জীবনের শেষ ইন্সটাগ্রাম পোস্টে যা লিখেছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী

| আপডেট :  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ

দুইদিন আগে ইন্সটাগ্রামে শেষ পোস্ট করেছিলেন ভারতের বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।এনডিটিভির খবরে মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালের বরাতে বলা হয়, তিনি ওই হাসপাতালে গত একমাস ধরে ভর্তি ছিলেন। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়।

এদিকে ইন্সটাগ্রামে দেখা যায়, সর্বশেষ পোস্টে নিজের সংগ্রহে থাকা পুরনো একটি ছবি শেয়ার করেন বাপ্পি। নিজের সিগনেচার স্টাইল- সানগ্লাস আর স্বর্ণের চেইন পরা ওই ছবি শেয়ার করে তিনি লিখেছিলেন, ‘ওল্ড ইজ অলওয়েজ গোল্ড’।

১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে সমৃদ্ধ এক পরিবারে জন্ম বাপ্পি লাহিড়ীর। তার ডাক নাম ছিল আলোকেশ বাপ্পী লাহিড়ী। বাবা অপরেশ লাহিড়ী ছিলেন বাংলা সঙ্গীতের জনপ্রিয় গায়ক এবং মা বাঁশরী লাহিড়ী ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও গায়িকা।

১৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ে স্থানান্তরিত হন তিনি। ১৯৭৩ সালে হিন্দী ভাষায় নির্মিত নানহা শিকারী ছবিতে তিনি প্রথম গীত রচনা করেন। এরপর তাহির হুসেনের জখমী (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এতে তিনি গীত রচনাসহ গায়কের দ্বৈত ভূমিকায় অংশ নেন।

অসম্ভব কিছু নয় শিরোনামে মোহাম্মদ রফি এবং কিশোর কুমারের সঙ্গেও দ্বৈত সঙ্গীতে অংশ নেন। তার পরের চলচ্চিত্র হিসেবে চালতে চালতে ছবিটির গানও দর্শক-শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। রবিকান্ত নাগাইচের সুরক্ষা ছবিতে গান গেয়ে সঙ্গীতকার হিসেবে জনপ্রিয়তা পান।

মিঠুন চক্রবর্তী’র ডিস্কো নাচের চলচ্চিত্রগুলোতে তিনি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮০’র দশকে মিঠুন চক্রবর্তী এবং বাপ্পী ল্যাহড়ী একসাথে বেশ কিছু ভারতীয় ডিস্কো চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এছাড়াও, তিনি দক্ষিণ ভারত থেকে পরিচালিত অনেক হিন্দী চলচ্চিত্রের গানে অংশ নিয়েছেন। সমগ্র ভারতবর্ষে তিনি নিজেকে ‘ডিস্কো কিং’ নামে পরিচিতি লাভে সমর্থ হন। বাপ্পী ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎ থেকে ১৯৯০’র দশকে দূরে সরে যান। পরে প্রকাশ মেহরা’র ‘দালাল’ ছবিতে স্বল্প সময়ের জন্য ফিরে আসেন।

বাপ্পী রচিত সঙ্গীতগুলো বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম, এক বার কহো (১৯৮০); সুরক্ষা; ওয়ারদাত; আরমান; চলতে চলতে; কমাণ্ডো; ইলজাম; পিয়ারা দুশমন; ডিস্কো ড্যান্সার; ড্যান্স ড্যান্স; ফিল্ম হি ফিল্ম; সাহেব; টারজান; কসম পয়দা করনে ওয়ালে কি; ওয়ান্টেড: ডেড অর এলাইভ; গুরু; জ্যোতি; নমক হালাল; শরাবী (১৯৮৫: ফিল্মফেয়ার সেরা সঙ্গীত পরিচালকের পুরস্কার); এইতবার; জিন্দাগী এক জুয়া; হিম্মতওয়ালা; জাস্টিস চৌধুরী; নিপ্পু রাব্বা; রোদী ইন্সপেক্টর; সিমহাসনম; গ্যাং লিডার; রৌদী অল্লাদু; ব্রহ্মা; হাম তুমহারে হ্যায় সনম এবং জখমী।

এছাড়াও তিনি মালায়ালম চলচ্চিত্র (কেরালা) দ্য গুড বয়েজ ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।