আদালতে চিৎকার করে যা বললেন হেলেনা

| আপডেট :  ৩১ জুলাই ২০২১, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩১ জুলাই ২০২১, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বিভিন্ন সময় নানা কারণে আলোচিত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাতে গুলশানের নিজ বাসা থেকে আ’টক করে র‌্যা’ব। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান থানায় র‌্যা’ব বা’দী হয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নামে দুটি মা’মলা করে। এর মধ্যে একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং অপরটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের মা’মলায় তিনটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে মা’দক আইন, বন্যপ্রা’ণী সংরক্ষণ আইন ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনের ধারা দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে আসা হয় ঢাকার মুখ্য মহানগর আ’দালতের (সিএমএম) হাকিম রাজেশ চৌধুরীর এজলাসে। আ’দালতে শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা হেলেনা জাহাঙ্গীর নানা সময়ে স’রকারের মন্ত্রীদের নিয়ে আ’পত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন বলে অ’ভিযোগ করেন।

অন্যদিকে তার আইনজীবী মা’মলার এজাহারের কথা উল্লেখ করে কোথায় কখন বক্তব্য দিয়েছেন তার দিন তারিখ উল্লেখ নেই বলে দাবি করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গুলশান থানায় করা এই মা’মলায় জি’জ্ঞাসাবাদ করতে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তিন দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ। যদিও পুলিশ পাঁচ দিনের আবেদন করেছিল।

ঢাকার মুখ্য মহানগর আ’দালতের (সিএমএম) হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আ’দালতে আ’সামিপক্ষের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম রি’মান্ড বাতিল ও জা’মিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘যার সম্মান ন’ষ্ট করা হয়েছে, শুধু তিনিই মা’মলা করতে পারবেন। অন্য কেউ এই মা’মলা করতে পারবেন না।’ শফিকুল ইসলাম বলেন, এজাহার দেখলাম, ২৫, ২৯ ৩২ ধারায় যে অ’ভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে কোথাও কোনো উল্লেখ নেই, কখন কোথায় কীভাবে কার বি’রুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেয়া হয়েছে, তার কোনো উল্লেখ নেই। হেলেনা জাহাঙ্গীরের ব্যবসায়িক অবস্থানের কথা তুলে ধরে তার আইনজীবী বলেন, ‘আ’সামি একজন সিআইপি, এই মা’মলায় রি’মান্ড কী দরকার? রি’মান্ডের কোনো যুক্তি নেই।’

এ সময় বিচারক বলেন, মা’মলার ফরোয়ার্ডিংয়ে বলা হয়েছে, এই আ’সামি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মন্ত্রী, এমপি ও দেশের সম্মানিত নাগরিকদের বি’রুদ্ধে কটূক্তি করে স’রকারের ভাবমূর্তি ও দেশের ভাবমূর্তি ন’ষ্ট করছেন। ফরোয়ার্ডিংয়ে আরও বলা হয়েছে, হেলেনা জাহাঙ্গীর স’রকারবি’রোধী কার্যকলাপ ও পরিকল্পনায় যুক্ত। এর সঙ্গে কোনো স’ন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা মহল জ’ড়িত আছে, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এই গোষ্ঠী কারা তা জানতে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে বিস্তারিত জি’জ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।

আ’দালত এ সময় হেলেনা জাহানঙ্গীরকে আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলার আছে কি না, তা জানতে চায়। এ সময় হেলেনা জাহাঙ্গীর চি’ৎকার করে বলেন, ‘আমি স’রকারের লোক। আমি আওয়ামী লীগের লোক। আমার পদ এখনও যায়নি। আমাকে কোনো শো’কজ করা হয়নি। আমি কোনো নোটিশ পাইনি। আমার জীবনে আমি ফেসবুকে কোনো দিন স’রকারের বিপক্ষে লিখি নাই। আমি স’রকারের লোক। আওয়ামী লীগের লোক। আমি আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে কাজ করি।’

হেলেনা আরও বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রায় ২৫টা দেশ সফর করেছি। আমি কীভাবে স’রকারের বিপক্ষে কথা বলব। কোথাও কোনো প্রমাণ নেই আমার ফেসবুকে। কোনো পেজে। বরং কেউ যদি কথা বলে থাকে সেটার প্র’তিবাদে আমি দাঁড়িয়েছি। সেই ভিডিও আছে আমার ফেসবুকে। সেটার ভিডিও আছে আমার ফেসবুকে।’

এ সময় প্রমাণ হিসেবে একটি অডিও (মোবাইলের কলরেকর্ড) আ’দালতে উপস্থাপন করেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু। সেখানে শোনা যায় হেলেনা জাহাঙ্গীর বলছেন, ‘কোনো মন্ত্রীকে গোনার সময় নাই’। এক অনুষ্ঠানে এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর, যা নিয়ে বেশ সমালোচনাও হয়েছিল। শুনানি শেষে তিন দিনের রি’মান্ডের আদেশ দেন বিচারক।