জনগণের টাকায় কানাডায় প্রমোদ ভ্রমণের অভিযোগ (ভিডিও)

| আপডেট :  ২৩ মার্চ ২০২২, ০১:০৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ মার্চ ২০২২, ০১:০৮ অপরাহ্ণ

পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই তড়িঘড়ি করে কানাডার টরোন্টোতে ২৬ মার্চ ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এই ফ্লাইটে বিমান ম’ন্ত্রণালয় এবং ক্ষমতাসীন দলের দুই সং’সদ সদস্যসহ ২৫ থেকে ৩০ কর্মকর্তা যাচ্ছেন। জনগণের করের টাকায় ওই কর্মকর্তাদের যাওয়ার উদ্দেশ্য দেখানো হয়েছে-অফিস ভাড়া, সেলস এজেন্ট নিয়োগ ও রুট পরিচালনার জন্য পরামর্শ করা। এমন উদ্দেশ্যে বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তার বিদেশ সফর নিয়ে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন।

কানাডার টরোন্টোতে বিমানের পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক ফ্লাইট বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত। আগামী ২৬ মার্চের ‘পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক’ নাম দেওয়া এই ফ্লাইটে থাকছেন বেসা’মরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী, মন্ত্রণালয়ের স’চিব মোকাম্মেল হোসেন, বিমানের পরিচালক এয়ার কমোডর মৃধা মো. একরামুজ্জামান, বিমানের মহাব্যবস্থাপক মোক্তার হোসেন এবং বেসা’মরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপস’চিব মোহাম্ম’দ আবদুল আউয়াল ও সৈয়দ শরিফুল ইসলামসহ বিমান, ম’ন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সং’সদীয় স্থায়ী কমিটির দুজন ক্ষমতাসীন দলের সং’সদ সদস্যসহ মোট ২৫ থেকে ৩০ কর্মকর্তা।

জনগণের টাকায় এসব কর্মকর্তার মধ্যে অনেকেই সফরে যাচ্ছেন একই উদ্দেশ্যে। আর তা হলো কানাডায় বিমানের একটি অফিস ভাড়া নেওয়ার বি’ষয়টি পর্যবেক্ষণ, জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়োগের প্রক্রিয়া এবং রুট পরিচালনার জন্য ট্রান্সপোর্ট কানাডার সঙ্গে পরামর্শ করা।

প্রতিমন্ত্রীর যাবতীয় খরচ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বহন করবে এবং টিকিট খরচ ব্যতীত অন্যদের যাবতীয় খরচ বেসা’মরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় বহন করবে। স’রকারি আদেশ ও মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র অনুযায়ী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস তাদের টিকিটের খরচ বহন করবে। প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী ও মেয়ের খরচ তিনি নিজেই করবেন।

একই কারণ দেখিয়ে অনাপত্তিপত্র নিয়েছেন প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত স’চিব মোহাম্ম’দ মুসাব্বির এবং মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদও। কেবল একই উদ্দেশ্যে এতো কর্মকর্তার কানাডা ভ্রমণ কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মনে করেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম।

তিনি বলেন, এখনও যদি জিএসএ নির্বাচন করা না হয়, তাহলে আপনি বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালাচ্ছেন কী করে? ওখানে জিএসএ ছাড়া টিকিট বিক্রি করতে পারবেন না। বাণিজ্যিক ফ্লাইটের যে কথাটা এসেছে, সেটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য আমি জানি না।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া জিএসএ নিয়োগ বিমানের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের দায়িত্ব। হঠাৎ করে কানাডার জিএসএ নিয়োগে কেন ম’ন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ লাগল? এ ব্যাপারে আমার জানা নেই।এমনকি পরীক্ষামূলক বাণিজিক ফ্লাইট বলেও কোনো ফ্লাইট হতে পারে না বলেও মনে করেন তিনি।

জিএসসি নিয়োগের বি’ষয়টি বিমানের কাজ বলে জানান বিমানের এমডি।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এমডি আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিমান পরিচালনা পর্ষদ এটার সিদ্ধান্ত দেবেন। বিমানই এটার দেখাশোনা করবে।বিমানের এই রুটে নিয়োমিত ফ্লাইট পরিচালনা করতে আরও ১২ সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এখানে ক্যাবে কিছু পরীক্ষার বি’ষয় আছে। বাণিজ্যিক ফ্লাইটের সঙ্গে এটার রুট পরিদর্শন এবং এটার দেখার বি’ষয়ে একটা ফ্লাইট যাওয়ার বা’ধ্যবাধকতা আছে। সে হিসাবেই এটার দিনক্ষণটা ঠিক করা হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে।

তাহলে ২৬ মার্চে কেন এই ফ্লাইট, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। প্রস্তুতি ছাড়া এমন ফ্লাইট ঠিক হয়নি বলেও মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, প্রস্তুতি সম্পন্ন না করে ফ্লাইট চলাচল করাটা কিন্তু একটি আত্মঘা’তী প্রচেষ্টা হতে পারে। এটি জনগণের টাকায় আনন্দভ্রমণ ছাড়া আর কিছুই নয় বলেও মনে করেন তিনি। সূত্রঃ আরটিভি নিউজ