মায়ের আহাজারি: আমার হাফেজ ছেলেরে বাঁচাইতে পারলাম না

| আপডেট :  ২৮ আগস্ট ২০২১, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ আগস্ট ২০২১, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ণ

বাংলা একাত্তর ডেস্কঃ সন্তান হারানোর যে পাহাড় সমান কষ্ট, শুধু সন্তান হারানো একজন মা-ই জানে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় যাত্রী বোঝাই ট্রলার ডুবিতে হাফেজ ছেলেকে হারিয়ে আহাজারি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের ভাতেরখলা এলাকার লইসকা বিলে শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০ জনের মরাদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

হাফেজ ছেলেকে হারিয়ে মা আঁখি বেগমের আহাজারি করে বলেন, “আমার ভাসুরের এক ছেলে আর এক মেয়েকে বাঁচাইতে পারছি, আমার হাফেজ ছেলেকে বাঁচাইতে পারি নাই।” “আমার মাইয়া কই। আমার মাইয়ারে পাইতাছি না কেরে। আফনেরা আমার মাইয়ারে আইন্না দেন না।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের আঁখি বেগম সন্তান হারিয়ে দিশেহারা তার চোখে পৃথিবী যেন পুরোই অন্ধকার হয়ে গেছে। তিনি জানান, আঁখি বেগম স্বামী-সন্তানদের নিয়ে বিজয়নগরের চম্পকনগর গ্রাম থেকে ট্রলার করে ফিরছিলেন। ট্রলার ডুবে যাওয়ার সময় তাঁর বাঁ হাতে এক বছর বয়সী মেয়ে মোবাশ্বিরা এবং ডান হাতে ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী হাফেজ ছেলে তানবীর হোসাইন ধরা ছিল। এক পর্যায়ে বড় ছেলে তার হাত থেকে ছিটকে যায়। এরপর থেকে তাকে পাচ্ছেন না। তাঁর স্বামী মুরাদ মিয়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আলী আক্তার রিজভী জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাট থেকে প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি সদর উপজেলার আনন্দবাজার ঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। লইসকা বিল এলাকায় পৌছালে বিপরীত দিকে থেকে আসা একটি বালুবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে এতে যাত্রী বোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়।

দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান ও পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান জানান, প্রশানের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে।