ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি গুলশান থানা, পাঠাল ধানমন্ডি

| আপডেট :  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ

অনলাইনে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের বিরুদ্ধে ডিএমপির গুলশান থানায় অভিযোগ করতে যান বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার পর তারা থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

তবে, লিখিত অভিযোগ গ্রহণ না করে তাদের ধানমন্ডি থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেয় গুলশান থানা পুলিশ। পুলিশ জানায়, ইভ্যালির অফিস ধানমন্ডিতে। মামলার বিষয়টি তারাই বিবেচনা করবে। এ কারণে তাদের ধানমন্ডি থানায় যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাত দেড়টার দিকে তারা গুলশান থানা ত্যাগ করেন।

গুলশান থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমান বলেন, ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ নিয়ে একজন ভুক্তভোগী রাতে আমাদের থানায় আসেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির অফিস ধানমন্ডি থানা এলাকায় হওয়ায় ভুক্তভোগী নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি মামলাটি কোথায় করবেন। যেহেতু অফিসটি ধানমন্ডিতে নিয়ম অনুযায়ী সেখানেই মামলাটি হওয়ার কথা। তবে ভুক্তভোগীর বাসা গুলশান এলাকায় হওয়ায় তিনি আমাদের কাছে এ বিষয়ে পরামর্শ করতে এসেছিলেন।

তার কাছ থেকে অভিযোগের একটি কপি আমরা রেখে দিয়েছি এবং তাকে আমরা বলেছি, আগামীকাল সকালে থানায় আসতে; তখন সিনিয়র অফিসাররা থাকবেন, এ বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। বুধবার রাতে ইভ্যালির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে তিন ভুক্তভোগী গুলশান থানায় আসেন। তাদের মধ্যে একজন ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা, একজন ৯ লাখ টাকা এবং আরেকজন ৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকার পণ্য অর্ডার করেও নির্ধারিত সময়ে তা পাননি বলে অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অভিযোগকারী আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। পণ্যের অর্ডার বাবদ সব মূল্য বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধ করেন তারা। পণ্যগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডেলিভারি ও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করে অর্ডার করা পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।

একপর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য প্রদান ও টাকা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসে যাই। ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে অফিসের অভ্যন্তরে থাকা ইভ্যালির রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসে আমাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন এবং আমাদের পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। আমাদের ভয়-ভীতি ও হুমকিসহ চরম দুর্ব্যবহার করে, যার ফলে আমরা চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিনযাপন করছি এবং পণ্যগুলো বুঝে না পাওয়ায় আমি আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

এদিকে, গত মঙ্গলবার ইভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বাধীন আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। এদিন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।