৩২ বছর পর শিল্পীদের অভিভাবক হলেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন

| আপডেট :  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০২:৪৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০২:৪৭ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ ৩২ বছর পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দায়িত্ব কাঁধে নিলেন একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। শুক্রবার খল অ’ভিনেতা মিশা সওদাগরকে ৪৩ ভোটে হারিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবার হয়ে গেল শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন। সেখানে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন পেয়েছেন ২২০ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিশা সওদাগর পেয়েছেন ১৪৫ ভোট।

এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বহু আগে থেকেই বিপুল উৎসাগ, উদ্দীপনা ও উত্তে’জনা বিরাজ করছিল। যখন প্রকাশ হল যে, ইলিয়াস কাঞ্চন নির্বাচন করবেন, তখন সেই উত্তে’জনার পারদ আরও কয়েক ধাপ উপরে উঠে যায়। এরপর নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়েছে ততই গুঞ্জন শোনা গেছে যে, এবার বদল হতে পারে শিল্পী সমিতির সভাপতির চেয়ার। অবশেষে হলও তাই।

এর আগে ১৯৮৯ সালে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। সে বার তার প্যানেল থেকে সভাপতি হয়েছিলেন খল অ’ভিনেতা আহমেদ শরীফ। এরপর দীর্ঘ ৩২ বছর আর কখনও শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী হননি তিনি। তবে বিদায়ী কমিটির সঙ্গে দুই মেয়াদে তিনি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। ফলে বর্তমান সময়ের শিল্পীদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল।

এবারের নির্বাচনের আগে যখন বিদায়ী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিশা সওদাগর এবং জায়েদ খানদের বি’রুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দু’র্নীতির অ’ভিযোগ উঠতে শুরু করল, তখন তাদেরকে হটানোর জন্য একটি প্যানেল করার পরিকল্পনা করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। তার সঙ্গে সভাপতি পদে শাকিব খান ল’ড়বেন বলে প্রথমে গুঞ্জন উঠেছিল। কিন্তু পরে শাকিব জানিয়ে দেন, তার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।

এরপর মাসে খানেক আগে হঠাৎই ইলিয়াস কাঞ্চনের নাম শোনা যায়। পরে অ’ভিনেতা নিজেও গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন যে, তিনি এবার সভাপতি পদে মিশা সওদাগরের বিপরীতে নির্বাচন করবেন। ইলিয়াস কাঞ্চন এও জানান, তার প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তারের অনুরোধে এবং শিল্পীদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে তিনি নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি এলেন এবং জয়ও করলেন।

কিন্তু ইলিয়াস কাঞ্চনের এই জয়ের পেছনে কারণ কী’? তিনি একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় একজন নায়ক। তার উপর আবার স্বভাবে নম্র, ভদ্র, মা’র্জিত। কথাবার্তায় শালিন। এছাড়া বহু বছর ধরে তিনি ‘নিরাপদ সড়ক চাই আ’ন্দোলন’ নিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছেন। এটা সারা দেশের মানুষ জানেন। তেমনি জানেন চলচ্চিত্রের শিল্পীরাও। এসব জিনিসই তার জয়ের পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে মত চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের।

অন্যদিকে, মিশা সওদাগর গত দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার সবাই চাচ্ছিলেন, নতুন এবং আরও যোগ্য কেউ বসুক এই চেয়ারে। তাই হয়তো নতুন অ’ভিভাবক হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চনকেই বেছে নিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পীরা।

‘বেদের মে’য়ে জোছনা’ খ্যাত এই চিত্রনায়ক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবম সভাপতি নির্বাচিত হলেন। এর আগে নায়ক রাজ রাজ্জাক, খলিল উল্লাহ খান, আহমেদ শরীফ, আলমগীর, মাহমুদ কলি, মিজু আহমেদ, শাকিব খান এবং মিশা সওদাগররা বিভিন্ন মেয়াদে এই সমিতির সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন।

তবে ইলিয়াস কাঞ্চন জিতলেও হেরে গেছেন তার প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। এবার এই অ’ভিনেত্রীও শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসতে পারেন বলে অনেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু সে সব মিথ্যা করে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার ধরে রেখেছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। তিনি ১৭৬ ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। নিপুণ পেয়েছেন ১৬৩ ভোট।