বোরকা বাধ্যতামূলক নয়, হিজাব পরলেও চলবে; বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন নারী : তালেবান

| আপডেট :  ১৮ আগস্ট ২০২১, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৮ আগস্ট ২০২১, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ণ

বোরকা বাধ্যতামূলক নয়, হিজাব পরলেও চলবে; বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন নারী : তালেবান। নারীর অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে তালেবান মুখপাত্র দাবি করেছেন। জবিহুল্লাহ মুজাহিদ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ইসলামী আইনের সীমার মধ্যে নারীর অধিকার রক্ষা করা হবে।

আল জাজিরার সংবাদদাতার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নারীরা সমাজে খুব সক্রিয় হতে যাচ্ছে, কিন্তু ইসলামের কাঠামোর মধ্যে।” আফগানিস্তানের নারীরা এবার তালেবান শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবেন। এছাড়া ঘরের বাইরে যেতে হিজাব পরলেও চলবে, বোরকা পরা বাধ্যতামূলক নয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন। তিনি কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবান দফতরের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সুহাইল শাহিন বলেন, আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোয় হাজারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু আছে। সেখানে মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। নারী শিক্ষার বিষয়ে তালেবানের ইতিবাচক নীতির কথা এর আগে মস্কো ও দোহা সম্মেলনেও বলেছি।

বোরকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীরা মাথায় হিজাব পরেছেন কি না সেটা পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে পুরো শরীর ঢাকা বোরকা পরতেই হবে এমন নয়। তিনি বলেন, অনেক ধরনের হিজাব রয়েছে। বোরকা আর হিজাব একই জিনিস নয়।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ‘এই তালেবান ২০ বছর আগের তালেবান নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।

আফগানিস্তান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গনি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, বিশ বছর আগেও আমাদের দেশ মুসলিম রাষ্ট্র ছিল। আজও আমাদের দেশ মুসলিম রাষ্ট্র। কিন্তু অভিজ্ঞতা, পরিপক্কতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির বিচারে বিশ বছর আগের তালেবানের সাথে আজকের তালেবানের বিশাল তফাত রয়েছে। আমরা এখন যেসব পদক্ষেপ নেব তার সাথে ওই সময়কার তফাত রয়েছে। আর এটা বিবর্তনের ফসল।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের বিভিন্ন পন্থা, নিয়ম-কানুন আছে। অন্যদের মতো আমাদেরও (আফগানদের) মূল্যবোধ অনুযায়ী নিজস্ব নিয়ম-কানুন থাকার অধিকার রয়েছে। আমরা শরিয়াহ আইনের অধীনে নারীদের অধিকারের প্রতি সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।

নারী অধিকার প্রসঙ্গে তালেবানের নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, নারীরা আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে যাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে, নারী-পুরুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না।
এদিকে, তালেবান তাদের সরকারে নারীদের যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছে। বাহিনীটির সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামানগানি এ আহ্বান জানান।

সামানগানি বলেন, শরিয়াহ আইন অনুযায়ী সরকারে নারীদের উপস্থিতি থাকা উচিত। এখনও সরকারের কাঠামো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। তবে পুরোপুরি ইসলামিক নেতৃত্ব থাকবে। এতে সব পক্ষেরই যোগ দেওয়া উচিত।

মঙ্গলবার প্রথমবার সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। কর্মক্ষেত্রে নারীদের অধিকার কী হবে, সে বিষয়ে এসময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। জাবিউল্লাহ বলেন, ইসলামিক আইনের আওতায় থেকে নারীরা কাজ করতে পারবেন।