‘তোমার ভাড়া দিতে হবে না। তুমি আমাকে অ’ন্তঃর’ঙ্গ সময় দাও। তোমাকে পেলেই আমি খুশি।’

| আপডেট :  ৫ জুন ২০২১, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৫ জুন ২০২১, ০৫:২১ পূর্বাহ্ণ

ত’রুণী মে’য়েটিকে দেখেই আকৃষ্ট হন মোজাম্মেলন হোসেন। তার বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। স্ত্রী আছেন। তারও বয়স হয়েছে। এই অবস্থায়ও ত’রুণীর কাছে ছুটে যান তিনি। ওই ত’রুণীর লেখাপড়াসহ সকল ব্যয় বহন করবেন বৃদ্ধ মোজাম্মেল।

বিনিময়ে মোজাম্মেলকে দিতে হবে অ’ন্তঃর’ঙ্গ মুহূর্ত। ত’রুণী রাজি। প্রথম দেখাতেই ওই ত’রুণীর হাতে কয়েক হাজার টাকা দিয়ে কিছু একটা কিনে নিতে বলেন ধনাঢ্য মোজাম্মেল। ধানমন্ডিসহ রাজধানীর বিভিন্নস্থানে রয়েছে মোজাম্মেলের একাধিক বহুতল বাড়ি।

প্রতি মাসে আয় হয় বিপুল টাকা। স’ন্তানরা থাকেন যু’ক্তরাজ্যে। স্ত্রীও থাকেন সেখানে। মাঝে-মধ্যে দেশে আসেন। সম্পদের জন্য ঢাকায় থাকতে হয় বৃদ্ধ মোজাম্মেলকে। মোজাম্মেল (ছদ্মনাম) ভাবতেই পারেননি স’ঙ্গী হিসেবে এমন সুন্দরী কম বয়সী একটি মে’য়ে পাবেন তিনি।

প্রথম দেখাতেই জানিয়ে দেন মে’য়েটিকে তার বেশ ভালো লেগেছে। কাল থেকেই এই ত’রুণীকে তার ফ্ল্’যাটে চান তিনি। এই মে’য়েকে পেতে বেশ বে’গ পেতে হয়েছে এই বৃ’দ্ধকে। ঘ’টনার শুরু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। তার ধানমন্ডির বাসায় ভাড়াটে হিসেবে উঠেন রিপা ও রিপার স্বামী।

রিপার সংসারে অর্থক’ষ্ট। সময়মতো ভাড়া দিতে পারেন না। এরমধ্যেই বাড়িওয়ালা মোজাম্মেলের নজর পড়ে ওই না’রীর ও’পর। দেখা সাক্ষাত হলেই গা ঘেষে দাঁড়িয়ে কথা বলেন। কথা বলতে বলতে শ’রীরে হাত দেন। নিরবে স’হ্য করেন এই না’রী। রিপা জানান, তিন মাসের ভাড়ার টাকা বাকি ছিল। বা’ধ্য হয়েই অনেক কিছু স’হ্য করতেন।

বৃদ্ধ মোজাম্মেল প্রস্তাব দেন, ‘তোমার ভাড়া দিতে হবে না। তুমি আমাকে অ’ন্তঃর’ঙ্গ সময় দাও। তোমাকে পেলেই আমি খুশি।’ ওই না’রী রাজি হন না কিছুতেই। এরমধ্যে রিপাকে উপহার দেন একটি স্মার্টফোন। উদ্দেশ্য ভিডিও কলে কথা বলা।

রিপা পু’লিশকে জানিয়েছেন, ভিডিও কলে কথায় কথায় উ’ত্তেজনা ছড়াতেন মোজাম্মেল। এভাবেই চলছিলো দিনের পর দিন। রিপাতে আর সন্তুষ্ট থাকতে পারছিলেন না তিনি। এবার রিপাকে প্রস্তাব দেন, ‘কম বয়সী একজন বান্ধবী জুটিয়ে দাও। আমিতো বান্ধবী ছাড়া চলতেই পারি না।’ বিনিময়ে টাকা দিবেন তিনি। প্রস্তাবটি লুফে নেন রিপা।

শুরু হয় বান্ধবী জোটানোর মিশন। রিপা যোগাযোগ করলেন আজগর নামে এক যুবকের স’ঙ্গে। আজগরের মাধ্যমে স’ন্ধান পেলেন রিয়াজের। তার বাড়ি ফরিদপুরে। রিয়াজের অন্য নাম সুমন। কাজ করেন এক আ’ইনজীবীর সহকারী হিসেবে। রিয়াজের পরাম’র্শে শুরু হয় মিশন। বৃদ্ধ মোজাম্মেলের শয্যাস’ঙ্গী হতে প্রস্তুত সুন্দরী ত’রুণী। ডেকে এনে ঢাকার একটি বাসায় দেখানো হয় ওই ত’রুণীকে। ত’রুণীর পাশে বসে কথা বলেন মোজাম্মেল।

বেশ ভালোলাগে তার। এই ত’রুণীকেই চাই। পরদিন সকালে বৃদ্ধ মোজাম্মেলের স’ঙ্গে একান্তে সময় কা’টাবেন এই ত’রুণী। কথানুসারে সব প্রস্তুত। বৃদ্ধ মোজাম্মেলের বাসাতেই ঘ’টে ঘ’টনা। ওই বাসাতে ওই ত’রুণীকে নিয়ে নির্ধারীত রুমে যান রিপা। বেশ কিছুক্ষণ পর বের হন তিনি।

তারপরই রুমে যান বৃদ্ধ মোজাম্মেল। এরমধ্যেই ওই বাসায় ঢুকে রিয়াজসহ কয়েক জন। সাত-আট মিনিট পরে মোজাম্মেল ওই রুম থেকে বের হতেই সামনে দাঁড়ান রিয়াজ ও তার স’ঙ্গীরা। হু’মকি দিয়ে জানান, যা বলবো তাই করেন। এতক্ষণ রুমের ভেতরে যা হয়েছে তার সবই ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে। কথা না শুনলে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাবে।

মোজাম্মেল ক্ষু’ব্ধ হন। তার উচ্চপদস্থ অনেক বন্ধু রয়েছে। প্রয়োজনে তাদের ডাকবেন। দ্রুত রিয়াজসহ সবাইকে বাসা থেকে বের হতে বলেন। রিয়াজ চটে যান। সবাইকে ডাকতে বলেন। সবার সামনে মোজাম্মেলের আসল চেহারা প্র’কাশ করতে চান রিয়াজ। এবার ভ’য় পান মোজাম্মেল।

মান-সম্মান সব যাবে, ভেবে কাঁ’পতে থাকেন তিনি। রিয়াজ দা’বি করেন ১০ লাখ টাকা। টাকা দিলেই এটি গো’পন রাখা হবে। দর কষাকাষির পর বা’ধ্য হয়েই পাঁচ লাখ টাকা দেন মোজাম্মেল। ভিডিও তখনও রিয়াজের কাছে।

বৃদ্ধ ভ’য়েই থাকেন। কিছুদিন পর পর নিজ থেকেই ফোনে অনুনয় করেন রিয়াজকে। তার মান-সম্মান যেনো ন’ষ্ট না করা হয়। রিয়াজ এবার দা’বি করেন, পাঁচ লাখ টাকা। বৃদ্ধ দেন চার লাখ। এভাবে ব্ল্যা’কমেইল করে চাঁদাবাজি করেই যাচ্ছিলো চক্রটি। বিভিন্ন সময়ে ভিডিও প্র’কাশের ভ’য় দেখিয়ে ২৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা লুটে নেয় এই চক্র।

অবশে’ষে গত বছরের ১৮ই জানুয়ারি হাজারীবাগ থা’নায় একটি মা’মলা করেন ওই বৃদ্ধ। একপর্যায়ে মা’মলার ত’দন্তের দায়িত্ব পায় সাইবার ক্রা’ইম ত’দন্ত বিভাগ। গত ২রা ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর ও রাজবাড়ি জে’লা থেকে গ্রে’প্তার করা হয় রিপা ও রিয়াজকে। সিনিয়র সহকারী কমিশনার ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ জা’নান, গ্রে’প্তারের পর আ’সামিরা পু’লিশের কাছে অ’পরাধ স্বী’কার করেছে। সুত্র: মানবজমিন।