প্রকৃত বয়স কত, জানালেন ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী

| আপডেট :  ৩০ মার্চ ২০২১, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩০ মার্চ ২০২১, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করেও নামের শেষে ‘মাদানী’ উপাধি ব্যবহার করে ওয়াজ-মাহফিল করায় আলোচিত শিশুবক্তা রফিকুল ইসলামকে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

শরীফুল হাসান খান এই নোটিশ প্রেরণ করেন। নোটিশদাতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী হলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মদিনা শাখার আমীর ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই আইনি নোটিশ পাঠানোর পরে মূলধারায় আলোচনায় আসেন ‘শিশুবক্তা’ ওরফে রফিকুল ইসলাম।

তার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশের পরে নিজের নামের পক্ষে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে যুক্তিও দেখিয়েছেন, দেখিয়েছেন প্রমাণ। তবে বৃহস্পতিবার নতুন করে আলোচনায় এলেন শিশুবক্তা হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম। যদিও তিনি সোশ্যাল প্ল্যাটফরমগুলো ব্যাপকভাবে পূর্ব থেকেই পরিচিত।

রাজধানীর মতিঝিল শাপলাচত্বর এলাকায় বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে যুব অধিকার পরিষদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে। এসময় পুলিশ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া রফিকুল ইসলাম ওরফে শিশুবক্তাকে আটক করে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে রাজধানীর মতিঝিল শাপলাচত্বরে যুব অধিকার পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। মিছিলে যুব, ছাত্র অধিকারসহ কয়েকটি সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেন। পুলিশ মিছিলের গতিরোধ করতে চাইলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এসময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। মিছিলকারীরাও পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১২টায় মতিঝিল শাপলাচত্বরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আ;হ;ত হন।

এ ঘটনার পর মতিঝিল এলাকা থেকে পুলিশ শিশুবক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানিসহ ১১ জনকে আটক করে কাভার্ডভ্যানে করে নিয়ে যায়। পরে অবশ্য রাতেই শিশুবক্তা ওরফে রফিকুল ইসলামকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

দিনভর আলোচনায় থাকা রফিকুল ইসলাম ওরফে শিশুবক্তাকে দেশের গণমাধ্যম ও সোশ্যাল হ্যান্ডেলে আলোচনা। অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে কেই শিশুবক্তা। শিশুবক্তা হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি কিন্তু শিশু নন। আর শিশুবক্তা শব্দটি ব্যবহারেও বিভিন্ন সময়।

রফিকুল ইসলাম রাজধানীর বারিধারায় মাদানী অ্যাভিনিউয়ের পাশে অবস্থিত জামিয়া মাদানীয়া বারিধারা মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়েছেন। এছাড়াও তিনি বিএনপি জামায়াত জোটের শরিকদল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অঙ্গ সংগঠন যুব জমিয়তের নেত্রকোনা জেলার সহ-সভাপতি।

এক ওয়াজ মাহফিলে মিজানুর রহমান আজহারির সমালোচনা করে তার প্রকৃত বয়স উল্লেখ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমাকে শিশুবক্তা বানিয়ে রাখা হয়। আজহারি সাহেবের দ্বারা যদি ইসলামের খেদমত হয় তাহলে আমার কোন আপত্তি নাই। আজহারি সাহেব ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেছে আর আমি ১৯৯৫ সালে জন্মগ্রহণ করেছি। এখনও

আমাকে শিশু বক্তা বানিয়ে রাখবেন কেন? আমাদের বয়স মাত্র তিন চার বছরের ব্যবধান। আল্লাহ তাআলা বানাইছে। দেখতে এমন লাগে। আমার করার কিছু আছে? এজন্য আমি শুক্রিয়া আদায় করি।

নিজের পড়াশোনা নিয়ে বলেন, আমি ছয় বছর বয়স পর্যন্ত বাড়িতে বাংলা ইংরেজি অংক পড়েছি করেছি। তারপর ক্লাস সিক্স পর্যন্ত স্কুলে পড়েছি। এরপর মাদ্রাসায় ভর্তি হই। নূরানিতে পড়েছি এক বছর। আল্লাহ রহমতে দুই বছরে হেফজ শেষ করেছি। এখানে তিন বছর, আগের ১২ বছর মোট হলো ১৫ বছর। এরপর আট বছর কিতাবখানায় পড়েছি। কেন বলতেছি এগুলা? আইউটিউবে আমার নামে এতো মিথ্যা ছড়াচ্ছে। আমি নিজেকে জ্ঞানী মনে করি না।

রফিকুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়। থাকেন ঢাকার অদূরে গাজীপুরে। তার যেমন বিশাল পরিচিতি রয়েছে তেমনই সমালোচকও রয়েছে অনেক। এরিমধ্যে গতকাল আটক হয়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন রফিকুল ইসলাম।