মে’য়েকে ধ” র্ষ’ণের পর বা’বাকে হোটেলে ডেকে নিয়ে পে’টালেন ছা’ত্রলীগের সাবেক নেতা

| আপডেট :  ২৯ মে ২০২১, ০৪:৪৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৯ মে ২০২১, ০৪:৩৭ অপরাহ্ণ

মাদারীপুরের শিবচরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বি’রুদ্ধে নবম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধ”ণের অ’ভিযোগে মা’মলা হয়েছে। এই ঘটনার বিচার চাওয়ায় উল্টো অ’ভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আজ শনিবার সকালে মেয়েটির বাবাকে মা’রধর করেছেন বলে অ’ভিযোগ করা হয়েছে। এ বি’ষয়ে খবর পেয়ে মাদারীপুর শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে মেয়েটির বাবাকে উ’দ্ধার করে পুলিশ। একই সময় পুলিশ অ’ভিযুক্ত ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকেও গ্রে’প্তার করে।

অ’ভিযুক্ত ছাত্রলীগের ওই সাবেক নেতার নাম মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে নাসির (২৮)। তিনি বাঁশকান্দি ইউনিয়নের মৃজারচর মুন্সিকান্দি এলাকার শাহাবুদ্দিন মুনশির ছেলে। নাসির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ও মাদারীপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি স্থগিত হওয়ার আগপর্যন্ত বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচারণাও চা’লিয়েছিলেন।

পুলিশ ও ভু’ক্তভোগী পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় দুই মাস আগে ইউপি নির্বাচনে প্রচার–প্রচারণায় নেমে মোস্তাফিজুরের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই মাদ্রাসাছাত্রীর (১৪)। একপর্যায়ে মোস্তাফিজুর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে প্রেমের ফাঁ’দে ফে’লেন। ২১ মে (শুক্রবার) সকালে মোস্তাফিজুর ওই মাদ্রাসাছাত্রীর বাড়িতে আসেন এবং নবম শ্রেণির গাইড কিনে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বের হন। কিন্তু মোস্তাফিজুর বইয়ের দোকানে না গিয়ে তাঁরই এক বন্ধুর বাড়িতে ওই ছাত্রীকে নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে আ’টকে রেখে তিনি ওই ছাত্রীকে ধ”ণ করেন।

একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন বি’ষয়টি টের পেয়ে ওই ঘরের দরজা ভে’ঙে মেয়েটিকে উ’দ্ধার করেন। এ সময় দৌড়ে পা’লিয়ে যান মোস্তাফিজুর। পরে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গু’রুতর অবস্থায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনাটি ধা’মাচা’পা দিতে স্থানীয় মাতবরের মাধ্যমে সালিস বৈঠক ডাকা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বিচার না পাওয়ায় ওই মাদ্রাসাছাত্রীর বাবা গত ২৫ মে নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দ’মন বিশেষ আ’দালতে ধ”ণের অ’ভিযোগ এনে মা’মলা দা’য়ের করেন। এতে মোস্তাফিজুরকে আ’সামি করা হয়। একই সঙ্গে অ’জ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আ’সামি করা হয়।

বি’ষয়টি মীমাংসা করার কথা বলে ধ”ণের শি’কার মাদ্রাসাছাত্রীর বাবাকে আজ সকালে মাদারীপুর শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ডেকে আনেন। এরপর মোস্তাফিজুর তাঁকে মা’মলাটি তুলে নিতে অনুরোধ জানান। কিন্তু মেয়ের বাবা মা’মলা তুলে নিতে অস্বীকার করলে তাঁকে বেদম মা’রধর করা হয়। বি’ষয়টি বুঝতে পেরে হোটেলের এক কর্মচারী জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দেন। পরে সদর থানা-পুলিশ ওই হোটেলে গিয়ে ভু’ক্তভোগীকে উ’দ্ধার করেন। এ সময় পা’লিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ মোস্তাফিজুরকে গ্রে’প্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

মেয়েটির বাবা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি হোটেলে যেতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু মোস্তাফিজুর আমাকে খুব অনুরোধ করে হোটেলে ডাকে। ওরা জো’র করে আমার স্টেটমেন্ট নিতে চায়। আমি দিতে না চাইলে ওরা আমাকে কিল–ঘু’ষি দিতে থাকে। আমার মেয়ের সঙ্গে যে এই খা’রাপ কাজ করেছে, তার সঙ্গে কোনো আপস আমি চাই না। আমি তার ক’ঠোর বিচার চাই।’

অ’ভিযোগের বি’ষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর থানায় বসে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি আমার সঙ্গে স্বেচ্ছায় চলাফেরা করে। কিন্তু ওই মেয়ে ও তার পরিবার আমাকে এখন ফাঁ’সিয়ে দিয়েছে।’ হোটেলে নিয়ে মা’রধরের বি’ষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম বি’ষয়টি নিজেদের মধ্যে সমাধান করতে। তাই তাঁকে ডেকে আনি। তাঁকে কোনো প্রকার মা’রধর করা হয় নাই।’

জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বেলা ২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘৯৯৯ থেকে কল পেয়ে আমরা সকাল ১০টার দিকে আবাসিক হোটেল যাই। সেখান থেকে আমরা মেয়েটির বাবাকে উ’দ্ধার করি। এ সময় মোস্তাফিজুরকে থানায় নিয়ে আসা হয়। ঘটনাটি যেহেতু শিবচরের, তাই আমরা শিবচর থানার পুলিশের কাছে আ’সামিকে তুলে দিই।’

এ বি’ষয়ে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েটির বাবা বা’দী হয়ে মোস্তাফিজুরকে আ’সামি করে মা’মলা করেন। মোস্তাফিজুরকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে। কাল (রোববার) আ’সামি মোস্তাফিজুরকে আ’দালতে পাঠানো হবে।’ সূত্রঃ প্রথম আলো