মৃ’ত্যুর পরও লা’শকে ধ’র্ষণের কথা স্বীকার করলো ২ খু’নি

| আপডেট :  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১:১৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১:১৩ অপরাহ্ণ

খুলনার ফুলতলায় মু’সলিমা খাতুন (২০) নামে এক ত’রুণীর মস্তকবিহীন লা’শ উ’দ্ধারের তিনদিন পর গ্রে’ফতার দুই যুবকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খ’ণ্ডিত মাথা উ’দ্ধার করা হয়েছে। গ্রে’ফতার দুই যুবকের নাম রিয়াজ খন্দকার ও সোহেল ওরফে ইমন সরদার।

এর আগে গত বুধবার সকালে ফুলতলা উপজে’লার উত্তর’ডিহি গ্রামের ধানক্ষেত থেকে অ’জ্ঞাত ওই ত’রুণীর (২০) মস্তকবিহীন লা’শ উ’দ্ধার করে পুলিশ।আ’টক রিয়াজ খন্দকার ফুলতলা উপজে’লার যোগিনীপাশা গ্রামের মোশাররফ খন্দকারের ছেলে ও মো: সোহেল ওরফে ইমন সরদার একই গ্রামের মিলন সরদারের ছেলে।

মাত্র তিনদিনের পরিচয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরলমতি মু’সলিমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধ”ণের পর নি’র্মমভাবে হ’’ত্যা করে রিয়াজ খন্দকার ও সোহেল ওরফে ইমন সরদার। হ’’ত্যার পর মৃ’ত মু’সলিমার লা’শের ও’পরও তারা পাশবিক নি’র্যাতন চা’লায় বলে জানিয়েছে র‌্যা’ব।

মাথাবিহীন লা’শ উ’দ্ধারের পর ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নি’হত কি’শোরীর হাত-পা দেখে লা’শ সনাক্ত করে তার বড় দুই বোন আকলিমা খাতুন ও ফাতেমা খাতুন। পুলিশও তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় তার নাম মু’সলিমা খাতুন।এ ঘটনার পর গত শুক্রবার রাতে র‌্যা’ব-৬-এর একটি টিম ফরিদপুর থেকে

রিয়াজ খন্দকার নামে একজনকে আ’টক করে। পরে ফুলতলা থেকে আ’টক করা হয় সাগর সরদার নামে আরেক যুবককে।পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শনিবার বেলা ১২টার দিকে ফুলতলা উপজে’লার যোগিনীপাশা গ্রামের একটি নির্মাণাধীন ভবনের বাথরুম থেকে নি’হত মু’সলিমার খ’ণ্ডিত মস্তক উ’দ্ধার করা হয়।

খ’ণ্ডিত মস্তক উ’দ্ধারের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যা’ব-৬-এর পরিচালক লে: কর্নেল মোসতাক আহম’দ বলেন, মস্তকবিহীন বি’বস্ত্র ত’রুণীর লা’শ উ’দ্ধারের খবর জানার পর শুক্রবার সোহেল ও রিয়াজ নামে দুইজনকে গ্রে’ফতার করা হয়। এর মধ্যে রিয়াজকে ফরিদপুর থেকে ও ফুলতলা থেকে সোহেলকে গ্রে’ফতার করা হয়। নি’হত মু’সলিমার কা’টা মাথার সঙ্গে যে বটি দিয়ে তাকে হ’’ত্যা করা হয় সেটিও উ’দ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আ’সামি রিয়াজ ও সোহেল ল’ম্পট প্রকৃতির লোক। রিয়াজের চার বিয়ে। চতুর্থ বউ তার ঘরে রয়েছে। তারপরও সে মু’সলিমার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে পরে ডেকে নিয়ে ধ”ণ ও হ’’ত্যা করে। প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে রিয়াজ স্বীকার করেছে সে এর আগেও প্র’তারণার মাধ্যমে আরো অনেক মেয়ের সম্ভ্রম ন’ষ্ট করেছে।

হ’’ত্যার তিনদিন আগে রিয়াজের সাথে মু’সলিমার পরিচয় হয়। এরপর তারা একে অপরের সাথে দেখা করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। সাক্ষাতের সময় রিয়াজ তার সাথে সোহেলকে রাখে।বুধবার রাত ৮টা থেকে ৯টার দিকে মেয়েটিকে ওই বাড়িতে নিয়ে আ’টকিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। পরে দুই ঘণ্টা ধরে ত’রুণীকে পাশবিক নি’র্যাতন করে তারা।

তিনি বলেন, মেয়েটি যখন বুঝতে পারে সে প্র’তারণার শি’কার হয়েছে, তখন বার বার কাকুতি জানিয়ে বলে, ‘তোমরা আমাকে ছেড়ে দাও, আমি কাউকে বলবো না। আমার বাবা অ’সুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমি বাবার কাছে যাব।’

কিন্তু সোহেল ও রিয়াজ নিজেদের মধ্যে শলা-পরামর্শ করে যে, তাকে ছেড়ে দিলে রক্ষা পাওয়া যাবে না, অনেক শা’স্তি হবে। মেয়েটিকে তারা বলে ‘তোমাকে ছেড়ে দেব’ এই বলে তাকে রাস্তার দিকে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে পেছন দিক থেকে গ’লা মোচড় দিয়ে চে’পে ধরলে মেয়েটি মাটিতে পড়ে যায়। তখন মৃ’ত্যু নিশ্চিত করতে গ’লায় ওড়না দিয়ে পেঁ’চিয়ে টেনে ধরে রাখে রিয়াজ ও সোহেল।

বি’ষয়টি অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য গাছের সাথে বেঁ’ধে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে তারা নি’হত ত’রুণীর লা’শ কাঁধে নিয়ে ওই বাড়িতে রাখে। এ সময় তারা লা’শটি বি’বস্ত্র করে ফের পাশবিক নি’র্যাতন চা’লায়। এসব কথা আ’সামিরা অকপটে র‌্যা’বের কাছে স্বীকার করেছে।

তিনি আরো জানান, এরপর গ্রে’ফতার দু’জন মনে করে এভাবে রেখে গেলে তারা ধরা পড়ে যাবে। এরপর তারা রিয়াজের বাড়ি এসে বটি নিয়ে মেয়েটির মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে এবং ত’রুণীর পরনের কাপড় দিয়ে তার মাথা ঢেকে ওই বাড়ির বাথরুমে লুকিয়ে রেখে যে-যার বাড়ি চলে যায়।প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে ত’রুণীর হ’’ত্যার সাথে ওই দু’জনের জ’ড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

নি’হত মু’সলিমা খাতুনের বোন আকলিমা বেগম জানান, তারা দুই বোন ও বাবা ইম’দাদ গাজী ফুলতলা থানার পাশে ভাড়া থাকতেন। তার বাবা অ’সুস্থ। ঘটনার দিন বাবাকে নিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছিলেন তিনি। বুধবার রাতে মু’সলিমা বাড়ি থেকে বেরুনোর পর তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।

আকলিমা আরো জানান, আমার বোন খুব নিরীহ ছিল। সে জুট মিলে আট ঘণ্টা ডিউটি করে বাকি সময় বাসায় থাকতো। এরা বিভিন্ন সময়ে আমার বোনকে উ’ত্ত্যক্ত করত। আমি এদের বিচার চাই। যেভাবে এরা আমার নিরীহ বোনকে ক’ষ্ট দিয়ে মে’রেছে এদেরও সেইভাবে মৃ’ত্যু চাই।

নি’হত মু’সলিমার পিতা ইম’দাদ গাজী ভ্যানচালক। দরিদ্রতার কারণে স্থানীয় দামোদর গ্রামে ভাড়া থেকে তিনি স্থানীয় একটি জুট মিলে শ্র’মিকের কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জে’লার শ্যামনগর উপজে’লার পারভিটা গ্রামে।