ন্তান হ’’ত্যার বিচার দাবিতে অনড়। বোচা বাবুর বাবা কালাম নি’হত জাহিদুল ইসলাম টিপুর সাথে থাকতেন। এমনকি প্রতি রাতে কালামকে তার বাসায় নামিয়ে দিয়ে নিজের বাসায় ফিরতেন টিপু।

এতে ওই কি’লারদের ধারণা হয়, টিপুই ওই মা’মলা থেকে তাদেরকে বের হতে দিচ্ছে না। যে কারণে তারা টিপুকে হ’’ত্যার পরিকল্পনা করে। আর তাতে সহযোগিতা করে টিপুর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। সূত্র মতে, ঘটনার রাতে মুছা ও সালেহ সরাসরি গু’লি করে। আর পাশেই দাঁড়িয়ে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কানা ফারুক। এই গ্রুপকে অ’স্ত্র সরবরাহ করে এজিবি কলোনির কাইল্যা পলা’শ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মুছা ও সালেহ আপন ভাই। তারা আন্ডারওয়ার্ল্ডে কি’লার হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে ভাড়ায় খু’ন করে এরা। রাজধানীর মুগদা এলাকায় মাঝে মাঝে তারা এসে অবস্থান নেয়। সূত্র জানায়, টিপু কখন তার হোটেল থেকে বের হয়েছে, কোন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে এসব তথ্য দিয়ে কি’লারদের সহায়তা করেছে টিটু নামের একজন। সূত্রঃ নয়া দিগন্ত