‘চারিদিকে সাহেদ, সাব্রিনা, হেলেনা, পাপিয়া, ঈশিতা, ডাক্তার জাহাঙ্গীর, ওদি-বদিরা তৈরী হতেই থাকবে’

| আপডেট :  ৩ আগস্ট ২০২১, ০২:০৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩ আগস্ট ২০২১, ০২:০৯ অপরাহ্ণ

শিক্ষায় আমাদের মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন কি হবে আর আমাদের শিক্ষায় বিদেশী ভাষার অবস্থান কি হবে এই নিয়ে ১৯৭৪ সালে সুস্পষ্ট একটা নীতিমালা ছিল। সেই নীতিমালা আজও বাস্তবায়নের পথেতো হাটেই নাই বরং উল্টো পথে হেঁটেছি। সেখানে সুস্পষ্টভাবে লেখা ছিল ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত বাংলা অবশ্যই compulsory বি’ষয় হিসাবে পঠিত হবে। শুধু তাই না। আরো লেখা

ছিল যে উচ্চ শিক্ষার টেক্সট বই অবশ্যই বাংলায় হতে হবে এবং বিদেশী বই স’রকারি খরচে বাংলায় অনুবাদে গুরুত্ব দিতে হবে। এমনকি সকল লেভেলে বাংলা চালু সত্বেও ইংরেজির গুরুত্ব কমে যাবে না। আমাদেরকে বিদেশী ভাষা বিশেষ করে ইংরেজিও গুরুত্বের সাথে শিখতে হবে। কিন্তু কোন ভাবেই বাংলার বিনিময়ে ইংরেজি নয়।

এটাই ছিল ১৯৭৪ সালে আমাদের শিক্ষার নীতিমালা। কত সুন্দর একটি নীতিমালা। কত আধুনিক ছিল চিন্তা চেতনায়। তারা তখনই বুঝতে পেরেছিল উন্নত রাষ্ট্র গড়তে হলে শিক্ষাটা মাতৃভাষায় হতে হবে। মাতৃভাষায় পড়লে শেখাটা আত্মস্থ হয় মুখস্ত করতে হয় না। মাতৃভাষায় পড়লে শেখাটার একটা মেন্টাল পিকচার তৈরী হয় বিদেশী ভাষায় তা হয় না। পৃথিবীতে এমন

একটি দেশের নাম বলুনতো যেখানে মাতৃভাষাকে অবহেলা করে বিদেশী ভাষায় লেখাপড়া করে উন্নত হয়েছে। পাবেন না। একটি উদাহরণও পাবেন না। আজকে বাংলাদেশে দেশপ্রেমিক সৎ মানুষের অভাবের একটা বড় কারণ অর্থবিত্তে জ্ঞানেবুদ্ধিতে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশের মানুষের ছেলেমেয়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ায়

এরা এক্সপোর্ট কোয়ালিটি হিসাবে গড়ে উঠে। এই দেশে বাস করলেও এই দেশের পল্লীগীতি ভাটিয়ালি রবীন্দ্র, লালন এবং নজরুলগীতি শুনেনা। এই দেশের কবি সাহিত্যিকদের চিনে না। তাই নীতিনির্ধারকদের বলব দ্রুত আমাদের ১৯৭৪ সালের নীতিমালায় ফিরে যেতে হবে। আমাদের সবকিছুকে রিফ্রেশ বাটনে চা’প দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে। না হলে খুব দ্রুত, আরো দ্রুত দেশ

রসাতলে যাবে। চারিদিকে সাহেদ, সাব্রিনা, হেলেনা, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, পাপিয়া, ঈশিতা, ডাক্তার জাহাঙ্গীর, ওদি বদিরা তৈরী হতেই থাকবে। দিন থাকিতে দিনের সাধন করতে হবে। ড. কামরুল হাসান মামুন ।। অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। [লেখকের ফেসবুক থকে]