রাজধানীতে চাকরি ছেড়ে বাদাম বিক্রি করছেন কলেজছাত্রী, বললেন-সব পেশাই মহান

| আপডেট :  ৯ মে ২০২১, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৯ মে ২০২১, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ

আমাদের সমাজে বিভিন্ন পেশাজীবিদের মাঝে বৈষম্য অত্যন্ত সাধারণ একটি বিষয়। সকল পেশার মানুষেরই সম্মান পাওয়ার অধিকার রয়েছে এমন কথা বলা হলেও বেশিরভাগ মানুষকেই দেখা যায় ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের পেশাকে সম্মান করেন না। আর এক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী উদাহরণ তৈরি করেছেন এক কলেজছাত্রী

পড়াশোনার পাশাপাশি একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা কলেজের ছা’ত্রী তাহমিনা কথা। কিন্তু সম্প্রতি তিনি ফেরি করে বাদাম বিক্রয়কে নিজের পছন্দের স্বাধীন কাজ হিসাবে বেছে নিয়েছেন। করো’নার বন্ধে রাজধানী ধানমন্ডিস্থ রবীন্দ্র সরোবরে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করেন লালমাটিয়া মহিলা কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় এই ছাত্রী।

জানা গেছে, তাহমিনার জন্ম মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজে’লায়। তার বাবা হাবিবুর রহমান সাটুরিয়া হাসপাতা’লে চাকরি করেন; একই হাসপাতা’লে কর্ম’রত ছিলেন মা আয়েশা হাবিবও। কিন্তু ২০০৮ সালে তার মা মা’রা যাওয়ার পর পড়াশোনার টানে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। বর্তমানে তিনি ঢাকায় ধানমন্ডির একটি বাসায় থাকেন।

তাহমিনা জানান, উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) শেষে মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য চাপ এসেছিল। তার পুরো পরিবারও চাইছিলো মালয়েশিয়ায় স্থায়ী হতে। কিন্তু তিনি পরিবারের সাথে একমত হতে পারেন নি। কথার ইচ্ছে ছিলো দেশের মাটিতেই নিজেই স্বাধীনভাবে কিছু একটা করবেন। আর সেই জায়গা থেকেই বাদাম বিক্রি শুরু করেন।

বাদাম বিক্রি শুরুর সময়ের বিষয়টি উল্লেখ করে কথা বলেন, তিনি ভালো একটা ট্রাভেল এজেন্সিতে জব (চাকরি) করতেন। তার কাছে সব কাজই মহান। তিনি মনে করেন কাজের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকা উচিত নয়। তাই স্বাধীনভাবে কাজের ইচ্ছে থেকে বাদাম বিক্রি শুরু করেন। আর বাদাম বিক্রি ও ট্রাভেল এজেন্সির কাজের মধ্যে তিনি কোনো পার্থক্যও খুঁজে পাননা।

কোন পেশাই ছোট না উল্লেখ করে তাহমিনা বলেন, অনেকে পণ করেন যে চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। এতে করে স্বপ্ন পূরণ না হলে হতাশা কাজ করে। আবার অনেকে চু’রি-ডা’কাতিসহ খা’রাপ পথ বেছে নিয়ে থাকেন। কিন্তু যে কোনো কাজে নিজেকে খুশি রাখতে পারাই ব্যক্তিগত অর্জন। এছাড়া আমাদের ছোট একটি বাংলাদেশ সকলের খুব ভালো চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই সব হতাশা ছেড়ে যে কোনো কাজে মন দেওয়াই উত্তম। কোনো কাজকেই ছোটো ভাবা উচিত নয়।