একে একে মৃত্যু : পরপর তিন বোনকেই বিয়ে

| আপডেট :  ২৩ জুন ২০২১, ০৩:২১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ জুন ২০২১, ০৩:২১ অপরাহ্ণ

সবুরা খাতুন, রাশেদা সর্বশেষ খাদিজা এই তিন বোনকেই একে একে বিয়ে করেন ফেনীর আবদুল হক চৌধুরী। প্রথম স্ত্রীর মৃ’ত্যুর পর তার বোনকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃ’ত্যু হলে আরেক বোনকে বিয়ে করেন। এভাবেই পর্যায়ক্রমে তিন বোনকে বিয়ে করেন। প্রতিটি বিয়েই তিনি করেছেন পারিবারিক সিদ্ধান্তে। প্রতিটি বিয়ের পেছনে আছে একটি বিয়োগান্তক অধ্যায়, স’ন্তানদের ভালো রাখার নিরন্তর চেষ্টা।

আবদুল হক চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ফেনীর সাউথ অফিসের ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তিনি উপজে’লার বগাদানা ইউনিয়নের গুনক গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল হক চৌধুরী ১৯৯৫ সালে ১৪ ডিসেম্বর একই ইউনিয়নের বাদুরিয়া গ্রামের সেকান্তর বাদশার বড় মেয়ে সবুরা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুই কন্যাস’ন্তান জন্মগ্রহণ করে। ১৯ বছর সংসার শেষে নানা রো’গে আ’ক্রান্ত হয়ে মা’রা যান সবুরা। কয়েক মাস পার হলে উভ’য় পরিবারের সম্মতিতে সবুরার ছোট বোন রাশেদাকে বিয়ে করেন আবদুল হক চৌধুরী। এ সংসারে একটি কন্যাস’ন্তান হয়। তবে ভাগ্যের নি’র্মম পরিহাস! ছয় বছর সংসার করার পর রাশেদাও অ’সুস্থ হয়ে মা’রা যান।

পরপর দুই স্ত্রীর মৃ’ত্যুতে আবদুল হক চৌধুরী ও তার শ্বশুরের পরিবারে নেমে আসে শো’কের ছায়া। দুই স্ত্রী হা’রিয়ে তিন এতিম মেয়ে নিয়ে চ’রম অনিশ্চয়তায় দিন কাটে আবদুল হকের। মা-খালার মৃ’ত্যুতে শো’কে কাতর মেয়েরা অবস্থান করে নানাবাড়িতে। অন্যদিকে স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক বনিবনা না হওয়ায় সংসার ভে’ঙে যায় আবদুল হক চৌধুরীর মেজ শ্যালিকা খাদিজার।

একপর্যায়ে উভ’য় পরিবারের সম্মতিতে এতিম মেয়েদের কথা চিন্তা করে খাদিজাকে বিয়ে করতে সম্মত হন আবদুল হক। সে অনুযায়ী গত মাসে সামাজিকভাবে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হয়।

আবদুল হকের শ্যালক ইলিয়াস সুমন জাগো নিউজকে বলেন, ‘হক ভাই ভালো মানুষ। একে একে দুই স্ত্রী মা’রা যাওয়ার পরও মানবিক কারণে তার কাছে তৃতীয় বোনকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে করে তার স’ন্তানদের ভবি’ষ্যৎ নিশ্চিত হবে।’

স্থানীয় বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইসহাক খোকন বলেন, ‘আবদুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃ’ত্যুর পর উভ’য় পরিবারেরই সম্মতিক্রমে সামাজিকভাবে তৃতীয় বোনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’

আবদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে কঠিন থেকে কঠিনতম পরীক্ষা করছে। পরপর দুই স্ত্রীকে হা’রিয়ে এতিম মেয়েদের নিয়ে কঠিন সময় পার করছি। আল্লাহর রহমত, মা-বাবা ও এলাকাবাসীর দোয়া এবং দুর্দিনে শ্বশুর পরিবারের লোকজন আমার পাশে থাকায় আমার মতো লোক এখনো টিকে আছি।’ সূত্রঃ জাগো নিউজ