পারিবারের অমতে শ্যালিকাকে বিয়ে, লাখ টাকা চুক্তিতে হ’ত্যা

| আপডেট :  ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:২৬ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:২৬ অপরাহ্ণ

গাজীপুরের শ্রীপুরে নববধূকে বাড়িতে উঠিয়ে আনার আগের দিনে খু’ন হওয়া শরিফুল হ’’ত্যাকাণ্ডের র’হস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। এ ঘটনায় জ’ড়িত থাকার অ’ভিযোগে ছয়জনকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে। হ’’ত্যাকাণ্ডে দুইজন দায় স্বীকার করে আ’দালতে স্বী’কারোক্তি মূলক জ’বানব’ন্দি দিয়েছে। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মা’মলার ত’দন্ত তদারকি কর্মকর্তা ও পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ই’নচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্ম’দ মাকছুদের রহমান।

গাজীপুর জে’লার শ্রীপুর উপজে’লার বনখড়িয়া গ্রামের মৃ’ত নায়েব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (২০) ভাড়ায় অটোরিকশা চা’লিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় শরিফুল। ওই দিন বিকেলে বনখড়িয়া বাজার থেকে রাজেন্দ্রপুর ক্যা’ন্টনমেন্ট বিপসট গেট সড়কে চালকবিহীন অটোরিকশাটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে অটোরিকশার পেছনে থাকা মোবাইল নাম্বারে ফোন করে বি’ষয়টি মালিক মোশারফ হোসেনকে জানান রোমান হোসেন নামের এক ব্যক্তি।

বি’ষয়টি অটোরিকশার মালিক মোশারফ হোসেন অটো চালকের বড় ভাই মো. সেকান্দারকে জানান। ওই দিন রাতে অটোচালক শরিফুল বাড়িতে না ফেরায় তার স্বজনরা পরদিন ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে অটো উ’দ্ধারের জায়গা থেকে সামান্য দূরে গজারি বনের ভেতর থেকে শরিফুল ইসলামের গ’লাকা’টা ম’রদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। ওই দিনই শ্রীপুর থানায় অ’জ্ঞাতনামা আ’সামিদের বি’রুদ্ধে থানায় মা’মলা দা’য়ের করেন নি’হত অটোচালকের বড় ভাই সেকান্দার।

মা’মলা দা’য়েরের পর শ্রীপুর থানা পুলিশ, পিবিআইসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম হ’’ত্যাকাণ্ডের র’হস্য উদঘাটনে ত’দন্ত শুরু করেন। ঘটনার সপ্তাহের খানেকের মধ্যেই ক্লুবিহীন হ’’ত্যাকাণ্ডের র’হস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর পিবিআই।

পুলিশ সুপার মোহাম্ম’দ মাকছুদের রহমান জানান, ভি’কটিম শরিফুল ঘটনার ১০-১২ দিন আগে জে’লার জয়দেবপুর থানার এলাকার ভাওয়াল মির্জাপুর গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের মেয়ে কারিমাকে (১৭) পরিবারের অমতে গো’পনে বিয়ে করেন। গত ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার (হ’’ত্যাকাণ্ডের পরের দিন) কারিমাকে পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠান করে হ’’ত্যাকাণ্ডের শি’কার শরিফুলের বাড়িতে নেওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু কারিমার বড় ভাই খোরশেদ আলমের শ্যালক রাজিব শেখ কারিমাকে পছন্দ করতো এবং পারিবারিকভাবে সেখানে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়াও কারিমার বড় দুই বোনের স্বামী রাকিব হোসেন ও জুয়েল রানাসহ পরিবারের সদস্যরা কারিমার বিয়েতে রাজী না থাকায় তারা নি’হত শরিফুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছমত ওরফে তারেকের সাথে যোগাযোগ করে তাকে হ’’ত্যার জন্য এক লাখ টাকায় চুক্তি করে।

চুক্তি মোতাবেক নি’হত শরিফুলকে সিগারেট খাওয়ানোর কথা বলে আছমত বনখড়িয়া বাজার থেকে রাজেন্দ্রপুর ক্যা’ন্টনমেন্ট বিপসট গেইট সড়কের মাঝামাঝি গজারি বনের ভেতর নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আছমতসহ আরও তিনজন সিগারেট ও গাঁ’জা সেবন করার এক পর্যায়ে শরিফুলকে চে’পে ধরে মাটিতে ফে’লে গ’লায় ছু’রি দিয়ে গ’লা কে’টে হ’’ত্যা করে।

এ ঘটনায় জ’ড়িত থাকার অ’ভিযোগে নরসিংদী জে’লার শিবপুর থানার হিজুলিয়া গ্রামের আ. রশিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫), শ্রীপুর উপজে’লার বনখড়িয়া গ্রামের মো. আমজাদ হোসেনের ছেলে আফ্রিদি (১৯), জে’লার জয়দেবপুর থানা এলাকার বাউপাড়া গ্রামের মো. নিয়ত আলীর ছেলে মো. রাকিব হোসেন (২২), জামালপুর জে’লার ইসলামপুর থানা এলাকার দর্জিপাড়া গ্রামের মো. হাসানের ছেলে, ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার ইব্রাহিম মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. রাজিব শেখ (২২), ময়মনসিংহ জে’লার গৌরিপুর থানার মিছিটেঙ্গী গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে, গাজীপুর মহানগরের সদর থানার শিকদার বাড়ি ভিমবাজার এলাকার জুয়েল রানা (২৭) ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজে’লার বনখড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃ’ত শাজাহ উদ্দিনের ছেলে মো. হানিফ (২৭)।

আসামী শফিকুল ইসলাম, মো. হানিফ ও আফ্রিদিকে শুক্রবার (১৭ই ডিসেম্বর) রাতে উপজে’লার বন খড়িয়া গ্রাম থেকে ও রাকিব হোসেন, রাজিব শেখ, মো. জুয়েল রানাকে বৃহস্পতিবার (১৬ই ডিসেম্বর) রাতে গাজীপুরের ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকা থেকে গ্রে’প্তার করা হয়।

এরমধ্যে গ্রে’প্তারকৃত আ’সামি আফ্রিদি ও শফিকুলকে আ’দালতে উপস্থাপন করা হলে তারা নিজেদের ও অন্যান্য আ’সামিদের জ’ড়িত থাকার কথা বলে স্বী’কারোক্তিমূলক জ’বানব’ন্দি প্রদান করে। অপর আ’সামি রাকিব হোসেন, রাজিব শেখ, জুয়েল রানা ও হানিফকে গ্রে’প্তার করে আ’দালতে উপস্থাপন করা হলে আ’দালত তাদের তিনদিনের রি’মান্ড মঞ্জুর করেন।