জাপানি মা ভালো না, মধ্য রাতে বাবা কে জড়িয়ে সিআইডিতে বাচ্চারা (ভিডিও)

| আপডেট :  ২৩ আগস্ট ২০২১, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ আগস্ট ২০২১, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ

জাপানিজ-বাংলাদেশি এক দম্পতির দুই সন্তানকে নিজের কাছে রাখার আইনি লড়াইয়ের মধ্যেই তাদের উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে হেফাজতে রেখেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। সন্তানের বাবা ইমরান শরীফের স্বজনদের দাবি, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পুলিশ শিশু দুটিকে নিয়ে গেছে। সিআইডি বলছে, দুই সন্তানকে তাদের বাবা আদালতে হাজির না করে আত্মগোপনে যাওয়ার তথ্য ছিল তাদের কাছে।

জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর দুই শিশু কন্যাকে উদ্ধার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার বিকালে ওই জাপানি নারীর দুই কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করা হয় বলে সিআইডির অতিরিক্ত একজন পুলিশ সুপার জানান।

গত বৃহস্পতিবার আইনজীবীর মাধ্যমে এই দুই শিশুকে ফিরে পেতে জাপানি ওই মা হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে তিনি বাংলাদেশি-আমেরিকান স্বামীর কাছ থেকে সন্তানদের নিজের জিম্মায় পাওয়ার নির্দেশনা চান।

সেদিন জাপানি ওই নারীর রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল বেঞ্চ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্বামী শরীফ ইমরানের তত্ত্বাবধানে থাকা তার ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েকে হাজির করার নির্দেশ দেন।

শিশু দুটিকে নিয়ে শরীফ ইমরান ও তার বোন আমিনা জেবিনকে ৩১ আগস্ট তাদের নিয়ে হাজির হতে বলেন আদালত। সেইসঙ্গে শরীফ ইমরান যাতে দুই মেয়েকে নিয়ে দেশত্যাগ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বলেন আদালত। আদালতের রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

রিট আবেদনের তথ্য মতে, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি আইন অনুযায়ী জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো (৪৬) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) বিয়ে করেন। এরপর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। এক যুগের দাম্পত্যজীবনে তারা তিন সন্তানের জন্ম দেন। তিন সন্তানই মেয়ে। তাদের বয়স যথাক্রমে ১১, ১০ ও ৭ বছর।

গত ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন নাকানো এরিকো। গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইমরান মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করার পর গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন ইমরান।

রিট আবেদনে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে এরিকো এত দিন বাংলাদেশ আসতে পারেননি। পরে গত ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন তিনি। যদিও শ্রীলঙ্কা বিমানবন্দরে থাকার সময়ই শরীফ এরিকোকে ফিরে যেতে বলেন।

পরে গত গত ২৭ জুলাই মোবাইলের জিপিএস বন্ধ করে এবং এরিকোর চোখ বেঁধে স্বামী শরীফ ইমরান তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় মেয়েদের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য। শরীফ ইমরান আর কখনো মেয়েদের সঙ্গে এরিকোকে দেখা করাতে চান না এবং মেয়েরা কোথায় আছে সেটিও জানাতে চান না। যে কারণে মেয়েদের অভিভাবকত্ব চেয়ে চেয়ে রিট আবেদনটি করেন।