হাসপাতালের সেবক বাবার মেয়ে হলেন চিকিৎসক, সাফল্যে খুশি বাবা-মা

| আপডেট :  ৬ মার্চ ২০২২, ১২:৪১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ মার্চ ২০২২, ১২:৪১ অপরাহ্ণ

বাবাকে ছাড়িয়ে গেছেন মেয়ে। তাও একই বিভাগে চাকুরি করে। বাবা মিজানুর রহমান হাসপাতালের সহকারি সেবক, মেয়ে তানজিনা আক্তার সদ্য নিয়োগ হওয়া চিকিৎসক। মেয়ের এমন সফলতাকে উপভোগ করছেন পরিবারের সদস্যরাও।
তানজিনার এ সাফল্যে সবাই খুশি।

কাকতালীয় বিষয় হলো, বাবা ও মেয়ে দুজনই একই তারিখে অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারি চাকুরিতে যোগ দিয়েছেন। মিজানুর রহমান ১৯৯৪ সাল থেকে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন। মেয়ে তানজিনা এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহকারি সার্জন পদে যোগ দিয়েছেন। তানজিনা আক্তার কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন ও ৪২তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

শেখ মিজানুর রহমানের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ধামতি গ্রামে। মিজানুর রহমানের তিন সন্তানের মধ্যে তানজিনা সবার বড়। মিজানুর রহমানের দ্বিতীয় মেয়ে মিরাজ আক্তার ফার্মাসিতে মাস্টার্স শেষ করেছেন ও ছোট ছেলে শেখ মিনহাজুর রহমান রহমান সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করছেন।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘ছোট বেলা থেকেই পড়ার প্রতি আমার মেয়ের আগ্রহ ছিলো। ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কথা বলতো সে। কিন্তু সরকারি কলেজে সুযোগ না পেলে আমার পক্ষে পড়ানো সম্ভব হবে না বলে তাকে বলতাম। সে তার চেষ্টায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পেয়ে এগিয়ে যায়। মেয়ের এ সাফল্যে এখন আমার খুব ভালো লাগছে। আমার বিভাগেই সে আমাকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিষয়টি অন্যরকম অনুভূতি হয়। ’

তানজিনা আক্তার বলেন, ‘বাবার চাকরির সুবাদে হাসপাতালের কোয়াটারে থাকার সময় দেখেছি যে মানুষ সৃষ্টিকর্তার পর একজন চিকিৎসককে বেশি বিশ্বাস করে। মানুষকে সেবা করার পেশা থাকলেও চিকিৎসা সেবাকেই আমার সেরা মনে হয়েছে। চিকিৎসক হওয়ার ক্ষেত্রে আমার মা আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে বেশি। কর্মক্ষেত্রে বা যেকোনো ক্ষেত্রে অবশ্যই বাবা মেয়ের সম্পর্ক বজায় রাখবো। ’

২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তানজিনা আক্তার। বর মো. মিজানুর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারি পরিচালক।কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অরূপ কুমার পাল বলেন, ‘একজন বাবার একাগ্রতা ও একনিষ্ঠতা থাকলে তিনি যে চাকরিই করেন না কেন তার সন্তানরা যেন বড় জায়গায় যেতে পারে এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারে এটা। বিষয়টি জেনে আমার খুব ভালো লেগেছে। ’