রাজধানীতে ২৮০ টাকা কেজি মাংস!

| আপডেট :  ২১ জুলাই ২০২১, ১২:৪৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২১ জুলাই ২০২১, ১২:৪৫ অপরাহ্ণ

সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। ঈদুল আজহার নামাজ ও মোনাজাত শেষে কোরবানির পশু জবাইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নগরবাসী। নগরীর বিভিন্ন অলিগলির সড়কে, গ্যারেজে ও ফাঁকা জায়গায় পশু কোরবানি করতে দেখা গেছে।

গরু কেনা থেকে শুরু করে হাসিল পরিশোধ এবং কসাইয়ের মজুরি দেয়ার পর কোরবানির মাংসের মূল্য দাঁড়ায় কেজি প্রতি প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। অথচ সেই মাংসই এখন হাত ঘুরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা দরে। প্রতি বছর কোরবানি শেষে বিকেলের দিকে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে চোখে পড়ে এসব অস্থায়ী মাংসের হাট। এবারও দেখা গেল সেরকম কিছু চিত্র। শহরের অলিতে-গলিতে অস্থায়ী এ বাজারে খুব কম দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর জুরাইন রেলগেট, সূত্রাপুর, ধোলাই খাল, খিলগাঁও, রামপুরা ব্রিজ, লিংক রোডে এ দৃশ্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। মূলত সকাল থেকে ভিক্ষুক এবং গরিব-অসহায় মানুষেরা বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে যে মাংস সংগ্রহ করেছেন সেটাই তারা এসব স্থানে বিক্রি করছেন। তবে এবার করোনার কারণে তাদের মাংস সংগ্রহে অনেকটাই ভাটা পড়েছে বলে জানা গেল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাংস বিক্রেতা বললেন, ‌‌‘আগে যেখানে প্রায় সব বাড়ি থেকেই চাইলে মাংস পাওয়া যেত এবার ১০ বাড়ি ঘুরলে তিন বাড়ি থেকে মাংস পাওয়া যাচ্ছে। করোনার কারণে অনেকেই কোরবানি দেয়নি। আবার কোনো এলাকায় ঢুকতেও বাধা দেওয়া হয়েছে।’

কিন্তু এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন কিছু অসাধু মৌসুমী ব্যবসায়ীও। জুরাইন এলাকার এক ভ্রাম্যমাণ (ভ্যানে করে বিক্রি করেন) হালিম ব্যবসায়ী বলেন, দোকান থেকে মাংস কিনতে গেলে কেজি প্রতি কমপক্ষে ৫৮০ টাকা লাগে। তাই এ সময় কমদামে কিছু মাংস সংগ্রহ করে রাখছি। ঠিক একই কথা বললেন মধ্য বাড্ডার এক ভ্রাম্যমাণ কাবাব ব্যবসায়ী। তিনি কাবাবের মাংস হিসেবে এগুলো সংগ্রহ করে রাখছেন।

খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে এরকম এক মাংস বিক্রেতা বলেন, এসব মাংস রান্না করে খাওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। তার চেয়ে বরং ২/৩ কেজি মাংস বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় সেটা দিয়ে ৪ দিন সংসার চালানো যায়। তাছাড়া সামনে টানা লকডাউন। এসময় মাংসগুলো বিক্রি করে যদি কিছু বাড়তি টাকা পাওয়া যায় তাতে সামনের দিনগুলো ভালোই চলবে।

এদিকে, এসব মাংস মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাওয়ায় মাংসের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে বিভিন্ন রকমের মাংস একত্রিত করে বিক্রি করা হচ্ছে কেজি দরে। এমনিতেই আবহাওয়ায় ভ্যাপসা গরম বিরাজমান, এর ওপর ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হয়নি এসব মাংস।