৩৩৯ ভোট গুনতে কেন সারা রাত লেগে গেল?

| আপডেট :  ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ভোর সাড়ে পাঁচটারও বেশি। কনকনে শীত। এফডিসির খোলা প্রাঙ্গনে চলচ্চিত্র অঙ্গন ও গণমাধ্যমকর্মীদের অপেক্ষা ও উৎকণ্ঠা। সবার মনে একটাই প্রশ্ন, কে হচ্ছেন আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতা। একসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন এলেন, ফলাফল ঘোষণা করলেন। পদগুলোর বেশির ভাগেই ছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কিন্তু নেটিজেনদের মনে একটাই প্রশ্ন ছিল, ৩৩৯টা ভোটের গণনা কেন সন্ধ্যা থেকে ভোর রাতে শেষ হয়। কেন এতটা সময়?

কেন দীর্ঘ সময় লেগেছে ভোট গণনায়, এমন প্রশ্নের উত্তর আমরা জানার চেষ্টা করেছি প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনের কাছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের হিসাব–নিকাশ একদমই আলাদা। এটা খুবই জটিল নির্বাচন। হাতেকলমে করতে হয়। ২১ দিকে চোখ রাখতে হয়। জাতীয় নির্বাচন বা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের চেয়ে হিসাবটা কঠিন। আমাদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মোট ২১টি ভাগ করতে হয়।

একটি করে ব্যালট পেপার বের করে দুই পক্ষের লোকদের দেখাতে হয়। ফলাফল খাতায় কী লেখা হলো, সেটা দুই পক্ষের আটজন দেখেন। আমাদের কার্যকরী পরিষদের ভোট নষ্ট হয়েছে ১০টি। অন্যদিকে সম্পাদকমণ্ডলীর ব্যালট পেপারে ভোট নষ্ট হয়েছে ২৬টি। কেন একটি ভোট বাতিল হলো, সেটা দুই পক্ষকে চার/পাঁচবার দেখানো হয়। যুক্তিতর্ক আছে। একাধিকবার হিসাব তো আছেই।’ এবার শিল্পী সমিতির মোট ভোটার ছিলেন ৪২৮ জন।

এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৩৩৯ জন। ভোট দেওয়ার জন্য দুটি করে ব্যালট পেপার ছিল। ভোট গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন দুই পক্ষের আটজন অভিনয়শিল্পী। ‘হাতে গণনার জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লোককে দায়িত্ব দেওয়া হলেও এর চেয়ে কম সময়ে ভোট গণনা সম্ভব না। আমরা ভোট দানের শেষে নিজেদের জন্য অল্প কিছু সময় নিয়েছি। খেতে হয়েছে।

ভোট গণনায় যেন তাড়াহুড়া না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হয়েছে। আপিল বিভাগে যেন কোনো বিতর্কের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখত হয়েছে। ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ ও মিশা-জায়েদের দুই পক্ষ ভোট গণনা নিয়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন, তারপর আমরা ঘোষণা করেছি। তুলনামূলক গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারই সবচেয়ে কম সময় লেগেছে’, বলেন পীরজাদা শহীদুল।

নির্বাচন কমিশনের সদস্য জাহিদ হোসেন বলেন, ‘একটি করে ব্যালট পেপার বের করেছি, আমার ডানে ও বামে দুই প্যানেলের লোক থাকেন, তাঁরা প্রথমে দেখেন। পরে সেটা হাতে লেখা হয়। কী লেখা হয়েছে, সেটা দুই পক্ষ ঠিকমতো দেখে ইয়েস বলেন। আমাদের এক্সিকিউটিভ সদস্যরা দেখেন। একটা করে ভোট বলা হয়, একটা করে লেখা হয়। হিসাব করেন একটা ভোট গুনতে কত সময় লাগে।

কেউ যেন প্রশ্ন তুলতে না পারেন, সে জন্য ১০০ ভাগ নিরপেক্ষতার সঙ্গে গণনা করা হয়েছে। এটা তো হাটবাজারে টাকা গোনা না যে দ্রুত গুনে শেষ করলাম। কাজটা সঠিকভাবে সবচেয়ে কম সময়ে করেছি। কারও কোনো অভিযোগ নেই।’ দুই বছরমেয়াদি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জায়েদ খান।