রংপুরে মেস্তা পাট থেকে তৈরি হচ্ছে আইসক্রিম জেলি জুস আচার

| আপডেট :  ১০ মার্চ ২০২২, ০৪:৪৬ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১০ মার্চ ২০২২, ০৪:৪৬ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশে পাটের পরিচিতি সোনালী আশঁ হিসেবে। দেশে তিন ধরনের আঁশ ফসলের মধ্যে সাধারণত মেস্তা পাট গ্রামাঞ্চলে বাড়ির আশপাশে বা রাস্তার ধারে দেখা যেত। এটি সাধারণত টক পাট হিসেবে গ্রামাঞ্চলে তরকারিতে বা চাটনি বানিয়ে খাওয়া হতো।

দেখতে সাধারণ হলেও এই উপগুল্মজাতীয় উদ্ভিদের গুণাগুণ অনেক। তাই ২০১০ সালে খাবার উপযোগী সবজি মেস্তা অবমুক্ত করা হয়। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট সবজি মেস্তা-১ (চুকুর) নামে এর অবমুক্ত করে। আর শাকসবজি কিংবা টক হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি এই জাতের পাট থেকেই রকমারি খাবার তৈরির ব্যাপারে গবেষণা চলছে।

ইতোমধ্যে রংপুরে গবেষণাগারে পাট থেকে তৈরি হচ্ছে আইসক্রিম, মেস্তাসত্ত্ব, চা, জ্যাম, জেলি, জুস, আচার ও পানীয়সহ হরেক রকমের খাদ্যপণ্য। পাটের বীজের (ফল) ওপরের আবরণ থেকে উৎপাদিত এসব খাদ্যপণ্য বাজারজাত করা গেলে দেশের অর্থনীতিতে যোগ হবে হাজার কোটি টাকা। কিন্তু শিল্পোদ্যোক্তারা বাজারজাতকরণে এগিয়ে না আসায় মূল্যবান এসব পণ্যের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এখনো আটকে আছে গবেষণাগারেই।

জানা গেছে, মূলত এই জাত অবমুক্তের পর এখনো তা কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হয়নি। গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে স্বল্প পরিসরে চাষ ও গবেষণা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এজন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এছাড়া উদ্যোক্তরা এগিয়ে আসলে সম্ভাবনাময় এই মেস্তা পাট এক দিন অর্থকরী ফসল হিসেবে কৃষকদের কাছে সমাদৃত হবে।

রংপুর আঞ্চলিক পাট গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আবুল ফজল মোল্লা জানান, উপগুল্মজাতীয় এই উদ্ভিদটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। পাতা রান্না করে তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। চুকুরের পাতা ও ফলে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, কেরোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-সি ও অন্যান্য খাদ্য উপাদান রয়েছে।

মেস্তা অর্থাৎ চুকুর পাতার চা হৃদরোগীর জন্য উপকারী, রক্তের কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া এর পাতায় রয়েছে ক্যানসার প্রতিষেধক উপাদান। এত গুণ থাকার পরও এর ব্যবহার শুধু গবেষণাগারেই আটকে আছে। রংপুর পাট গবেষণা কেন্দ্রে চাসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য প্রস্তুত করে শুধু প্রদর্শনী ও অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।

এসময় তিনি আরও বলেন, ফসলটি বাজারজাত ও এর গুণাগুণ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পাট গবেষণা কেন্দ্র বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেও শিল্পোদ্যোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। এ ফসলটি নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা। তাই এক্ষেত্রে এখন সরাসরি সরকারি পৃষ্ঠপোসকতা দরকার