অ্যাম্বুলেন্স আটকে চালককে মা’রধর, ভিতরে ছটফট করতে করতে প্রা’ণ গেল শিশু আফসানার

| আপডেট :  ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ

মাইক্রবাসকে ওভারটেক করায় ক্ষু’ব্ধ মাইক্রোচালক ও তার সহযোগীরা রো’গীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আ’টকে রেখে ও চাবি কেড়ে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও সহযোগীকে মা’রধর করে। ততক্ষণে ছ’টফট কর নিথর হয়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে থাকা ৯ বছরের শি’শু।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর একটি হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ক্যান্সার আ’ক্রান্ত শি’শু আফসানা আক্তারকে (৯) নিয়ে গাইবান্ধায় ফিরছিল তার পরিবার। কিন্তু, দুই চালকের বিতণ্ডায় পথেই প্রা’ণ হারাতে হল শি’শু আফসানার। ব্যস্ত মহাসড়কে শত শত মানুষের উপস্থিতিতেও সাহায্যে মেলেনি এতটুকু। অ’সুস্থ মেয়ের এমন করুণ মৃ’ত্যুতে বাকরুদ্ধ আফসানার পরিবার।

জানা যায়, শি’শু আফসানা আক্তারকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক হয়ে গ্রামের বাড়ির গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে ফিরছিলো। পথে ওভারটেক করার ঘটনা নিয়ে আশুলিয়ার বাইপাইলে পোঁছালে রো’গীবাহী চলন্ত অ্যাম্বুলন্সেটির গতিরোধ একটি মাইক্রোবাস। এ সময় মাইক্রোর চালক ও তার সহযোগীরা অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও সহকারীকে মা’রধর করে এবং অ্যাম্বুলেন্সের চাবিও ছি’নিয়ে নেয়।

অনেক অনুনয় বিনয় ও আর্তনাদ করেও মাইক্রোর ক্ষু’ব্ধ চালকের মন গলেনি। পরে ট্রাফিক পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে চাবি সংগ্রহ করলেও অ’ভিযুক্ত মাইক্রোর চালকসহ অন্যান্যরা পা’লিয়ে যায়। তবে, জ’ব্দ করা হয় হায়েস মাইক্রোবাসটি। দীর্ঘ সময় পর অ্যাম্বুলেন্সের চাবি পেয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ছুটে যায় আফসানার পরিবার। কিন্তু, ততক্ষণে ছ’টফট করতে করতে অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরেই মৃ’ত্যু হয় শি’শু আফসানার।

অ্যাম্বুলেন্সের চালকের সহযোগী বলেন, আমরা পাশের গাড়ি থেকে জরুরি সাইড চাইলেও সাইড দেয়নি। বরং ক্ষু’ব্ধ হয়ে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মা’রধর করে। এরপর পাশে থাকা পুলিশে অ’ভিযোগ করলে সে আমাদের সাইড করে বের করে দেয়। কিন্তু, গাড়ির চাবি খুলে নেয়ায় ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার কয়েক মিনিট পরেই গাড়ির ভেতরে থাকা রো’গী মা’রা যায়। প্রায় ২৫-৩০ মিনিটের মতো অ্যাম্বুলেন্স আ’টকে রাখা হয় বলেও জানান অ্যাম্বুলেন্সের সহযোগী।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় মাইক্রবাসটি জ’ব্দ করা হয়েছে। ঘটনার ত’দন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ম’রদেহের সু’রতহাল শেষে ম’য়নাত’দন্তের প্রয়োজন হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানায়, হায়েস মাইক্রোবাস থেকে নেমে তারা অ্যাম্বুলেন্সের চালক এবং তার সহযোগীকে মা’রধর করে। এরপর তারা অ্যাম্বুলেন্সের চাবিও নিয়ে চলে যায়। চাবি নিয়ে চলে যাওয়ার ১৫-২০ মিনিট পরেই ভেতরে থাকা অ’সুস্থ শি’শু মা’রা যায়। আরেকজন বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চালক ভেতরে রো’গী থাকার কথা বারবার বললেও তারা সেই কথা কানে না তুলে চাবি নিয়ে চলে যায়। পরে ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় অ্যাম্বুলেন্সের চাবি নিয়ে আসা হয়।

মৃ’ত্যু হওয়া শি’শুর বাবা আলম মিয়া জানান, গাড়ির সাইড দেয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কা’টাকাটি হয়। এরপর গাড়ি আ’টকে তারা গাড়ির চাবি নিয়ে যায়। চাবি নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরেই আমার মেয়ে মা’রা যায়।

স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক নিশ্চিত করেন, হাসপাতালে আসার আগেই শি’শুর মৃ’ত্যুর কথা।অ’ভিযুক্ত হায়েস মাইক্রোবাসটির প’লাতক চালক নজরুল ইসলাম বাইপাইলের বাসিন্দা। পরিচয় নিশ্চিত হলেও এখনও তাকে আ’টক করতে পারেনি পুলিশ। তবে শি’শুর ম’রদেহ পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।