আবারও আলোচনায় সেই পিয়াসা

| আপডেট :  ২৮ এপ্রিল ২০২১, ০৫:০৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ এপ্রিল ২০২১, ০৪:৪৬ অপরাহ্ণ

২০১৭ সালের মে মাসে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধ”ণের শি’কার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় দা’য়ের হওয়া মা’মলার এজাহারে নাম ছিল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসার। প্রথমে মা’মলা করতে ভু’ক্তভোগীদের সহযোগিতা করেছিলেন পিয়াসা। কিন্তু সেই পিয়াসার বি’রুদ্ধেই আবার মা’মলা তুলে নেওয়ার হু’মকির অ’ভিযোগে জি’ডি করেছিলেন ভু’ক্তভোগী। চার বছর পর আবারও আলোচনায় সেই পিয়াসা।

গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামের এক ত’রুণীর লা’শ উ’দ্ধারের পর বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির বি’রুদ্ধে যে মা’মলা দা’য়ের হয়েছে, তাতেও পিয়াসার নাম রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মা’মলার ত’দন্তের স্বার্থে তারা পিয়াসাকে জি’জ্ঞাসাবাদ করবেন।

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চ’ক্রবর্তী বলেন, আমরা সব ত’দন্ত করে দেখছি। ঘটনায় সম্পৃক্ত সবাইকে জি’জ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গুলশান থানায় দা’য়ের হওয়া মা’মলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘গত ২৩ এপ্রিল সায়েম সোবহান আনভীর মুনিয়াকে হঠাৎ বকাঝকা করেন। মুনিয়া কেন ফ্ল্যাট মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করেছে এবং ছবি তুলেছে। ফ্ল্যাট মালিকের স্ত্রী সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছে। এটা আবার পিয়াসা দেখেছে। পিয়াসা মালিকের স্ত্রীর ফেসবুক ফ্রেন্ড ও পরিচিত। পিয়াসা আনভীরের মাকে সব বলে দেবে। আর আনভীরের মা বি’ষয়টি জানতে পারলে মুনিয়াকে মে’রে ফেলবে বলেও মা’মলার এজাহারে বলা হয়েছে।’

এজাহারে পিয়াসার নাম উল্লেখ করায় প্রশ্ন উঠেছে কে এই পিয়াসা? পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, এই পিয়াসা হলেন ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা, যিনি চার বছর আগেও রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধ”ণের ঘটনায় আলোচনায় এসেছিলেন। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জুয়েলারি শপ আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ছিলেন ওই ধ”ণ মা’মলার অন্যতম আ’সামি। পিয়াসা ছিলেন সাফাত আহমেদের সাবেক স্ত্রী। রেইনট্রি হোটেলে ধ”ণের ওই ঘটনার কিছু দিন আগেই সাফাতের সঙ্গে পিয়াসার ডি’ভোর্স হয়েছিল।

সে সময় আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার তার ছেলের বি’রুদ্ধে দা’য়ের হওয়া মা’মলার নেপথ্য কারিগর হিসেবে পিয়াসাকে অ’ভিযুক্ত করেছিলেন। পরে অবশ্য তাদের মধ্যে সমঝোতা হয় বলে খবর প্রকাশ পায়। ধ”ণের শি’কার দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে সহায়তার কথা স্বীকার করলেও কয়েক দিনের মাথায় পিয়াসা তাদের মীমাংসা করার জন্য চা’প দিচ্ছেন বলে অ’ভিযোগ করেন ভু’ক্তভোগী। এজন্য পিয়াসার বি’রুদ্ধে দুটি সাধারণ ডায়েরিও করেন তিনি।

ওই ঘটনার পর দিলদার আহমেদ তার সাবেক পুত্রবধূ পিয়াসার বি’রুদ্ধে একটি মা’মলা দা’য়ের করেছিলেন। পিয়াসাও সাবেক শ্বশুর দিলদার আহমেদের বি’রুদ্ধে পাল্টা মা’মলা দা’য়ের করেছিলেন।

কী বললেন পিয়াসা?
এনটিভির সুপার হিরো, সুপার হিরোইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শোবিজ জগতে আসা ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা নতুন করে আলোচনায় আসার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এই প্রতিবেদক। বসুন্ধরার এমডির বি’রুদ্ধে দা’য়ের হওয়া মা’মলায় যে পিয়াসার কথা বলা হয়েছে সেই ব্যক্তি আপনি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি। আমিই বি’ষয়টি আনভীর ভাইয়ের মাকে বলেছি। আনভীর ভাইয়ের আগের সংসার রয়েছে। সেটি বাঁচানোর জন্য আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এতে কি আমার অ’পরাধ হয়েছে?’

ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা আরও বলেন, ‘এই ঘটনার নেপথ্যে আরও অনেক কাহিনি আছে। এই মেয়ে (মুনিয়া) তো একটা সাইকো ছিল। আনভীর ভাই বিবাহিত জানা সত্ত্বেও কেন তার দেওয়া ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেছিল? তাকে তো আগে আমরা কুমিল্লায় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সে লোভী। সে একটা… (প্রকাশযোগ্য নয়)।’

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের হুইপপুত্র শারুণের যোগসাজশ রয়েছে বলেও অ’ভিযোগ করেন তিনি। এ সংক্রান্ত কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশটও পাঠান এই প্রতিবেদকের কাছে। সেখানে মুনিয়া শারুণকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমার কিছু হয়ে গেলে আপনি আমার পরিবারকে একটু দেইখেন।’ শারুণকে কিছু কল রেকর্ড ও স্ক্রিনশট দিয়ে মৃ’ত্যুর পর এসব সবাইকে দেওয়ার জন্য বলেন মুনিয়া।

এই কথোপকথনের সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হলে শারুণ চৌধুরী চ্যালেঞ্জ ছু’ড়ে বলেন, ‘এগুলো বোগাস। মূল ঘটনাকে অন্যদিকে মোড় নেওয়ানোর জন্য এসব করা হচ্ছে। মুনিয়ার মোবাইল তো এখন পুলিশের কাছে। যা করার ফরেনসিক করুক। আমি চ্যালেঞ্জ ছু’ড়ে দিলাম যদি এসব কেউ প্রমাণ করতে পারে।’ মুনিয়াকে চিনতেন না বলেও দাবি করেন শারুণ।