আমেরিকায় বসে গোলাপগঞ্জে চাকরি করছেন প্রধান শিক্ষক জেসমিন সুলতান

| আপডেট :  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ

আমেরিকায় বসে গোলাপগঞ্জে চাকরি করছেন জেসমিন সুলতানা নামের এক প্রধান শিক্ষক। শুধু চাকরিই নয় তিনি ব্যাংক থেকে সরকারি বেতনও উত্তোলন করছেন। এমন অভিযোগ গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রায়গড় সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানার বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা অফিসে বিদ্যালয়ের সদ্য অনুমোদিত ম্যানেজিং কমিটি লিখিত অভিযোগ করেছে।

অভিযোগপত্র ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেসমিন সুলতানা ২০১৩ সালের ২১শে এপ্রিল রায়গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ। এক বছর বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও ২০১৫ সালের ১২ই নভেম্বর থেকে ৫ বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। কিন্তু তিনি নিয়মিত মাসিক বেতনের টাকা উত্তোলন করে আসছেন

২০১৭ সালের ১৫ই জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর- এই দু’টি তারিখে জেসমিন সুলতানা সোনালী ব্যাংক ঢাকা দক্ষিণ শাখা থেকে মোট ৪ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এদিকে, অভিযোগের পর জেলা শিক্ষা অফিস থেকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুমান মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

তিনি গত মঙ্গলবার সরজমিন তদন্তে আসেন। এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা রুমান মিয়া বলেন, আমি এসে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি সদস্যদের বক্তব্য শুনেছি এবং বিদ্যালয়ের খাতাপত্র দেখেছি। প্রধান শিক্ষক জেসমিন সুলতানা বিদ্যালয়ে যে অনুপস্থিত তার সত্যতা পাওয়া গেছে। শিগগিরই আমি এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠাবো।

এদিকে, জেসমিন সুলতানা এখন কোথায় আছেন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার বড় ভাই রায়হান আহমদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জেসমিন সুলতানা স্বামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ভিসা পেয়ে সপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করছেন।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজ খান ও সহ-সভাপতি সেলিম আহমদ জানান, বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত তথ্যমতে প্রধান শিক্ষিক জেসমিন সুলতানা যোগদান করার পর থেকে মাঝে মধ্যে স্কুলে আসতেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, হাজিরা খাতা ও সিøপের টাকা নিয়ে প্রায় ৫ বছর ধরে লাপাত্তা। শুনেছি সপরিবারে আমেরিকায় আছেন। তবে ২০১৭ সালে এসে ব্যাংক থেকে সরকারি বেতন উত্তোলন করার সময় কয়েকদিন বিদ্যালয়ে এসেছিলেন।

এ ব্যাপারে এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়তী রাণী চন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষিকের অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অনেক আগে জানানো হয়েছে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষিক জেসমিন বেগম আমাকে চাপ প্রয়োগ করে জামিনদার করে টাকা ঋণও উত্তোলন করেছিলেন। কিন্তু এখন নিয়মিত কিস্তি না দেয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে চাপ দিচ্ছে।

আমায় উনি বিপদে ফেলে দিয়েছেন। গোলাপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, জেসমিন সুলতানা কয়েক বছর আগে তৎকালীন শিক্ষা অফিসারের কাছ থেকে তিন মাসের চিকিৎসাজনিত ছুটি নিয়েছিলেন। এখন তিনি কোথায় আছেন আমার জানা নেই।