যেভাবে অঢেল অর্থের মালিক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা মাদ্রাসাপড়ুয়া রাজ

| আপডেট :  ৫ আগস্ট ২০২১, ০২:১২ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৫ আগস্ট ২০২১, ০২:১২ অপরাহ্ণ

পরীমনিকে চিত্রজগতে নিয়ে আসেন রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার কথিত চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। সিনেমায় নাম লেখানোর আগে দীর্ঘদিন রাজের কাছেই থাকতেন পরীমনি।পিরোজপুরের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে ঢাকায় এসে রাজের কাছেই থাকেন পরীমনি। গ্ল্যামার জগতে পরীমনির উত্থানে রাজের ভূমিকা ছিল প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ।

গ্রে’ফতার রাজ ১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসায় দাখিল সম্পন্ন করেছেন। যদিও তার দাবি, ঢাকায় এসে তিনি গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। রাজ ঢাকায় এসে বিভিন্ন ব্যবসাবাণিজ্য শুরু করেন। ঠিকাদারির কাজও করেন রাজ। এরপর মিডিয়া জগতের ব্যবসায় তার অনুপ্রবেশ ঘটে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে র‍্যা’ব সদরদফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‍্যা’বের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়েন নজরুল ইসলাম রাজ। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ অ’নৈতিক কাজ করে বিপুল অংকের অর্থের মালিক হয়েছেন। ব্যবসায়িক ও চিত্রজগতের দুই ক্ষেত্রে তার সংযোগ থাকায় তিনি অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নিজ অবস্থানের অ’পব্যবহারে করেন।

রাজের উত্থানের পেছনের ইতিহাস জানাতে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, রাজ গ্রে’ফতার শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান ও মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানের সহযোগিতায় ১০-১২জন ত’রুণী নিয়ে একটি অ’পরাধচ’ক্র তৈরি করে। এই চ’ক্রটি গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ডিজে পার্টির আয়োজন করত। এসব পার্টিতে মা’দক সেবনসহ বিভিন্ন অ’নৈতিক কার্যক্রম সংঘটিত হতো। এসব পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের থেকে বিভিন্নভাবে মোটা অংকের অর্থ সংগ্রহ করা হতো। এরইমাধ্যমে রাজসহ এই চ’ক্রের সদস্যরা রাতারাতি বিপুল পরিমান অর্থের মালিক বনে যান।

গ্রে’ফতারকৃত রাজ জানায়, রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে এসব অ’নৈতিক কাজ ও ডিজে পার্টি দিয়ে মা’দক ব্যবসার মাধ্যমে যেসব অর্থ উপার্জন করতেন তা নিজের আম’দানি, ঠিকাদারি, বালুভরাটসহ বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি করতেন। তার এসব ব্যবসায় কয়েকজন অর্থের যোগানদাতার নামও বলেছেন রাজ। তার সেসব ডিজে পার্টিতে কারা অংশ গ্রহণ করত, কারা অর্থ সরবরাহ করত যে তথ্য পেয়েছি আমরা। আ’সামি কর্তৃক দেওয়া তথ্যগুলো ত’দন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীর গডফাদার হিসাবে পরিচিত নজরুল রাজ প্রথমে নামে-বেনামে বিভিন্ন নাটক, সিনেমায় প্রযোজনা করতেন। এটি ২০১৪ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে রাজ তার রাজ মাল্টিমিডিয়া প্রতিষ্ঠা করে। তার এই প্রতিষ্ঠানে তল্লা’শি চা’লানো হয়েছে। তাতে পরীমনিকাণ্ডে এই প্রতিষ্ঠানের যোগসূত্রিতা পাওয়া গেছে। অ’ভিযান চা’লিয়ে সেখান থেকে প’র্নোগ্রাফির কনটেন্ট জ’ব্দ করেছে র‌্যা’ব।

এর আগে র‌্যা’ব সূত্র জানিয়েছিল, নজরুল রাজ একেক সময় একেক পরিচয়ে চলাফেরা করেন। কখনও চিত্রপরিচালক, কখনও ব্যবসায়ী আবার কখনও রাজনীতিবিদ। প্র’তারণার মাধ্যমে তিনি অঢেল টাকার মালিক বনে গেছেন। বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৪টি হিসাবে ৯ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে র‌্যা’ব। অবশ্য ব্যাংকের বাইরেও তার হাতে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা রয়েছে।

ঠিকাদারি কাজের ডন হিসাবে পরিচিত জিকে শামীমের সঙ্গেও সখ্য গড়ে ওঠে রাহের। সম্প্রতি তিনি জিকে শামীমকে কা’রাগারে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে তদবির করছিলেন। শামীমের বোন সুবর্ণা মোস্তাফার সঙ্গে তিনি প্রতি সপ্তাহে নানা বি’ষয়ে শলা-পরামর্শ করেন।