কোটি কোটি টাকার অনিয়ম করেও বহাল তবিয়তে বশেমুরবিপ্রবির প্রকল্প পরিচালক

| আপডেট :  ২১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:২৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:২৫ অপরাহ্ণ

২০০১ সালে শিক্ষা ও গবেষণার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জে যাত্রা শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষা এবং গবেষণার পরিবর্তে একের পর এক দুর্নীতি এবং অনিয়মের কারণে আলোচিত হচ্ছে। আর সর্বশেষ এই অনিয়মের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আশিকুজ্জামান ভুঁইয়ার অনিয়ম।

এই প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এমনকি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুদক। কিন্তু তারপরও প্রকল্প পরিচালক পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি।

বশেমুরবিপ্রবির রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ২০১৯ এর ১৭ জুলাই আশিকুজ্জামান ভুঁইয়াকে বশেমুরবিপ্রবি অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এরপরই এই প্রকল্পে ঘটে একের পর এক নিয়ম। আর এসকল অনিয়মের বিষয় উঠে এসেছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনেও।

শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া প্রকল্প পরিচালক থাকা অবস্থায় তিনি বিধিবহির্ভূতভাবে খুলনা শিপইয়ার্ডকে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্র বাবদ সর্বমোট ২৮ কোটি ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৯৯ টাকা অগ্রীম প্রদান করেন। এসকল পণ্যের একটি বড় অংশের চাহিদা না থাকায় বর্তমানে অব্যবহৃত থেকে নষ্ট হচ্ছে।

এছাড়া, প্রকল্প পরিচালক থাকা অবস্থায় আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া প্রকল্পের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে নিজ অ্যাকাউন্টে প্রায় দেড় কোটি টাকা। কয়েক মাস পর সেই টাকা আবার আগের অ্যাকাউন্টে ফেরতও দেন তিনি। তবে এটি নিয়ম বহির্ভূত বলছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা নিজ একাউন্টে নেওয়াসহ এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বলেন একাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফারের বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে।

তবে, এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপ-পরিচালক (হিসাব) শেখ সুজাউদ্দিন বলেন, “এতে আমাদের কোনো পরামর্শ ও নেওয়া হয়নি। আমাদের কাছে কোনো ফাইল ও আসেনি। পরিকল্পনা, প্লানিং ও ওয়ার্কস অফিস তাদের নিজ দায়িত্বে খুলেছে

আর উপ-পরিচালক (প্লানিং) তুহিন মাহমুদ বলেন, “সহকারী পরিচালক আমার রুমে এসে বলেছিলান একটি একাউন্ট খোলা লাগবে যৌথ একাউন্টে সিগনেচার দেওয়ার কথা। আমি যেহেতু পিডি ওদের কথায় সিগনেচার দিয়ে দিয়েছি।”

অনিয়মের সকল বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুব বলেন, “অনিয়মের এই বিষয়টি ইউজিসি জানে, দুদক জানে,সরকার জানে সুতরাং আমার বিশেষ কিছু করার নেই। বিষয়টা উপর মহল অবগত না থাকলে আমি তাদের অবগত করতাম।”

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগকৃত বশেমুরবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন থাকাকালীন সময়ে প্রক্টর, প্রকল্প পরিচালকসহ প্রায় চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া।