আমেরিকায় বেড়েছে লোকসম্মুখে নারী কোরআন তেলাওয়াতকারীদের সংখ্যা

| আপডেট :  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে লোকসম্মুখে নারী কোরআন তেলাওয়াতকারীর সংখ্যা। পথচলাটা সহজ নয়; তবে, এক মার্কিন তরুনীর উদ্যোগে গড়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর আন্দোলন ফিমেল রিসাইটার্স। যার মাধ্যমে, সম্মিলন ঘটছে বহুমাত্রিক প্রতিভার।বরাবরই পুরুষকে জনসম্মুখে কোরআন তেলাওয়াত করতে দেখে অভ্যস্ত, মুসলিম সমাজ।

নারীদের সেখানে যে জায়গা নেই, বিষয়টি তা নয়। কিন্তু, ইসলামিক প্রতিযোগিতা বা মাদ্রাসা পর্যন্তই তাদের সে দৌড় সীমাবদ্ধ।এ পরিস্থিতির উত্তরণে, ২০১৭ সাল থেকে ফিমেল রিসাইটার্স নামে একটি আন্দোলন শুরু করেন মার্কিন তরুনী মদিনা জাভেদ। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৃষ্টি করে ব্যাপক আলোড়ন।

শিকাগোতে বসবাসরত ফিমেল রিসাইটার্সের প্রতিষ্ঠাতা মদিনা জাভেদ বলেন, কোরআন মানেই সুন্দর। নারী বা পুরুষ, পোশাক বা সামাজিক পরিচয়ের মাধ্যমে তেলাওয়াতকারীকে বিচার করা ঠিক না। বরং, উচ্চারণ শুদ্ধ হচ্ছে কিনা বা সঠিক অর্থ শ্রোতার কাছে পৌঁছাচ্ছে কিনা, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে, একজন নারীর তেলাওয়াত অন্য নারীকে নিঃসন্দেহে প্রভাবিত করবে।

ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমেই সমাজে বাড়বে নারীর সম্মান- এই কথায় বিশ্বাসী মদিনা। সে কারণেই তার এ উদ্যোগ তিনি আরও বলেন, মুসলিম নারী অধিকার জোরালো করতেই আমার এ পদক্ষেপ। কোরআন সবার জন্যেই সমান পবিত্র। তাহলে, জনসম্মুখে একজন পুরুষ ধর্মগ্রন্থ তেলাওয়াত করতে পারলে, নারী নয় কেনো? বর্তমানে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেড়েছে চর্চাটি। তবে, এখনো মসজিদ, সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে বা জানাজায় সাধারণত পুরুষরাই তেলাওয়াত করেন কোরআন।

নারী তেলাওয়াতকারীদের বহুমুখী প্রতিভার সন্ধান দিয়েছে সামাজিক এই মঞ্চ। সামনে এনেছে, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী অনেকের পরিচয়। তেমনই একজন হলেন আল জাহরা লায়েক হেলমি, তিনি বলেন, তিন বছর বয়স থেকে কোরআন পড়া শুরু করি। পরবর্তী ১০ বছর মাকামাতের ওপর লেখাপড়া করি, বারবার চেষ্টার মাধ্যমে সুন্দর ও শুদ্ধ করতে থাকি তেলাওয়াত। ইসলাম ধর্মে নারীদের উপযুক্ত সম্মান-স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। তাহলে, লোকসম্মুখে পর্দার মাধ্যমে কেনো তেলাওয়াত করা যাবে না।

ইন্দোনেশিয়ান কোরআন তেলাওয়াতকারী মারিয়া উলফা বলেন, আল্লাহ কোরআন তেলাওয়াতের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জনের তৌফিক দিয়েছেন, আমাকে। জিতেছি জাতীয় পর্যায়ের বহু পুরষ্কার। তাই, অন্যান্য নারীদের শেখাচ্ছি। কারণ, অনেকেই শুধু আরবি পড়তে নয় বরং সুন্দর-সুষ্ঠুভাবে কোরআন তেলাওয়াতে আগ্রহী।

অশুদ্ধ উচ্চারণ বা তাক্ববীরের ত্রুটির কারণে বদলে যেতে পারে কোরআনে বর্ণিত আয়াতের অর্থ। তাই- শুধু সুললিত কণ্ঠে তেলাওয়াত নয়, বরং এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখার আহ্বান, ফিমেল রিসাইটার্স-এর।