বন্ধ হচ্ছে জাহান্নামের দরজা

| আপডেট :  ৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১:০২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

তুর্কমেনিস্তানের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র গেটওয়ে টু হেল বা দোজখের দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট গারবানগুলি বার্ডিমোহামেদভ এর এক ঘোষণায় প্রাকৃতিক এই গ্যাস ক্রেটারটিকে (আগ্নেয়গিরির জ্বালা মুখ) ধ্বংস করে দেয়ার ঘোষণা দেন।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট গারবানগুলি বার্ডিমোহামেদভ বলেন, এই ক্রেটারের গ্যাস নিকটবর্তী জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। আর আমরা মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ হারাচ্ছি, যা বিক্রি করে হয়তো আমরা আরও উন্নত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে পারতাম। আমি সংশ্লিষ্টদের যত দ্রুত সম্ভব এই আগুন নেভানোর নির্দেশ দিচ্ছি।

গেটওয়ে টু হেল বা দোজখের দরজা তুর্কমেনিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি। আয়তনে একটি ফুটবল মাঠের প্রায় অর্ধেক এ জ্বালামুখটি ৭০ মিটার প্রশস্ত ও ২০ মিটার গভীর।

তুর্কিমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাদের ইন্টারন্যাশনাল বাস স্ট্যান্ড থেকে সড়ক পথে তিন ঘণ্টার পথ দারভাজা। সেখান থেকে সাত কিলোমিটার ট্রেকিং করে পৌঁছে যেতে পারেন ভয়ানক এই কূপের কাছে। তবে সাবধান! নরকের ভেতর কী আছে, উঁকি দিয়ে দেখতে যাবেন না। সত্যিকারের নরক না হলেও, পড়ে গেলে যে রক্ষা করার কেউ থাকবে না, তা নিশ্চিত।

অসংখ্য গুজব প্রচলিত আছে কারাকুম মরুভূমির দারভাজা গ্রামের এ প্রাকৃতিক গ্যাস ক্রেটারের উৎপত্তির রহস্য নিয়ে। তবে এর উৎপত্তির সঠিক কারণ সম্পর্কে এখনও কেউ অবগত নয়।

১৯৭১ সালে সোভিয়েত আমলে রুশ ভূতত্ববিদরা তেলের সন্ধানে আসেন এখানে। ভারী মেশিন নিয়ে শুরু করেন খোঁড়াখুঁড়ি। তবে তেল নয়, সন্ধান মেলে এক বিশাল গ্যাস ক্ষেত্রের। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। বিশাল গর্ত থেকে মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারপাশে। বিজ্ঞানীরা তখন অদ্ভুত এক সীদ্ধান্ত নেন। আগুন ধরিয়ে দেন সেখানে। ভাবেন শিগগিরই পুড়ে শেষ হয়ে যাবে ভেতরে থাকা সব গ্যাস। সে আশায় গুড়ে বালি। ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে। গ্যাসও ফুরোয় না। আগুনও নেভে না।

তুর্কমেনিস্তানের ভূগোলবিদরা বলেন, গত শতকের ষাটের দশকে এই ক্রেটারের ভুমিরূপ গঠিত হয়, আর এটি জ্বলছে ৮০’র দশক থেকে। তবে, ২০১৩ সালে কানাডিয়ান আবিস্কারক জর্জ করনিস গেটওয়ে টু হেল এর গভীরতা মাপলে জানা যায়, এর উৎপত্তি সম্পর্কিত ধারণাগুলো আসলে ভিত্তিহীন। কেন এই ক্রেটার জ্বলছে তা এখনও অজানা।